সিলেট ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবারও শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী আমেজ। আগামী মার্চ মাসেই সারা দেশে প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের প্রস্তুতী নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উত্তর সিলেটের পাথর ও পর্যটন কেন্দ্রিক এ উপজেলার আনাচে কানাচে শুরু হয়েছে এখন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নানা গুঞ্জন। সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনেও দলের জন্য অনেক প্রার্থীই শ্রম দিয়ে নিজেকে চেনানোর চেষ্টা করেছিলেন। তারা এখন সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এবার মনোনয়ন চাইবেন।
কোন প্রার্থী এবার দলীয় প্রতীক পেয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেবে তা নিয়ে চলছে সাধারণ মানুষদের মাঝে চুল ছেড়া বিশ্লেষন। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ উপজেলা ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা রয়েছেন ১ লাখ ৭৯ হাজারের মত ভোটার।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় দু’টি প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের নিজ নিজ দলের প্রার্থী মাঠে নামানোর প্রস্তুতীর কাজও চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন চারজন প্রার্থী। তারা হলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, পূর্ব জাফলং ইউনিয় পরিষদের একাধিক বারের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হেলাল এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মো. গোলাপ মিয়া।
এদিকে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন চাইবেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুল হাকিম চৌধুরী। তিনি ২০০৯ ও ২০১৪ সালে টানা দুই মেয়াদে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও মনোনয়ন দৌড়ের তালিকায় রয়েছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ শাহ আলম স্বপন ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও লেঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক বারের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুল হক খোকন।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম চৌধুরী জানান, দল তাকে সব সময় মূল্যায়ন করেছে। তিনি টানা দুই মেয়াদে উপজেলার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। তাই দল থেকে মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে উপজেলার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করার পরিকল্পনা করছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হেলাল বলেন, আওয়ামী লীগ বৃহৎ একটি রাজনৈতিক সংগঠন। সব সময় দল থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে মাঠে নামানো হয়। এবার আমি দল থেকে মনোনয়ন চাইবো। আশা করছি, দল আমাকে যোগ্যতা দেখেই মনোনয়ন দেবে। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার পক্ষেই কাজ করবো।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, এর আগেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতা করেছি। এবার দল থেকে মনোনয়ন চাইবো। সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনেও আমি দলের জন্য অনেক শ্রম দিয়েছি। আশা করছি দল থেকে এবার আমাকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার মাঝি হিসেবে ভোটের মাঠে পাঠাবেন।
পূর্ব জাফলং ইউনিয় পরিষদের একাধিক বারের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু জানান, দীর্ঘ দিন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছেন। গত নির্বাচনেও তিনি অংশ গ্রহণ করেছিলেন। এবার দল থেকে তাকে মনোনয়ন দিলে কখনো দলকে তিনি নিরাশ করবেন না।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মো. গোলাপ মিয়া বলেন, ছোট বেলা থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছেন। তিনি এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে চান। তাই দল থেকে তাকে মনোনয়ন দিলে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন বলেন, জনগণ এখন তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চায়। তাছাড়া দলের জন্য তিনি অনেক শ্রম দিয়েছেন। কারাভোগও করেছেন দলের জন্য। সব দিক বিবেচনা করে এবার দল তাকেই মনোনয়ন দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি লুৎফুল হক খোকন বলেন, জনগণ এখন চায় নতুনত্ব। জনগণের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। দল তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে দলের বিজয়ে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবেন।
এছাড়াও তাদের সাথে ভোট যুদ্ধে পাল্লা দিতে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী জাতীয় পার্টির গোয়াইনঘাট উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ। তিনি বলেন, আমি এবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে চাই। তাই সবার সহযোগিতা ও দোয়া প্রত্যাশা করছি।
উল্লেখ্য, বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবুকে প্রায় ১১ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়াও ২০০৯ সালে ফারুক আহমদকে ১৯৬০ ভোটে পরাজিত করেন তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd