সিলেট ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ২:১০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : “বিমানটা যখন পড়ল তখন আমার মেয়ে (আড়াই বছরের) আমার হাজব্যান্ডের কোলে ছিল। এরপর কোথায় যে ছিটকে পড়ে গেল। তাকে আর কোথাও পাই না। মেয়েকে খোঁজার জন্য আমার হাজব্যান্ড চারপাশে তাকিয়ে দেখছে আর বলছিল, ‘যেভাবেই হোক আমাদের বের হতে হবে।’”
কাঠমাণ্ডু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বলছিলেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের বেঁচে যাওয়া যাত্রী আলমুন নাহার এ্যানি। সামনেই একটা ফাটল ছিল, সেই ফাঁক দিয়ে তাঁকে টেনে বের করেন আরেক সহযাত্রী। কিন্তু মেয়ে তামারা প্রিয়ন্ময়ীকে নিয়ে আর বের হতে পারেননি এ্যানির স্বামী আলোকচিত্রী এফ এইচ প্রিয়ক।
চোখের সামনেই জ্বলে গেল উড়োজাহাজটি, প্রচণ্ড শব্দে চাপা পড়ে গেল ভেতরে আটকে থাকা যাত্রীদের মর্মন্তুদ আর্তনাদ। বীভৎস সেই দৃশ্য মনে করে হাসপাতালের বিছানায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন এ্যানি।
যে সহযাত্রী মেহেদী হাসান তাঁকে (এ্যানি) টেনে বের করেছিলেন, তিনিও শুয়ে আছেন একই হাসপাতালের আরেক শয্যায়। সেখানে আহত আটজন বাংলাদেশি যাত্রী চিকিৎসাধীন। আরেকজন ভর্তি রয়েছেন নরভিক হাসপাতালে।
দুর্ঘটনার ভয়াল স্মৃতি মনে করে এ্যানি বলছিলেন, ‘আমি আমার সামনে একটি ফ্র্যাকচার দেখতে পাই। মেহেদী ভাই ও তার ওয়াইফ বের হয়েছিল তখন। খুব কালো ধোঁয়ায় আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল, আর চারপাশে আগুন দেখা যাচ্ছে। কিছুই দেখতে পারছিলাম না। তখন আমাকে টেনে বের করছিল মেহেদী ভাই।’
শূন্য দৃষ্টি মেলে এ্যানি বলে চলেন, ‘ওরা (স্বামী আর মেয়ে) ভেতরেই ছিল। আগুনের প্রচণ্ড তাপ। তখনো আমার বাচ্চাকে খোঁজার চেষ্টা করছিল আমার স্বামী। আমার বাচ্চার (তামারা) বয়স দুই বছর পাঁচ মাস।’
কান্নায় কথা আটকে যায় এ্যানির। আবার বলেন, ‘আমি ছিলাম জানলার পাশে, ১৪ এফডি, পাখার পাশে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিকট শব্দে বিমানটি আছড়ে পড়ে। আমি ছিলাম বিমানের ডান পাশে। হঠাৎ দেখি আগুন…।’
এ্যানির পরে আর কেউ বের হতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘আমাকে ওইখান থেকে জোর করে বের করে নিয়ে এসেছে। স্বামী আর মেয়েকে ছাড়া বের হচ্ছিলাম না।…মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে আমার স্বামীও আর ফিরে এলো না।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd