সিলেট ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
ফয়সল আহমদ : কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষের ছুটেচলার শেষ নেই। এই ছুটে চলা জীবনের পথে এখন যেনো সবচেয়ে বড় এবং প্রধান সমস্যা নগরীর যানজট। দিন দিন যেন এর মাত্রা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। যানজটের কারণ হিসেবে বিভিন্ন সমস্যা ধরা পড়লেও এর মূলে প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে নগরীর ফুটপাত, গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড এবং নম্বরবিহীন অবৈধ যানবাহন। বিশেষ করে সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো বেড়েই চলছে। ফুটপাতসহ এ সকল অবৈধ স্ট্যান্ডগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন দলের ছত্রছায়ায় থাকা পাতি নেতারা। প্রশাসন এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে অভিযান দিলেও তা বেশি সময় স্থায়ীত্ব পায় না।
ভুক্তভূগী নগরবাসী জানান, সিলেট নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে নম্বরবিহীন ও ভূয়া নম্বর লাগিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করার সুবাদে শহরে গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলছে। একদিকে ফুটপাত দখল অন্যদিকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজট লেগেই আছে। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রী, শ্রমজীবী, কর্মজীবীসহ নগরবাসীকে। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মানুষের মূল্যবান শ্রমঘন্টা। এ সমস্যা নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা দরকার বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
নগরীর বাইরে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে যারা মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চালাচ্ছে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা রেখে তাদের যানবাহন ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের বহু অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে পাওয়া গেছে। যাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে যানবাহনগুলো ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এরপর ওই যানবাহন ধরা পড়লে তা বাজেয়াপ্ত করার কথা মুচলেকায় উল্লেখ থাকলেও রহস্যজনক কারণে অনেক ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না।
যেসব অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে, তার উপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের নির্দেশ রয়েছে, নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলে দুজন আরোহী এবং অন্যান্য যানবাহনে রিয়ন্ত্রিত আরোহী থাকতে হবে। না হলে ওই সকল যানবাহনের কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় আনার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ‘মামা-ভাগ্নে-দোলাভাই’ সম্পর্ক রাখতে গিয়ে প্রশাসন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রলয়ের নির্দেশ মানছে না। তাই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ খুন খারাপির মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে নগরীসহ নগরীর বাইরে।
দেখা গেছে নগরীর বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার এবং প্রশস্ত করা হচ্ছে। তাতেও নগরবাসী বা পথচারীদের কোনো কাজে আসছে না। রাস্তাগুলো অবৈধভাবে দখলে নেয় সিএনজি-অটোরিকশা, লেগুনা, মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, টিলাগড়, সোবহানীঘাট, জেলরোডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের করুণ অবস্থা।
সিলেট নগরীর অন্তত অর্ধশতাধিক স্থানে রয়েছে সিলেট নগরীর সিএনজি অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও ট্রাকের অবৈধ স্ট্যান্ড। প্রধানসড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার সংযোগ সড়কেও গড়ে উঠেছে অবৈধ স্ট্যান্ড।
সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, জেলরোড, সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, শিবগঞ্জ, উপশহর, টিলাগড়, শাহী ঈদগাহ, কাজিটুলা, মদিনা মার্কেট, তেমুখী, মেডিকেল রোড, লামাবাজার, বালুচর, সুরমা পয়েন্ট, তালতলা, পৌর বিপণি মার্কেট, ধোপাদীঘির পূর্বপাড় ছাড়াও সার্কিট হাউসের সামনের রাস্তার উপর গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ ট্রাকের স্ট্যান্ড।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, যানজট সমস্যা নিরসনে পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে কাজ করা হবে। বিভিন্ন সময়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। যানজট সমস্যার সমাধানে নতুন করে পদেক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (ট্রাফিক) নিকোলিন চাকমা বলেন, শীতের মৌসুম থাকায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। এতে করে বাইরে থেকে আসা অতিরিক্ত গাড়িগুলো নগরী হয়েই বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করছে। তাছাড়া যে সকল কারণে যানজট সমস্যা রয়েছে তা সনাক্ত করে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd