সিলেট ১৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের বিতর্কিত ব্যবসায়ী রাগীব আলীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় চার্জ গঠন করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার সিলেটের মহানগর হাকিম আদালত-১ এর বিচারক মামুনুর রহমান সিদ্দিকী ৪১৮ ধারায় উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মামলার একমাত্র আসামি রাগীব আলীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। ফলে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হলো।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আলী জানান, রাগীব আলী লন্ডনে গিয়ে আখলাকুর রহমান গুলজারের কাছ থেকে ২ লাখ ১৫ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় অনুমানিক ২ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা) আত্মসাৎ করার অভিযোগে আদালতে এই মামলাটি করা হয়।
এ মামলার শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী কল্যাণ চৌধুরী ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। এছাড়া আইনজীবী বিমলেন্দু মিত্র তপন, ফেরদৌস আরা বেগম জেনি ও মামলাটির ফাইলিং আইনজীবী মোহাম্মদ আলী শুনানিতে অংশ নেন। পাশাপাশি আসামি রাগীব আলীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী মঈনুল ইসলাম ও শাহ মশাহিদ আলী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ৩ এপ্রিল সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে (সিআর মামলা নং ৪৭৭/১৭) এ মামলাটি করেন নাবিদা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান গুলজার।
ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ২০০৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাউথইস্ট ব্যাংকের মঞ্জুরিপত্র মূলে তিন কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। তিন কিস্তিতে মঞ্জুরিকৃত ঋণের মধ্যে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে ফাউন্ডেশন। নাবিদা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের বেশির ভাগ পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার যুক্তরাজ্যপ্রবাসী।
২০০৮ সালের ৫ জুলাই রাগীব আলী মালিকানাধীন দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকায় সাউথইস্ট ব্যাংকে বন্ধককৃত সম্পত্তির নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
রাগীব আলীর সঙ্গে বাদী আখলাকুর রহমান গুলজারের পারিবারিকভাবে পূর্বপরিচিতি থাকায় ও রাগীব আলী সাউথইস্ট ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে তার সঙ্গে টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তখন রাগীব আলী বলেন, তার সঙ্গে যদি যোগাযোগ করে লন্ডনে লেনদেন শেষ না করা হয় তাহলে বাদীর বন্ধককৃত সম্পত্তি নিলাম হয়ে যাবে। পরে রাগীব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লেনদেন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
একপর্যায়ে রাগীব আলীর সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের সমঝোতা হয় এবং সমঝোতা অনুযায়ী রাগীব আলীর লন্ডনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নং- ০০১৫১০৪ শর্ট কোড ৩০৯০৫৯ লয়েডস টি.এস.বি ব্যাংকে নাবিদা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের শেয়ার হোল্ডার তোফায়েল আলম তুহিন ৫ হাজার পাউন্ডের একটি চেক দিয়ে টাকা পরিশোধ করা শুরু করেন।
পরবর্তীতে রাগীব আলী বলেন, ওই চেকে টাকা নিতে সমস্যা আছে। তাকে নগদে টাকা দিতে। নগদ পরিশোধে রাজি না হলে রাগীব আলী আবারও বন্ধকীকৃত সম্পত্তি নিলাম হয়ে যাবে বলে জানান।
সম্পত্তি রক্ষায় তার কথামতো সর্বমোট ২ লাখ ১৫ হাজার পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ২ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদে দেয়া হয়। তৎকালীন সময়ে ১ পাউন্ডের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ১৩০ টাকা ছিল।
পরে রাগীব আলীর নির্দেশ ও পরামর্শ অনুযায়ী, ২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর সুদ মওকুফের জন্য আবেদন করেন বাদী আখলাকুর রহমান গুলজার। পরে জানতে পারেন রাগীব আলী প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd