সিলেট ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:১০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০১৯
আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় চলছে। বিষয়টি পৌঁছেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের কানেও। এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) জেদান আল মুছা।
গতকাল বিকালে তিনি জানিয়েছেন- ‘বিষয়টি কমিশনারের কাছে গেছে। তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’ তাসলিমা নামের ওই মহিলা ফেসবুকে জানিয়েছেন- তিনি স্বামী সহ সিলেটে এসেছিলেন। বুধবার সকালে সিলেট থেকে ফেরার পথে নগরীর চৌহাট্টায় পুলিশের কবলে পড়েন।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনকে আলাদা আলাদা ভাবে জেরা করে। এরপর টাকা পেয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। আগে থেকেই ময়মনসিংহগামী বাসের টিকিট কনফার্ম থাকায় তারা এ নিয়ে বেশি কথা বাড়াননি।
তবে- নিজের ফেসবুক আইডিতে তাসলিমা বিষয়টি তুলে ধরেছেন। স্ট্যাটাসের একাংশে তাসলিমা উল্লেখ করেন- ‘সিএনজিতে ৫ জন পুলিশ।
আমার সঙ্গে আমার সাহেব ছিল। সিএনজি দাঁড় করিয়ে আমার সাহেবকে নিয়ে গেলো তাদের সিএনজিতে। বলতাছে আপনি একটু আমাদের সঙ্গে আসেন কথা আছে।
ওরে নিয়ে গিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা শুরু, আপনার কি হয় ওনি? বিয়ে হলো ক’দিন? ছেলে-মেয়ে ক’জন? কি করেন? এখানে কেন আসছেন? তখন আবার চলে গেলো আমার সাহেবের কাছে। ওরেও গিয়ে একই কথা জিজ্ঞেস করা হলো কিন্তু আমার আড়ালে।’
স্ট্যাটাসে তিনি আরো উল্লেখ করেন- ‘নাস্তা না করেই গাড়িতে উঠলাম। আমার সাহেব আমার সঙ্গে একটা কথাও বলে না। ১২টা বাজে তাও কথা বলে না। আমি বার বার ওরে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি কাজ হয়নি। দুপুরে খাবার বিরতি দিলো। নামলাম খাওয়ার জন্য। ওরে বললাম দেখো আমার সঙ্গে কথা বলছো না কেন? আমর খুব কষ্ট হচ্ছে।
ছে? আমাকে বলতাছে কত টাকায় ভাড়া করে নিয়ে আসছেন? (যখন লিখছি তখনও চোখ দিয়ে সমানে পানি পড়ছে।) আমার সাহেব তখন বললো দেখুন আমার বউটা খুবই ভালো পরিবারের মেয়ে আর আমিও ওরে খুবই যত্ন আর সম্মানে রাখি, আমাকে যা খুশি বলেন আমার বউটাকে নিয়ে কিছু বলবেন না।’
আরো উল্লেখ করেন- ‘আমি ঘুরতে পছন্দ করি। আমার ছেলে ইন্টারে পড়ে এখনো আমাকে কাবিননামা নিয়ে ঘুরতে হবে। আমি আর কি কি লিখবো? তবে মরে গেলেও সিলেট কোনোদিনই আর যাবো না।’ এদিকে- ফেসবুক স্ট্যাটাসে সিলেট পুলিশের এই বিতর্কিত যতই ঘুরপাক খাচ্ছে ততই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কেউ কেউ স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন- সিলেটের বন্দরবাজার, তালতলা, চৌহাট্টা সহ কয়েকটি এলাকায় প্রতিদিনই ঘটে এসব কর্মকাণ্ড। ফাঁড়ি পুলিশের এএসআইরা বেপরোয়া হয়ে এসব কর্মকাণ্ড ঘটায়। সিলেটের সুরমা মার্কেট ও তালতলার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- ভোর হলেই সিলেটের রাস্তায় নামে টহল পুলিশ।
নারী-পুরুষকে এক সঙ্গে রিকশা দেখলেই তারা জাপটে ধরে। দুই জনকে আলাদা আলাদা ভাবে নিয়ে জিজ্ঞেস করে। অনেককেই টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ব
ন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ও আম্বরখানা পুলিশ ফাঁড়ি, সুবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআইদের নেতৃত্বে বেপরোয়া এই টহল টিমের কর্মকাণ্ড বার বার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ কারণে এবার এই ঘটনাটি সিলেটবাসী নাড়া দিয়েছে।
তবে- সিলেট মহানগর পুলিশের এডিসি মিডিয়া জানিয়েছেন- ‘বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও নাড়া দিয়েছে। এমন ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। কমিশনার স্যার বিষয়টি দেখছেন।’ এদিকে- সিলেটের সুরমা মার্কেটে বদরুল রেস্ট হাউস নামে একটি হোটেল রয়েছে।
এ হোটেলকে ঘিরে ঘাপটি মেরে বসে থাকে পুলিশ। যারাই এই হোটেলে যায় তাদের পিছু নেয়। ধরে নিয়ে আসে ফাঁড়িতে। সঙ্গে থাকা টাকা তো নেয়ই, স্বজনদের ফোন দিয়ে এনে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- সুরমা মার্কেটের সামনে অবাঞ্ছিত নারীরা পুলিশের শেল্টারে অবাধে ঘুরাফেরা করে। তাদের দিয়ে টাকা রুজির ধান্ধা করে বেড়ায় পুলিশ। আর এতে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হন সিলেটের বাইরে থেকে আসা লোকজন। সূত্র: মানবজমিন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd