সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০১৮
হাবিব সরোয়ার আজাদ :: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সালিসীদের রায় উপেক্ষা কওে থানায় অভিযোগ করায় গত ৫দিন ধরে প্রভাবশালীরা ৮ম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রের পরিবারের এ ঘওে কওে রেখেছেন।; উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন নামের ৮ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের পরিবারকে সমাজপতিদেও এমন অমানবিক কর্মকান্ডের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যান করছে।’ মনোয়ার হোসেন গ্রামের আব্দুল তাহিরের ছেলে ও সোনাপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র।
জানা গেছে. গ্রামের পার্শ্ববর্তী খালে গত ১১ ফ্রেব্রুয়ারী মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ওই স্কুল ছাত্রকে গ্রামের কিছু লোক মারধর করেছে। গ্রামের প্রভাবশালীদের বিচার না মানা ও থানায় অভিযোগ দায়ের করায় তার পরিবারের ওপর এমন বর্বও শাস্তির খড়গ ছাপিয়ে দিয়েছেন সমাজপতিরা।
অভিযোগ রয়েছে , খালে মাছ ধরতে গেলে গ্রামের নুর রহমান, গিয়াস উদ্দিন, আমির উদ্দিন জোর করে মনোয়ার হোসেনের ঠেলা জাল কেড়ে নিয়ে তাবে বেধরক ভাবে মারপিট করে। মারধরের কারণে মনোয়ার হোসেনের একটি দাঁত ভেঙে যায় ও নাক-মুখ মন্ডলে জখম হয়। মারধরকারীরা তাকে পানিতে ডুবিয়ে প্রাণনাশেরও অপচেষ্টা করে। চিৎকার শুনে তার আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের লোকজন এগিয়ে ওই স্কুল ছাত্রকে উদ্ধার করে। আহত স্কুল ছাত্র মনোয়ার হোসেনকে ওইদিনই সিলেট এমএজি ওসামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থানায় অভিযোগ করেন আহত স্কুল ছাত্রের বাবা আব্দুল তাহির। কিন্তু অভিযোগটি বৃহস্পতিবার পর্য্যন্ত থানায় রেকর্ড করা হয়নি।
এই ঘটনায় ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রামে সালিশ বিচার ডেকেছিল সালিশীগণ। সালিশীদের রায়ে অভিযুক্তদের মনোয়ার হোসেনের চিকিৎসা খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা দেয়ার কথা। কিন্তু টাকা নিতে রাজি হননি মনোয়ারের পরিবারের লোকজন।
গ্রামের সালিশ বিচার না মানা ও থানায় অভিযোগ করায়, ১১ মার্চ ফের গ্রামে সালিশ ডাকেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী হোসেন। গ্রামের রইছ আলীর বাড়িতে সালিশ বিচার অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রামের আব্দুল মনাফের সভাপতিত্বে বিচারে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী হোসেন, গ্রামের বাসিন্দা রইছ আলী, কলমধর আলীসহ আরও অনেকেই। বিচারে জানিয়ে দেয়া হয়, যেহেতু তারা সালিশীদের বিচার মানেনি, মেম্বারের বিচার মানেনি তাই গ্রামে তাদের একঘরে করে রাখা হবে। সাথে সাথেই রায় কার্যকর করা হয়।
গত পাঁচ দিন ধরে মনোয়ার হোসেনের পরিবারের গরু-ছাগলকে গ্রামের মাঠের বাইরে রাখা হচ্ছে। গ্রামের লোকজনের সাথে চলা ফেরা করতে নিষেধ করা করা হয়েছে তার পরিবারকে।
সালিশ বিচারের সভাপতি সোনাপুর গ্রামের আব্দুল মনাফ বলেন,‘ আব্দুল তাহির গ্রামের সালিশীদের বিচার মানে না, মেম্বারের বিচার মানে না। আমরা বলেছি ১০ হাজার টাকা নেয়ার জন্য, সে টাকা নেয়নি। সে বলেছে মামলা চালবে, আমরা বলেছি মামলা চালাও। সে যেহেতু সালিশী বিচার মানেনি ,তাই তাকে গ্রামে একা চলতে হবে, গ্রামের লোকজন তার পরিবারের লোকজনের সাথে চলাফেরা করতে পারবে না, এমনকি তার গবাধি পশুও গ্রামের মাঠে চড়াতে পারবেনা বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছি। ’
সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আলতাব আলী বলেন,‘ স্কুলের ছাত্র মনোয়ারকে খুব মারধর করা হয়েছে এটা সঠিক। আমি তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের জানিয়েছি। ছেলেটাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। বিচারে খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা দেয়ার রায় হয়েছে অপরাধের তুলনায় শুধু টাকা জরিমানাই তো একজন পিতা বা স্তকুল ছাত্রের শান্তনা হতে পারেনা, এই টাকা না নেয়ায় ও বিচার না মানায় তাদের গরু-বাছুর ও তাদের পরিবারকে আদালাভাবে থাকার জন্য বলা হয়েছে বলে জানতে পেরিছে। ’
দোয়ারাবাজার থানার ওসি সুশীল রঞ্জন দাস বৃহস্পতিবার রাতে বললেন,‘ স্কুল ছাত্রকে মারধরের বিষয়ে পুর্বে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে তা তদন্তের জন্য একজন এসআইকে দেয়া হয়েছে, একঘরে করে রাখার বিষয়টি আমার জানা নেই, এমন হয়ে থাকলে দ্রত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd