শিগগিরই ৪ হাজার নার্স নিয়োগ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১:৩১ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২০

শিগগিরই ৪ হাজার নার্স নিয়োগ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

Manual4 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আরও চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর পদ সৃষ্টি ও নিয়োগের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা আরও চার হাজার নার্স নিয়োগ দিচ্ছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছি। শিগগিরই এই নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে।’

Manual7 Ad Code

সোমবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য অল্প সময়ের মধ্যে দুই হাজার ডাক্তার ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আরও দুই হাজার চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা চার হাজার নার্স নিয়োগ দেবো। সেই নির্দেশ আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে দিয়েছি। শিগগিরই এই নিয়োগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে তিন হাজার টেকনিশিয়ানের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

Manual1 Ad Code

সরকার প্রধান বলেন, ‘কোভিড-১৯ চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্পূর্ণ সরকারি খরচে হোটেলে থাকা-খাওয়া ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে, থাকা-খাওয়ায় একমাত্র মেডিক্যাল কলেজের হিসাব অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে বলে বিরোধীদলীয় উপনেতা যেটা বলেছেন— এটাকে স্বাভাবিকভাবেই অস্বাভাবিক মনে হয়। আমরা তদন্ত করে দেখছি এত অস্বাভাবিক কেন হলো? এখানে কোনও অনিয়ম হলে আমরা তার ব্যবস্থা নেবো।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘যন্ত্রপাতি, টেস্ট কিট, সরঞ্জামাদি কেনাসহ চিকিৎসা সুবিধা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা দ্রুততম সময় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি। আরও একটি প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে করোনা মোকাবিলায় আমাদের সামর্থ্য আরও বাড়বে বলে বিশ্বাস করি।’

দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার কম মনে করেন তিনি। গত ২৭ জুনের বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ‘এই সময়ে বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ২ হাজার ২শ’ জন। এরমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ লাখ এক হাজার ৬৪৪ জন। অর্থাৎ মৃত্যুর হার ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৭ জন। এক হাজার ৭৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর ৫৫ হাজার ৭২৭ জন সুস্থ হয়েছেন।

কোনও মৃত্যুই কাম্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি দেখি আক্রান্তের তুলনায় দেশে মৃত্যুর হার এক দশমিক ২৬ শতাংশ। যেখানে ভারতে তিন দশমিক শূন্য ৮, পাকিস্তানে ২ দশমিক শূন্য ৩, যুক্তরাজ্যে ১৪ দশমিক শূন্য ৩ ও যুক্তরাষ্ট্রে ৫ শতাংশ। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় দেশে করোনাভাইরাস জনিত মৃত্যুর হার কম রাখতে সক্ষম হয়েছি; যদিও আমরা চাই না কেউ মৃত্যুবরণ করুক।’

Manual3 Ad Code

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে এই বাজেটে আমরা কর্মসংস্থানের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই জুলাই থেকে তা বাস্তবায়ন শুরু হবে। এর লক্ষ্য হবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গতিশীল করা।

বিগত ১২ বছরে এক দশমিক ৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর ফলে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছিল। আশা ছিল এবার আরও কমিয়ে ফেলবো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) এ দারিদ্র্য বিমোচনের ধারায় কিছুটা ছন্দপতন হতে পারে। এই মহামারির কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম থমকে যাওয়ায় আমাদের দারিদ্র্যসীমা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কেউ কেউ করছেন। কিন্তু, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে আমরা বিশাল যে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা দিয়েছি, তার মাধ্যমে এই আশঙ্কা অনেকটাই রোধ করতে সক্ষম হবো বলে বিশ্বাস করি। আগামী অর্থবছরে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যখন শুরু হবে, তখন আমরা দারিদ্র্য বিমোচন নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবো। দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে পারবো।’

তিনি বলেন, কোভিড-১০ মোকাবিলায় অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমরা গতানুগতিক বাজেট হতে সরে এসে সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন এনেছি। স্বাস্থ্য খাতকে এবার সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে জনজীবনকে সুরক্ষার লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল প্রিপার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান’ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কোডিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় ৫ হাজার ৫ কোটি টাকার বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দের দিক থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের অবস্থান পঞ্চম। এটি গত অর্থবছরে ছিল অষ্টম স্থানে।

সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি কীভাবে মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বারবার জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি। নিজেকে সুরক্ষিত রাখা এবং সেইসঙ্গে অপরকে সুরক্ষা দেওয়া—এটা প্রত্যেকের দায়িত্ব। আশা করি সবাই এটা পালন করবেন।’

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..