সিলেট ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৮ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : আসনটি একসময় লাঙলের দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। মুকিত খান এ আসনে তিন তিনবারের এমপি ছিলেন। সেই দুর্গে একবার হানা দিয়েছিল বিএনপি। এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী। কিন্তু তারা বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি আসনটি। ওই আসনে শফি চৌধুরীর পর বিএনপির যোগ্য প্রার্থী কেউ বের হয়ে আসেননি। তাই এখানে গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েছ এমপি নির্বাচিত হন। এবার আওয়ামী লীগের নিজ ঘরেই এমপি কয়েস বেকায়দায় পড়েছেন। তিনি মনোনয়ন পান সেটা অনেকে চাচ্ছেন না। নতুন মুখ হিসেবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ত্রাণসম্পাদক হাবিবুর রহমানসহ একাধিক প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে। অন্যদিকে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মো. দিলওয়ার হোসেন এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী উছমান আলী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষ বর্তমান এমপি মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েসের সঙ্গে। অন্য বড় একটি পক্ষ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে। এ নিয়ে দুদিন পর পর মতবিরোধ ও সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে দলটি। এতে এবার কয়েস মহা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। কয়েস টিকিট পাবেন কিনা, সেটা নিয়ে যেমন চাপে, অন্যদিকে টিকিট পেলে বিজয় আসবে কিনা তা নিয়েও দোলাচলে। কেননা, টিকিট পেলেও দলীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন পাওয়া নিয়ে আছে বড় সংশয়। এ ছাড়াও দক্ষিণ সুরমার উন্নয়ন নিয়ে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। বেশির ভাগ উন্নয়ন ফেঞ্চুগঞ্জ কেন্দ্রিক হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিগত পনেরো বছরেও এমপি কয়েস দক্ষিণ সুরমায় গ্যাস সংযোগ দিতে পারেননি। বিএনপি আমলে গ্যাসের নথি শফি আহমদ চৌধুরী বেশ কিছুটা অগ্রসর করেছিলেন। কিন্তু এমপি কয়েস এই নথিতে হাতও দেননি বলে মনে করেন এলাকাবাসী। এছাড়াও এমপি কয়েসের বিরম্নদ্ধে অভিযোগ করে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেছে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের (রইছ আলী) একাংশ। তারা দাবি করেন, এমপি কয়েসের বাবা একজন রাজাকার ছিলেন। কয়েস আওয়ামী লীগের একজন ‘কাউয়া’। তিনি এলাকার কোনো উন্নয়ন না করে দালাল পুষেন। এরা দালালি করে দলের ইমেজ নষ্ট করছে। তাই এমপি কয়েসকে মনোনয়ন যেন দেয়া না হয়। অন্যদিকে এমপি কয়েস পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, ২০০৯ সাল থেকে চলতি ২০১৮ সাল পর্যন্ত্ম ২ মেয়াদে গত ৯ বছরে তার নির্বাচনী এলাকায় শাহজালাল সার কারখানা স্থাপনসহ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
সিলেট-৩ আসনে বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী বর্তমানে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন।স্তিমিত তৎপরতা দিয়ে তিনি এখনো এমপি মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে বিএনপির একমাত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন। যুবদল নেতা কাইয়ুম চৌধুরীর নাম শোনা গেলেও তিনি দলীয় সমর্থনের বাইরে রয়ে গেছেন। তাই এ আসনে আওয়ামী লীগে কোন্দল থাকলেও বিএনপি ততটা শক্ত অবস্থানে নেই। বরং বড় দুই দলের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন খেলাফত মজলিসের নেতা মো. দিলওয়ার হোসেন এবং জাতীয় পার্টি নেতা উছমান আলী। যেহেতু দক্ষিণ সুরমায় লাঙলের ঘাঁটি ছিল একসময়, সেহেতু উছমান আলী আশাবাদী জাপা থেকে তিনি মনোনয়ন পাবেন। জাপা যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকে ও আসন ভাগাভাগি হয়, তাহলে উছমান আলী মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করেন। আবার যদি জাপা এককভাবে নির্বাচন করে, তাও উছমান আলীই মনোনয়ন পাবেন-এমনটা প্রত্যাশা দলটির। খেলাফত মজলিস এবার সিলেটে দুটি আসনে তাদের প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাই দলটিতে কোনো কোন্দল নেই। দলের প্রবল সমর্থন নিয়ে এ আসনে মাঠে সরব প্রচারণায় আছেন মো. দিলওয়ার হোসেন। তিনি এই আসনে এমপি নির্বাচনের আগেই অনেক জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd