২০১৭ সাল বয়সভিত্তিক ও নারী ফুটবলের জয়জয়কার

প্রকাশিত: ৭:০৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭

খেলাধুলা ডেস্ক : শেষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ২০১৭ সাল। খুব শীঘ্রই সাবেক হতে যাওয়া ২০১৭ সালে সাফল্য-ব্যর্থতা সবই ছিল বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে।
ক্রীড়া ক্ষেত্রে অন্যান্য ইভেন্টের মত সাফল্য-ব্যর্থতায় মিশেল বাংলাদেশের ফুটবল। বাংলাদেশের জাতীয় দলের ব্যর্থতার মধ্যে দেশকে সাফল্যের স্বাদ দিয়েছেন বয়স ভিত্তিক ও নারী ফুটবলাররা। এবার বছরের অন্তিমলগ্নে এসে বাংলাদেশের ফুটবলের সাফল্য-ব্যর্থতার দিকে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাকঃ

শতভাগ না হলেও সাফল্য দিয়েই ২০১৭ সালের যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবলের। নারীরাই সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসরে বাংলাদেশকে রানার্সআপ করে। গত বছরের শেষ ভাগে ভারতের শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত হয় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। তবে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি। নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, আফগানিস্তানের মতো দলকে পেছনে ফেলে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। তবে ফাইনালে স্বাগতিক ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরে রানার্স আপ হয় সাবিনার দল। ভারতের কাছে হেরে রানার্স আপে বছর শুরু করা বাংলাদেশই বছরের শেষ ভাগে সেই ভারতকে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।

বছরের শুরুতে শতভাগ সাফল্য না পেলেও, বছরের শেষে এসে সেটি পূর্ণ করে মেয়েরা। মারিয়া, তহুরা, মনিকা, আনুচিংরা সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের পুরো টুর্নামেন্টে দাপট দেখিয়ে ফাইনালে উঠে। সেখানে শক্তিশালী ভারতকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ নেয় গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্ট আয়োজন করেও শতভাগ সফল বাংলাদেশ। তাই আয়োজনে সফল, দলগত পারফরমেন্সে সফল হয়ে সাফল্য নিয়েই বছর শেষ করল বাংলাদেশ।

এশিয়ার সেরা ৮ দলের অংশগ্রহণে সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে বসে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্তপর্ব। গত বছর ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টেরই বাছাইপর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে মূল পর্বে জায়গা পায় বাংলাদেশের মেয়েরা। চূড়ান্তপর্বে ‘বি’ গ্রুপ থেকে অংশ নেয় ছোটনের দল। তবে চূড়ান্ত পর্বে গিয়ে উত্তর কোরিয়া, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলগুলোর সাথে লড়াই করতে পারেনি তারা। তবে আশা জাগানিয়া পারফরমেন্স ঠিকই করেছে বাংলাদেশ।

ছয় দলের অংশগ্রহণে গত সেপ্টেম্বরে ভুটানে অনুষ্ঠিত হয় পুরুষদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ। শিরোপা জিততে না পারলেও পারফরমেন্সে উজ্জ্বল ছিল বাংলাদেশের তরুণ খেলোয়াড়রা। গোল ব্যবধান, পয়েন্ট সমান হওয়ার সত্ত্বেও শুধুমাত্র হেড টু হেডের হিসাবে রানার্স আপ হতে হয় বাংলাদেশকে। নেপাল হয় চ্যাম্পিয়ন। তবে পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফুটবলের জন্য বাহবা কুড়িয়েছে জাফর, মুন্না, বিশ্বনাথ, বাদশা, আল-আমিনরা। নেপালের কাছে হারলেও ভারত-ভূটান ও মালদ্বীপকে হারায় লাল-সবুজের দল। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও পরে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। ঐ টুর্নামেন্টে ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেন বাংলাদেশের জাফর ইকবাল।

ভুটানে পুরুষদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ দলটিই অক্টোবরে তাজিকিস্তান সফরে যায় এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে খেলোতে। ‘বি’ গ্রুপ থেকে অংশ নিয়ে ছয় দলের মধ্যে তৃতীয় হয় বাংলাদেশ। গ্রুপ সেরা রানার্স আপ হতে পারলেও চূড়ান্ত পর্বে জায়গা হতো। অল্পের জন্য সেই সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।

২০১৫ সালে সিলেটে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। দুই বছর পর সেই আসরটি এবার আগস্টে নেপালে অনুষ্ঠিত হয় সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নামে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় তারা।

সাফে ব্যর্থ হলেও এক মাস পর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে অংশ নিতে কাতারে যায় বাংলাদেশ। ইয়েমেনের সঙ্গে লড়াই করে ২-০ গোলে হারলেও স্বাগতিক কাতারকে তাদের মাটিতেই ২-০ গোলে হারিয়ে ‘ই’ গ্রুপে রানার্স আপ হয়। কিন্তু ১০ গ্রুপের বাছাইপর্বে সেরা পাঁচ রানার্স আপ হতে না পারায় চূড়ান্ত পর্বে ওঠা হয়নি বাংলাদেশের।

অক্টোবরে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের জন্ম দেয় জাতীয় ফুটবল পুরুষ দল। এএফসি এশিয়ান কাপ প্লে-অফের বাছাই পর্বে ফিরতি ম্যাচে ভুটানের মাটিতে ৩-১ গোলে হারে বাংলাদেশ। ওই হারের পর তিন বছরের জন্য ফিফা-এএফসি সূচিভুক্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে নির্বাসিত হয় বাংলাদেশ।

বেলজিয়ান টম সেইন্টফিটের অধীনে ভূটানের কাছে হেরে তিন বছরের জন্য ফিফা-এএফসি সূচিভুক্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে নির্বাসিত হয় বাংলাদেশ। ঐ হারে সেইন্টফিট অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। তার স্থলাভিষিক্ত হন অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্ড্রু ওর্ড।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..