কারারক্ষীকে জেল সুপারের ধর্ষণ, অতঃপর!

প্রকাশিত: ৬:৫৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৭

বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারের বিরুদ্ধে নারী কারারক্ষীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সিনিয়র জেল সুপারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগটি দায়ের করেন ওই নারী কারারক্ষী। আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুদিপ্ত দাস অভিযোগটি গ্রহণ করে মঙ্গলবার তা শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- সিনিয়র জেল সুপার ও ভারপ্রাপপ্ত কারা ডিআইজি আজিজুল হক, কারারক্ষী নিজাম ও শেখ ফরিদ। আদালতে দাখিল করা ওই অভিযোগে জানা গেছে, ২০০১ সালে ওই নারী কারারক্ষী হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। এরপর ঢাকা থেকে গত ১২ জানুয়ারি বরিশালের কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলি হয়ে আসেন। বরিশালে এসেই সিনিয়র জেল সুপার আজিজুল হকের কু-দৃষ্টির শিকার হন তিনি।
গত ১৫ জানুয়ারি তাকে ঝালকাঠি কারাগারে বদলি করা হলেও ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে প্রেষণে পুনরায় বরিশালে নিয়ে আসা হয়। বরিশালে এনে তাকে বন্দিদের সাথে সাক্ষাতের স্লিপ দেয়ার ডিউটি দেয়া হয়। পাশাপাশি থাকার জায়গা হিসেবে সিনিয়র জেল সুপারের বাসার পাশেই সরকারি রুমে স্থান দেন। এর ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময় তাকে চাকরির ভয় দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো সিনিয়র জেল সুপার। কিন্তু তার প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি। তাকে রাজি করানোর জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় কারারক্ষী নিজাম ও শেখ ফরিদকে।
ওই কারারক্ষীরা তাকে জানান, সিনিয়র জেল সুপারের কথা অমান্য করলে তার চাকরিতে সমস্যা হতে পারে। সর্বশেষ গত ১৮ অক্টোবর রাতে ওই দুই কারারক্ষী তার রুমে গিয়ে জানান, বন্দি স্লিপের হিসেব ও টাকা নিয়ে জেল সুপার আজিজুল হক তাকে ডাকছেন। ওই রাতে তিনি যেতে না চাইলে কারারক্ষীরা তাকে চাকরি হারানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে আজিজুল হকের কাছে নিয়ে যান। হিসেব নিয়ে আজিজুল হকের কাছে গেলে তিনি শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।
এসময় তিনি বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিজুল হক ধর্ষণের চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে তার চিৎকারের পার্শ্ববর্তী স্টাফরা সেখানে আসলেও সিনিয়র অফিসারের কক্ষে কেউ প্রবেশ করার সাহস পাননি।
আজিজুল হকের সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায় ওই নারী কারারক্ষী খাট থেকে পরে বুকে ব্যাথা পায়। পরে তিনি ওই কক্ষ থেকে দৌড়ে চলে যান। এরপর বুকের ব্যথা বাড়লে দুই দিন পর শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
এদিকে ওই নারী কারারক্ষীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কারাগারে তার থাকার ঘরে তালা দেয়ার জন্য জেলার বদরুদ্দোজাকে নির্দেশ দেন সিনিয়র জেল সুপার। হাসপাতালে চিকিৎসা থেকে ফিরে এসে ওই নারী কারারক্ষী দেখেন তার কক্ষে দুটি তালা ঝুলে আছে। যার একটি তিনি নিজেই লাগিয়েছিলেন।
অপরটির বিষয়ে জানতে চাইলে তাকে জানানো হয়, সিনিয়র জেলা সুপারের নির্দেশে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়েছেন জেলার বদরুদ্দোজা। বর্তমানে তিনি বাড়িতে থেকেই প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে আসা যাওয়া করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- জেল সুপার এর আগে খুলনাতে চাকরিকালে চার বছর চাকরিচ্যুত ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি বরিশালে এসে যোগদান করেন।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2017
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..