ঘাতক প্রেমিকের জবানিতে মুন্নী হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা!

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭


Manual8 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : প্রেমই কাল হলো এসএসসি পরীক্ষার্থী মুন্নীর। প্রেমের সম্পর্ক ভাঙার পরেই প্রেমিক ইয়াহিয়ার হাতে নির্মমভাবেই খুন হতে হয় তাকে।

দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী হুমায়রা আক্তার মুন্নী হত্যার ঘটনায় এলাকায় বইছে আলোচনার ঝড়।

Manual6 Ad Code

ঘাতক ইয়াহিয়ার ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে তার সহপাঠীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন। এমনকি ইয়াহিয়ার মা হামিদা বেগমও মুন্নী হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।

হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর সিলেট থেকে ইয়াহিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

দিরাই আমল গ্রহণকারী আদালতের বিচারক মো. আবু আমর’র আদালতে ইয়াহিয়া চৌধুরীকে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

জবানবন্দির পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ, অনেকটা কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা।

মুন্নী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। রাজানগর কেসিপি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে মুন্নী জেএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৬ সালের ৩রা জানুয়ারি দিরাই উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। স্কুল সার্টিফিকেটে মুন্নীর জন্ম তারিখ ২০০১ সালের ১৮ই জানুয়ারি।

Manual8 Ad Code

স্কুলে ভর্তির কিছুদিন পর প্রতারণামূলকভাবে ১১-০৪-১৯৯৬ইং তারিখে জন্ম তারিখ উল্লেখ করে জন্ম সনদ তৈরি করে ২০১৬ সালের ২০শে জানুয়ারি মুন্নীর বিয়ে হয়।

দালালদের খপ্পড়ে পড়ে গোপনীয়ভাবে ভুয়া লন্ডনির কাছে বিয়ে হয় মুন্নীর। প্রতারক স্বামীর সঙ্গে সিলেটে প্রায় মাস খানেক সংসার করে মুন্নী। একসময় বুঝতে পারে তার স্বামী লন্ডনি নয়। তা জানতে পেরে মুন্নী মায়ের কাছে চলে আসে।

বাড়িতে আসার পর কাপড় দোকানের সেল্‌সম্যান ইয়াহিয়া’র সঙ্গে পরিচয় হয় মুন্নীর। পরিচয় থেকে তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

প্রেমের সুবাদে মুন্নীদের বাসায় যাতায়াত ছিল ইয়াহিয়ার। বাসা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরাও করেছে তারা। গত ৮ আগস্ট নোটারি পাবলিক সুনামগঞ্জের মাধ্যমে সাবেক স্বামীকে তালাক দেয় মুন্নী।

নোটারি পাবলিকের হলফ নামায় মুন্নী তার স্বামীর নাম লোকমান হোসেন ডালিম, পিতা মো. কালা মিয়া। ঠিকানা-বাসা/হোল্ডিং রেলওয়ে কলোনি, গ্রাম/রাস্তা-সাধুর বাজার, ডাকঘর-সিলেট, থানা-সিলেট সদর, জেলা-সিলেট।

Manual3 Ad Code

কিন্তু কাবিনে ছদ্মনাম ও ঠিকানা লেখা হয়। কাবিন অনুযায়ী স্বামীর নাম ও ঠিকানা আতিকুর রহমান বাছিত, পিতা-বাতির আলী, মাতা-মোছা. মনোয়ারা চৌধুরী, সাং-বালি সহস্র, পো.-কদমহাটা, থানা-রাজনগর, জেলা মৌলভীবাজার।

তালাকের পরপরই প্রেমের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ান মুন্নীর মা। একপর্যায়ে গত ২৬শে অক্টোবর মুন্নীর পরিবারের পক্ষে ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে তার মেয়েকে ইভটিজিং করার অভিযোগ করেন। ২৯শে অক্টোবর র‌্যাবের সুনামগঞ্জ ক্যাম্পে দুই পরিবারকে ডাকা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব কার্যালয়ে আর মুন্নীর সঙ্গে কোনো ধরনের দেখা সাক্ষাৎ করবে না মর্মে মুচলেকা রেখে তা সমাধান করে দেয়া হয়।

প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর প্রতিশোধের নেশা থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে বলে স্থানীয় অনেকে জানান। ১৬ই ডিসেম্বর মুন্নীদের বাসায় গেলে ইয়াহিয়াকে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে মুন্নী। এ সময় ইয়াহিয়া ফ্রিজের ওপরে থাকা চাকু দিয়ে মুন্নীর বুকে এবং পেটে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

Manual1 Ad Code

এরপর ইয়াহিয়া প্রথমে সিলেটে, পরে ময়মনসিংহের ইশ্বরগঞ্জে কবিরাজ নুরুল ইসলামের বাড়িতে যায়। এরপর আবার সিলেটে। সিলেট থেকে ঢাকার কল্যাণপুরে। ২০শে ডিসেম্বর বুধবার রাতে আবার সিলেটে চলে আসে। ওই রাতেই পুলিশ তাকে সিলেটের মাসুকবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। সূত্র: মানবজমিন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..