মৌলভীবাজার পাসপোর্ট অফিস আনসার বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে,ভোগান্তিতে জনসাধারণ

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০১৮

মৌলভীবাজার পাসপোর্ট অফিস আনসার বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে,ভোগান্তিতে জনসাধারণ

আলী হোসেন, মৌলভীবাজার :: মৌলভীবাজার জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় হাজার হাজার মানুষ বিদেশে বসবাস করছে। নিজের ছোট ভাই কিংবা পরিবারের নিকট আত্মীয়দের প্রবাসে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তার জন্য একটি পাসপোর্ট করতে হবে এমন বিষয় সবার জানা। সরকার দালাল মুক্ত ও সহজ ভাবে পাসপোর্ট করার জন্য বিভিন্ন সময়ে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারোনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মৌলভীবাজার পাসপোর্ট অফিসে চলছে হরদম অনিয়ম দূর্নীতি ও দালাল চক্রের আগ্রাসন। পাসপোর্ট করতে আসা অনেক গ্রাহককে ভয়ভীতি দেখিয়ে কোনো কাগজ পত্র ছাড়াই ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে অফিসের বিভিন্ন কক্ষে ফরমপূরণ করে দিয়ে ছবি ও ফিংঙ্গার নিয়ে দুই থেকে ৫ মিনিটের ভিতরে শেষ করে দেওয়া হয় পাসপোর্ট এর কাজ। অতচ যারা দালাল বা কারো মাধ্যম ছাড়াই এসেছে তাদেরকে সবার পরে যেতে হয় ছবি ও ফিংঙ্গার দেওয়ার জন্য। যদি কোনো গ্রাহক প্রশ্ন করে উনি তো আমার পরে এসে আগে কি করে গেলেন তখন আনসার বাহিনীর কর্মকর্তা বলেন ও তোমার আগে এসেছে আর তার কাগজ আগে জমা দেওয়া হয়েছে।

শুধু এমনটা নয় পাসপোর্ট অফিসের প্রধান গেইটের সামনে আনছার বাহিনীর কর্মকর্তা কাউকে ঢুকতে দেয় না সে কি জন্য এসেছে তা জানা না পর্যন্ত। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাধারণ মানুষ আনছারের ধমকে ভয় পেয়ে তাদের কাছে সব খুলে বললে তারা পাসপোর্ট করে দিবে বলে টাকা হাতিয়ে নেয়। নিজেদের কাছে কিছু ব্যাংক চালান এর ফরম পূরণ করে ও ভোটার কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন কার্ডের কোনো ধরনের যাচাই বাচাই না করে পাসপোর্ট করে দেয়।

এমন কি ঐ ব্যক্তির নামে থানায় মামলা আছে কি না তা তাকলেও যাচাই বাচাইয়ের জন্য প্রাপ্ত থানার এসআইকে বলে দেওয়া হয় সে আমাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট করেছে তার যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়। সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে বসছেন আনছার বাহিনীর সদস্যরা। পাসপোর্ট অফিসের প্রধানের সাথে ভুক্তভোগিরা সাক্ষাৎ করতে গেলে তার ধমকের ভয়ে কোনো গ্রাহক সাহস করে, আর ভিতরে ঢুকার জন্য দু:সাহস করে না। পাসপোর্ট অফিসের প্রধান কর্মকর্তা নিরাপত্তা কর্মীদের দিয়ে প্রতি দিন আদায় করেন হাজার হাজার টাকা। শুধু টাকা আদায়ের কাজ নয়! অফিসের ভিতর কম্পিউটার পরিচালনার দায়িত্বে আছেন আনসার বাহিনীর সদস্যরা। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ডাটা এন্ট্রির মত গুরুত্বপুর্ণ কাজ ও করানো হচ্ছে তাদের দিয়ে। অদক্ষ ও কোনো ধরণের প্রশিক্ষন ছাড়াই তাদের কে কম্পিউটারে বসিয়ে রেখেছেন অফিস প্রধান। তাদের কাজের মধ্যে নানা ভুলের কারণে গ্রাহকদের নামের বানানে ভুল শব্দ বসানো হচ্ছে। এমনকি আবেদন ফরমে এক শব্দ আর কম্পিউটারের স্লিপে অন্য শব্দ। এই ভুলের দায়বার কে নিবেন গ্রাহক না আনছারের কর্মকর্তা নাকি অফিস প্রধান। আর এই ভুলের সংশোধনী করা যাচ্ছে না বলেও অফিস প্রধানরা প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছেন এমন কি বিভিন্ন দরজায় লেখা রয়েছে ভুল হলে আর সংশোধন করা যাবে না। সবাই বলবেন ভুল তো হতে পারে সে মানুষ কিন্তু এই ভুল যে মোটা অংকের টাকা পাওয়ার জন্য তা কি কেউ বিশ^াস করবেন। দীর্ঘ দিন ধরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার মো: জমশেদ মিয়ার পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করে দিবেন বলে তার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন সহকারী পরিচালকের কর্মী। টাকা না দেওয়াতে সংশোধনের নিয়ম নেই বলে জানান মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে অফিস চলাকালীন সময়ে প্রায় সময় অফিসে পাওয়া যায়না সহকারী পরিচালকে। অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করলে স্যার কোথায় আছেন বললে, ধমক দিয়ে বলে স্যার কোথায় আছেন তা দিয়ে তুমি কি করবে। পাসপোর্টের ডাটা এন্ট্রি করানো হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে এমনতা জানতে চাইলে, অফিসের এক কর্মকর্তা মো: নূরে আলম বলেন, তারাই এ কাজ করবে। অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, তাদেরকে রাখাই হয়েছে এই কাজ করার জন্য। তখন তার নাম ও পরিচয় জানতে চাইলে তিনি পরিচয় দিতে নারাজ। এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আমার নাম পরিচয় জানতে হলে আগামি রবিবারে আসুন আমাদের স্যার সব কিছু বলে দিবেন। ভুল সংশোধনের নিয়ম ওয়েব সাইডে পরিস্কার ভাবে লিখা আছে। আপনারা কেনো সংশোধনের নিয়ম নেই বলে গ্রাহকদেরকে হয়রানি করাচ্ছেন।

এমনটা বললে ঐ কর্মকর্তা অস্বীকার করে বলেন আপনি ওয়েব সাইডকে জিজ্ঞাস করেন আমাদের কিছু করার নেই। গত ৩০ মে বিকালে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের গেইটে দেখা যায় পাসপোর্ট গ্রাহকের উপচে পড়া ভীর, অফিস বন্ধ কিন্তু এত মানুষ এখানে কেনো এমনটা জানতে চাইলে দেখা যায়, আনসার কমান্ডার সঞ্জয় ব্যাংক চালান ফরম দিচ্ছেন গ্রাহকদের । তাদের কাজ করে দিবেন বলেও আশ্বাস দিচ্ছেন এবং সাথে টাকাও নিচ্ছেন। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনসার কমান্ডার সহকারী পরিচালকের মোটো ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে মোটো ফোনে থাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মো: নাজমুল হক নূরনবী জেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা সহকারী পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করুন, উনি জানে কিভাবে তার নিরাপত্তা রক্ষা করবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী পরিচালকের অফিসে গিয়ে থাকে পাওয়া যায়নি। মোটো ফোনে বার বার যোগাযোগ করতে চাইলেও কোনো যোগাযোগ করা যায়নি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2018
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..