প্রেমের পর বিয়ে, সন্তান অস্বীকার করছেন বাবা

প্রকাশিত: ৫:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় সাত মাস বয়সী কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে জনপ্রিতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক অসহায় মা।

জরিনা আক্তার নামের এ অসহায় মা সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের বড়চওনা গায়েন মোড় এলাকার বিন্নাখাইড়া গ্রামের দিনমজুর দুলাল হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে একই গ্রামের প্রতিবেশী আফাজ উদ্দিনের ছেলে আবু বকর সিদ্দিককে বিয়ে করে পরিবারে আশ্রয় হারিয়েছেন জরিনা। সেই সঙ্গে পাচ্ছেন না স্বামীর ঘরে ঠাঁই।

জরিনার ভাষ্য, ৫ বছর আগে তার সঙ্গে আবু বকর সিদ্দিকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বেড়ে যায় ঘনিষ্ঠতা। একপর্যায়ে সেই ঘনিষ্ঠতা শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়।

বিয়ের প্রলোভনে তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় আবু বকর সিদ্দিক। বিয়ের জন্য চাপ দিলে নানা টালবাহানা করে এড়িয়ে যায় সে। এর মধ্যে বছর খানেক আগে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে জরিনা। এ অবস্থায় পরিবার ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের সালিশে আবু বকরের সঙ্গে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। দুই মাস ঘর-সংসারের পর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে কন্যাসন্তান হলে জরিনাকে আর নিজের ঘরে নেয়নি স্বামী আবু বকর।

জরিনার দাবি, কন্যা সন্তান হওয়ায় স্বামী আবু বকরের মন খারাপ হয়েছে। আবু বকর সিদ্দিক প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। প্রভাব আর ক্ষমতাবলে আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে না নেয়ার চক্রান্ত করছে। এমনকি আমার সন্তানকে অস্বীকার করছে সে। সরাসরি বলে দিয়েছে, এ সন্তান আবু বকরের নয়। এ নিয়ে বারবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলেও কোনো সমাধান হয়নি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে জরিনা আক্তার বলেন, ৫ বছর প্রেমের পর আমাকে বিয়ে করেছে আবু বকর। এখন ভরণপোষণ তো দূরের কথা উল্টো সন্তানকেই অস্বীকার করছে। প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। তবুও আমি এ সন্তানের পিতৃপরিচয় চাই। সাত মাস বয়সী কন্যা সিনহা বড় হয়ে যখন জানতে চাইবে কে তার বাবা? তখন আমি তাকে কি জবাব দেব? আমি জীবনে আর কিছুই চাই না। শুধু কন্যাসন্তানের পিতৃপরিচয় চাই।

জরিনার বাবা দুলাল হোসেন বলেন, বিয়ের সময় ছেলে পক্ষ থেকে আমার মেয়ের নামে ১৫ শতক জমি লিখে দেয়া হয়। এখন উল্টো আমার নামে ও মেয়ের মায়ের নামে মামলা করেছে আবু বকর ও তার বাবা আফাজ উদ্দিন। নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে এ বিষয়ে জানার জন্য জরিনা আক্তারের স্বামী আবুবকর সিদ্দিকের মোবাইলে বারবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম কামরুল হাসান বলেন, প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে হয়েছে তাদের। ঘরে সাত মাস বয়সী সন্তানও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেক সালিশ-দরবার হয়েছে। দুই পক্ষ আদালতে মামলা করেছে। বিচার প্রক্রিয়াধীন থাকায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করা যাচ্ছে না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2018
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..