সিলেট ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:০৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসী, দাঙ্গাবাজ, চাঁদাবাজ ও মাস্তান প্রকৃতির কামাল বাহিনীর হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার করগ্রামের আজির উদ্দিন (৪০)।
গত ৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় কানাইঘাট উপজেলার ৫নং বড় চতুল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছয়ফুল আলমের উঠানে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় হামলায় আহত আজির উদ্দিনের বড় ভাই বশির উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় পরবর্তীতে তিনি রোববার (১০ ডিসেম্বর) সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট ১ম আদালত ও আমলি আদালত নং-৫ জেন্তাপুরের শ্রীখেল নিবাসী হাজি মনির উদ্দিনের ছেলে ৪নং দরবস্ত ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ১৪ জনের নামউল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কানাইঘাট সি.আর মামলা নং-৩৫৫/২০১৭খ্রি:।
এদিকে, বাদীর দরখাস্ত মামলাটি এফআইআর গণ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কানাইঘাট থানা অফিসার ইন-চার্জকে নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো- জৈন্তাপুর উপজেলার লামা মহাইল গ্রামের মর্তুজ আলীর পুত্র শামিম আহমদ, একই উপজেলার ৫নং ফতেপুর ইউপির বালিপাড়া গ্রামের রাজা মিয়ার পুত্র আনোয়ার হোসেন, ডাইয়া গ্রামের মৃতু হাজী ইসলাম উদ্দিনের পুত্র কুতুব উদ্দিন, কেন্দ্রীগ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের পুত্র এখলাছুর রহমান, হেমু গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র জাকারিয়া মাহমুদ, লামামাইল গ্রামের মর্তুজ আলীর পুত্র আমিন আহমদ, পশ্চিম ঠাকুরের মাটি গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের পুত্র বাদশা মিয়া, গর্দনা গ্রামের করিম উল্লাহের পুত্র জালাল, নয়াখেল গ্রামের মৃত সামসুল হকেরপুত্র শায়েদ আহমদ, কানাইঘাট উপজেলার হারাতৈল কান্দি গ্রামের মৃত শফিকুল হকের পুত্র এনাম উদ্দিন, মৃত আজিজুল হকের পুত্র জামাল, হারাতৈল কান্দি গ্রামের সামসুল হক কালার পুত্র হেলাল ও নুরুল হকের পুত্র মানিক মিয়া।
অভিযোগে প্রকাশ, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মামলার আসামীগন বাদী ও তাদের লোকদের মারধর ও খুন খারাপির জন্য দীর্ঘদিন যাবত সুযোগের অপেক্ষা করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় বাদীর ছোট ভাই আহত আজির উদ্দিন ঘটনার তারিখ চতুল বাজারে যাওয়ার পথে আসামীগন গতিবিধি অনুসরণ করে তার পিছু নেয়। আজির উদ্দিন চতুলবাজারে পৌঁছা মাত্র রাস্তার মাঝে বিবাদীদের প্রধান কামাল উদ্দিন,
এনাম উদ্দিন, জামাল, হেলাল আজির উদ্দিনের পথরোধ করে অস্ত্রের মুখে তাকে জোর করে একটি সিএনজিতে অপহরণ করে দুর্গাপুর (নয়াফৌদ) নিয়ে যায়। সেখানে অভিযোগক্ত ২নং আসামী শামিম আহমদ, ৩নং আসামী আনোয়ার হোসেন, ৪নং আসামী কতুব উদ্দিন, ৫নং আসামী এখলাছুর রহমান, ৬নং আসামী জাকারিয়া মাহমুদ, ৯নং আসামী আমিন আহমদ, ১০ নং আসামী বাদশা মিয়া, ১১নং আসামী জালাল, ১৩নং আসামী মানিক মিয়া, ১৪নং আসামী শায়েদ আহমদসহ অজ্ঞাত কিছু লোক অপেক্ষমান ছিলো।
ঘটনাস্থলে আজির উদ্দিনকে নিয়ে যাওয়ার পর মামলার ১নং আসামী কামাল উদ্দিন হুকুম দিয়ে বলে, ‘শালার বেটারে মারিয়া টুকরা টুকরা করে লাশ নদীতে ফেলে দাও।’ একথা বলার সাথে সাথে ৮নং আসামী জামাল তার হাতে থাকা দা’দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আজির উদ্দিনের মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করলে তার মাথার বাম পাশে মারাত্মক যখম হয়। ৭নং আসামী এনাম উদ্দিন আজির উদ্দিনকে লোহার হাতুড়ী দিয়ে তার মাথার মধ্যখানে আঘাত করলে তার মাথা ফেটে মগজ বেড়িয়ে যায়। ১২ নং আসামী হেলাল বাদীর ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে আজিরের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে মাথার খুলির ডান পাশে মারাত্মক যখম হয়। আসামী এখলাছ উদ্দিন ম্যাঘ লাইট দিয়ে আঘাত করলে লোলা-ফুলা যখম হয়। আসামী জাকারিয় মাহমুদ হত্যার উদ্দেশ্যে রড দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর রক্তাত্ব যখম হন আজির উদ্দিন।
এসময় আজির উদ্দিনের কাছে রাখা নগদ ১লাখ টাকা মামলার আসামীরা জোর করে নিয়ে যায়। পরে সদল বলে সন্ত্রাসী প্রকৃতির মামলার আসামীগন নিরীহ আজির উদ্দিনকে এলোপাথারী মারধর করলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে যায়।
তখনই আসামীরা তাকে মৃত মনে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় স্থানীয় লোকজন উল্লেখিত আসামীদের মধ্য থেকে ৭নং আসামী এনাম উদ্দিনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়।
আজির উদ্দিনের অবস্থা আশংকাজনক থাকায় স্থানীয় জনতা এসময় তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠান। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা গেছে, হামলায় গুরুতর আহত আজির উদ্দিনের অবস্থা আশংকাজনক।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd