সিলেটে রাস্তায় সন্তান প্রসব কারী নারী মানসিক রোগী : কেউ এগিয়ে আসেনি আসছে পুলিশ

প্রকাশিত: ১:৩৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০১৮

স্টাফ রিপোর্ট :: জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন পেয়ে সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁও এলাকা থেকে এক মানসিক রোগী ও তার সদ্যজাত নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৪ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে তোফায়েল আহমদ  নামে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে রাস্তার পাশে থাকা  নবজাতক ও মানসিক রোগীর কথা জানান পুলিশকে। সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকাল ৩টার দিকে কুমারগাঁওয়ের গ্যাস অফিসের সামনে এক মানসিক রোগী একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্ম দিয়েই ওই মানসিক রোগী রাস্তার দু’পাশে দৌড়াচ্ছিলেন। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযাত্রী দক্ষিণ সুনামগঞ্জের তোফায়েল আহমদের। সঙ্গে সঙ্গে অটোরিকশা থেকে নেমে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। এরমধ্যে ওই নারী দৌড়ে কুমারগাঁও এলাকা ছেড়ে তেমুখিতে চলে যান। আর তখন সদ্য ভূমিষ্ঠ ওই নবজাতক ছেলেকে বসে পাহারা দিচ্ছিলেন তোফায়েল নামে ওই যুবক। এর মধ্যে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে তোফায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলে চলে আসেন সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন তালুকদার। এরপর তারা নবজাতক ও মানসিক রোগী ওই নারীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সন্তান প্রসব করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়াতে ওই মানসিক রোগীর শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে তাকে হাসপাতালে এক ব্যাগ রক্ত দেন দক্ষিণ সুরমা থানার রেকর্ড অফিসার (জিআরও) ইমরান আহমদ।

৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়া তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘সন্তান প্রসব করার পর ওই মানসিক রোগী যে অবস্থায় ছিলেন তা বর্ণনা করার মতো নয়।কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। এরপর পুলিশ এসে সব ব্যবস্থা করে।’

পুলিশ পরিদর্শক সুজন তালুকদার বলেন, ‘জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’ থেকে ফোন করে বিষয়টি থানায় অবহিত করা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা আমাকে জানানো হয়। আমাকে তোফায়েল নামের ওই যুবকের মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। নবজাতক ও মানসিক রোগী ওই মহিলাকে জোর করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বর্তমানে তারা ভালো রয়েছে। ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে কেউ এগিয়ে আসেননি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছে অন্তত ভালো একটি কাজ করতে পেরে।’

সিলেট ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন ‘নবজাতক ছেলেকে ওসমানী হাসপাতালের শিশু বিভাগের ২১নং ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। আর নবজাতকের মা’কে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশুটির মা মানসিক রোগী হওয়াতে প্রথমে চিকিৎসা সেবা দিতে বেশ বেগ পেতে হয় চিকিৎসকদের। বর্তমানে তিনি অনেকটাই সুস্থ আছেন।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

March 2018
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..