বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সুরমা নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিশ্বনাথ উপজেলার মাহতাবপুর, মাধবপুর ও সিলেট সদর উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের মৎস্যজীবীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বুধবার (২৪অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের গুলচন্দ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে ইট-পাটকেলের আঘাতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন লোক আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহতরা হলেন- মাহতাবপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জুয়েল মিয়া (২০), একই গ্রামের শরিফ উদ্দিনের পুত্র ইব্রাহিম আলী (১৮), সমছুল হকের পুত্র জাকির মিয়া (২৬), মাধবপুর গ্রামের মৃত মরম আলীর পুত্র হুসাইন আহমদ (১৩), একই গ্রামের আমির আলীর পুত্র লায়েছ মিয়া (২৫), সমর আলীর পুত্র রিয়াজ উদ্দিন (২৮), মৃত হুসিয়ার আলীর পুত্র গৌছ উদ্দিন (৩৫) ও অটোরিক্সা চালক বারিক মিয়া (৩২)। অন্যান্য আহতদের নাম জানা যায়নি।
জানা গেছে, মাহতাবপুর এলাকায় সুরমা নদীতে মাছ শিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাহতাবপুর ও ফতেহপুর-মাধবপুর গ্রামের মৎস্যজীবীদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় মাহতাবপুর গ্রামের মৎস্যজীবীরা নদীতে মাছ ধরতে গেলে তাদের বাঁধা দেন ফতেহপুর-মাধবপুর গ্রামের মৎস্যজীবীরা। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে উভয় পক্ষে ইট-পাটকেল নিক্ষেক করা হয়। এসময় পুলিশের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে রেহাই পান এলাকাবাসী। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ১০জন লোক আহত হন।
মাহতাবপুর গ্রামের বশির উদ্দিন বলেন, সুরমা নদীর সপ্তম খন্ড (আতাপুর ডহর থেকে মাধবপুর ডহর পর্যন্ত) আমরা মৎস্যজীবীরা বিভিন্ন জাল দিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। কিন্তু একটি প্রভাবশালী মহল তাদের ব্যক্তি স্বার্থে নদীতে কাঁটা-বাঁশ ফেলে রাখে এবং মাছ ধরতে আমাদের নিষেধ করে আসছে। এবিষয়ে আমরা একাধিকবার প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আজ (বুধবার) সকালে আমাদের গ্রামের মৎস্যজীবীরা নদীতে মাছ ধরতে গেলে মাধবপুর গ্রামের মশাহিদ আলী, বাদুল্লাহ, লাল মিয়া ও ফতেহপুর গ্রামের মনু মিয়া, ছৈদুর রহমানের গংরা আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন মৎস্যজীবী আহত হয়েছেন।
মাধবপুর গ্রামের মশাহিদ আলী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, এলাকার নিরীহ দরিদ্র মৎস্যজীবীরা নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্ত বশির মিয়া গংরা নদীতে বাঁশ ফেলে রেখে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে নিষেধ করে আসছেন। আজ (বুধবার) আমরা নদীতে মাছ ধরতে গেলে তারা (বশির) আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন মৎস্যজীবী আহত হয়েছেন।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন- খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
Sharing is caring!