বিশ্বনাথে বসত ঘরে হামলা-ভাংচুর, লুঠপাট : পুলিশ-ইউপি মেম্বার-মহিলাসহ আহত ১২

প্রকাশিত: ১:০৫ পূর্বাহ্ণ, মে ২৮, ২০১৯

বিশ্বনাথে বসত ঘরে হামলা-ভাংচুর, লুঠপাট : পুলিশ-ইউপি মেম্বার-মহিলাসহ আহত ১২

Manual2 Ad Code

সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামে বাড়ির সীমানা নিয়ে চলমান বিরুদের জের ধরে সোমবার দুপুরে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে জামায়াত নেতাসহ তাদের পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের (জিয়া উদ্দিন গং) একাধিক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর পুলিশসহ জামায়াত নেতার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ জিয়া উদ্দিন গংদের বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর-লুঠপাট করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রতিপক্ষের হামলা ও পুলিশের লাটি চার্জে বিরুদ নিষ্পত্তি করতে আসা স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আমির উদ্দিন ও জিয়া উদ্দিনের চাচী আয়না বিবি (৫০)’সহ আনুমানিক ১২ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে দাবী করছেন জিয়া উদ্দিন গংরা। এসময় এক পক্ষের হামলায় থানা পুলিশের কনস্টেবল মামুন আহত হয়েছেন বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত হয়ে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জিয়া উদ্দিন গংদের পক্ষের শফিক আলীর পুত্র আতিকুর রহমান (১৮), মনোহর আলীর পুত্র ইরন মিয়া (৪০), আব্বাস আলীর পুত্র আবদুল মজিদ (৫০), আশিক আলীর পুত্র ইমন মিয়া (১৮) এবং সাইফ উদ্দিন গংদের পক্ষের আহতরা হলেন শফিক উদ্দিনের পুত্র সাইফ উদ্দিন (২৯), রুবেল উদ্দিন (২৮), মৃত সামস উদ্দিনের পুত্র জমির উদ্দিন (৩৫), মৃত আবদুল জলিলের পুত্র সুহেল মিয়া (৩২), মৃত সিরাজ উদ্দিনের পুত্র জামাল উদ্দিন (৫৫)। উভয় পক্ষের আহতদের মধ্যে আতিকুর, ইরন ও ইমনের অবস্থা আশংঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে ঘটনার পর কিশোরপুর গ্রাম থেকে থানা পুলিশ জিয়া উদ্দিনসহ তার পক্ষের আপ্তাব উদ্দিন, জুয়েল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। থানায় আটক থাকা পিতা আপ্তাব উদ্দিন ও ভাই জুয়েল মিয়াকে দেখতে গেলে (থানায়) রুমেল আহমদকেও আটক করে পুলিশ।

Manual5 Ad Code

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির সীমানা নিয়ে কিশোরপুর গ্রামের জিয়া উদ্দিন গং ও সাইফ উদ্দিন গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরুধ চলে আসছে। এর জের ধরে আনুমানিক ১৫ দিন পূর্বে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর এলাকাবাসী বিষয়টি আপোস-মিমাংশা করার উদ্যোগ গ্রহন করেন। এলাকাবাসীর আহবানকে জিয়া উদ্দিন গংরা স্বাগত জানালেও পাত্তা দেননি সাইফ উদ্দিন গংরা। একারণে গ্রামবাসী জিয়া উদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নেন। আর এলাকাবাসীকে সম্মান না দেওয়ার জন্য সাইফ উদ্দিন গংদেরকে চলাচলের জন্য তাদের নিজস্ব জায়গা ব্যবহার করার কথা বলেন এলাকাবাসী। সোমবার যোহরের নামাজ আদায় করার জন্য সাইফ উদ্দিন গংরা সংঘবদ্ধ হয়ে এলাকাবাসীর বাঁধা-নিষেধ অমান্য করে এলাকাবাসীর ভূমি ব্যবহার করে মসজিদে আসেন। এলাকাবাসী সাইফ উদ্দিন গংদের কাছে এলাকাবাসীর ভূমি ব্যবহারের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা (সাইফ গং) এনিয়ে এলাকাবাসীর সাথে বাকবিতন্ডা শুরু করেন। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় জরুরী সেবার ৯৯৯ নাম্বারে কল করেন সাইফ উদ্দিন গং জামাল উদ্দিন।

Manual4 Ad Code

৯৯৯ নাম্বারে কল যাওয়ার পর সেখান থেকে থানা পুলিশের কাছে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশনা আসলে বিশ্বনাথ থানার এসআই রসুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। আর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে সাইফ উদ্দিনের গংদের পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ জিয়া উদ্দিন গংদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এসময় সাইফ উদ্দিন, রুবেল উদ্দিন জামায়াত নেতা জমির উদ্দিনের করা ছুরিকাঘাতে জিয়া উদ্দিন গংদের ৪ জন গুরুত্বর আহত হন। আর নিজেদের পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের হাতে এভাবে গুরুত্বর আহত হয়েছে দেখতে পেয়ে পাল্টা জবাব দেয় জিয়া উদ্দিন গংরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাটিচার্জ শুরু করে। এসময় পুলিশ কনস্টেবল মামুন আহত হয়েছে দেখে আরোও উত্তেজিত হয়ে থানা পুলিশ জিয়া উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের বসত ঘরে ডুকে মহিলাদেরকেও লাঠি পেঠা ও বসতঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

Manual5 Ad Code

পুলিশের হাতে আটক আপ্তাব উদ্দিনের আয়না বিবি দাবি করেছেন, পুলিশ দা;ের ঘরে ভাংচুর করেছে এবং সাইফ উদ্দিন গংদের লোকজন তাদের বসত ঘরের স্টিল আলমারী ভেঙ্গে নগদ প্রায় ২০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুঠপাট করেছে।

আপ্তাব আলীর স্ত্রী আয়না বিবির দাবি তাদের ঘরে হামলা চালিয়ে ঘরে থাকা স্টিল আলমারী ভেঙ্গে নগদ প্রায় ২০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুঠপাট করা হয়েছে।

Manual6 Ad Code

এব্যাপারে সাইফ উদ্দিন বলেন, পুলিশকে সাথে নিয়ে আমরা মসজিদে যাওয়ার পক্ষে প্রতিপক্ষ আমাদের উপর হামলা করেছে। এতে আমাদের লোকজন আহত হয়েছেন।

বিশ্বনাথ থানার এসআই রসুল হোসেন বলেন, ৯৯৯ থেকে আমাদের কাছে কল আসলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদী জামাল উদ্দিনের কাছে বিষয় জেনে তাদেরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথিমধ্যে জিয়া উদ্দিন গংরা আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের এক কনস্টেবলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

চার জনকে আটকের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানায় অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..