নারী দিয়ে যুবককে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেল এএসআই!

প্রকাশিত: ৪:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০১৮

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক যুবককে নারী দিয়ে ব্ল্যাক মেইলিং করতে গিয়ে এলাবাকাসীর হাতে আটক হয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই মাশেকুর রহমান। বুধবার রাত আনুমানিক ৩টায় নাসিক ৪নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এর ফকিরবাড়ি এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ভোর ৬টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ আজিজুল হকের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আটক হওয়া এএসআই মাশেকুর রহমানকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

ব্ল্যাক মেইলিংয়ের শিকার ওই যুবকের নাম মোঃ মাসুম। সে সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তবে পরিস্থিতির শিকার বলে দাবি করেছেন এএসআই মাশেকুর রহমানও।

এলাকাবাসী জানায়, বুধবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই মাশেকুর রহমানের জালকুড়ি, ২নং ঢাকেশ্বরি (পাপা-৩) এলাকায় কর্মরত ছিলেন। এসময় সাথী আক্তার নামে তার এক নারী সোর্সকে ফোনের মাধ্যমে সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিংয়ে মাসুমের বাড়িতে পাঠায়। পরে ওই মেয়ে রাত আনুমানিক ৩টায় মাসুমের বাড়িতে এসে অবস্থান নেয়।

এদিকে মেয়েটি মাসুমের বাড়িতে আছে এ খবরটি নিশ্চিত হওয়ার পর এএসআই মাশেকুর তার নির্ধারিত এলাকা ছেড়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি না নিয়ে সে তার এলাকার বাইরে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিংস্থ ফকির বাড়ি এলাকায় আসে এবং মাসুমের বাড়িতে প্রবেশ করে।

তখন মাসুমকে নারী নিয়ে অসামাজিক কাজ করার অপরাধে আটকের কথা বলে এএসআই মাশেকুর। মাসুম এর প্রতিবাদ করলে মাশেকুর তার কাছে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবী করে। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে মাসুম এবং এএসআই মাশেকুরের সাথে তর্কাতর্কি শুরু হয়। তাদের এই বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে এলাকাবাসী এসে জড়ো হয়। পরে এলাকাবাসী এএসআই মাশেকুর এবং নারী সোর্স সাথীকে আটকে রাখে। একপর্যায়ে সাথীকে এলাকাবাসীরা মারধর করে।

পরে বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইন্চার্জ (ওসি) আব্দুস সাত্তারকে জানালে তিনি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ আজিজুল হকের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠালে তিনি গিয়ে দোষী এএসআই মাশকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে উত্তেজিত এলাকাবাসী শান্ত হন। পরে ভোর ৬টার দিকে এএসআই মাশেকুর এবং নারী সোর্স সাথীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে কথা হলে এএসআই মাশেকুর রহমান জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি পরিস্থিতির শিকার। আমাকে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ভোর রাতের দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিংয়ে আমার বাসায় যাচ্ছিলাম। এসময় কান্নাকাটির শব্দ পেয়ে আমি ওই বাড়িতে যাই। আমি নির্দোষ।

এদিকে সোর্স সাথী আক্তার জানায়, মাসুম তাকে ১ হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের কথা বলে রাতে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার পর টাকা না দিয়ে সে আমাকে তার ঘরে আটকে রেখে চলে যাচ্ছিলো। পরে আমি চিৎকার করতে থাকলে মাশেকুর সার আমাকে উদ্ধার করে। এসময় মাসুমের মা-বোনেরা আমাকে গালাগালি ও মারধর করে। একসময় এলাকাবাসীও জড়ো হয় এবং পরিস্থিতি অন্যরকম হতে থাকে। পরে থানা থেকে আরো পুলিশ গিয়ে আমাকে ও মাশেকুর সারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ আজিজুল হক জানান, কাউকে ফাঁসানোর জন্য নয়, ডিউটি শেষ করে এএসআই মাশেকুর রহমান তার ভাড়া বাসায় যাচ্ছিল। এসময় কান্নাকাটির শব্দ পেয়ে ওই অফিসার ওই বাড়িতে যায়। এ বিষয়টি নিয়ে মাসুমের স্বজনরা এলাকাবাসীকে ভুল বুঝিয়েছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে দেখবো।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..