সিলেট ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:১৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
আবুল হোসেন : সময়ের সাথে তালমিলিয়ে স্বাস্থ্য সেবায় দেশের সাফল্য অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় প্রতিটি অঙ্গনে যেভাবে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে তেমনি উন্নয়নের একটি বিরাট অংশ দেশের স্বাস্থ্যখ্যাত। সরকারের প্রচেষ্টার সার্থকতা আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃত। স্বাস্থ্যসেবার সাফল্য অনেক দেশের জন্য উদাহরণ। সরকার জনগণের জন্য মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এজন্য প্রয়োজন দেশের হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সেবার উন্নয়ন। সে দিক থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করণে কাজ করে যাচ্ছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার হাতে হাসপাতালের দায়িত্ব ন্যস্ত থাকলেও এখন যেনো পাল্টে গেছে গোঠা হাসপাতালের চেহারা। হাসপাতালটির সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। আর এ সকল অবদানে যিনি কাজ করছেন তিনি হলেন হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একে মাহবুবুল হক। তাঁর হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালের উন্নয়ন কর্মকান্ড।
সিলেট ওসমানী হাসপাতালে কিছু দৃশ্য চোখে পড়ার মতো, আগের তুলনায় এখন আরো বেশি রোগী আউটডোর থেকে ঔষধের গুদামের দিকে যাচ্ছে; সেবা এবং ঔষধ দুটি জিনিসের নিশ্চয়তাই মানুষ পাচ্ছেন। আউটডোরের দরজায় বড় করে সিটিজেন চার্টার টাঙানো। নাগরিক হিসেবে এই হাসপাতাল থেকে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন, তা-ই লেখা রয়েছে এই চার্টারে। আর ইনডোর রোগীদের জন্য শতভাগ ঔষধ সরবরাহের অঙ্গীকারমূলক নোটিশ রয়েছে একটু পরে পরেই।
ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য আছে ২৪ ঘন্টা সক্রিয় সিসি টিভি ক্যামেরা আর স্টাফদের প্রত্যেকের সঠিক ইউনিফরম। দালালের দৌরাত্ব পুরোপুরি নির্মূল না হলেও কমেছে অনেকখানি।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একে মাহবুবুল হক যেগদান করেন চলতি ২০১৭ সালের ৫ মার্চ রোববার। বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে মাহবুবুল হক ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বানছারামপুর থানায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে সরারসরি ক্যাপ্টেন পদে যোগদান করেন। চাকুরীকালীন সময়ে তিনি এমপিএইচ এবং এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। বিগত চাকুরী জীবনে তিনি সেনাবাহিনীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন যার মধ্যে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের অধিনায়ক, ফিল্ড মেডিকেল ইউনিটে অধিনায়ক, সামরিক চিকিৎসা মহাপরিদপ্তরের স্টাফ পদ, আমর্ড ফোসের্স মেডিকেল কলেজ ও এএমসি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে স্টাফ পদ উল্লেখযোগ্য।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব ওকেপি-৫ কুয়েত ও ব্যানব্যাট-৬ সুদানে জাতিসংঘ মিশনে প্রায় সাড়ে ৪ বৎসর কমর্রত ছিলেন। তাছাড়াও তিনি বিজিবি ও ক্যাডেট কলেজের আরএমও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বর্তমান পদবীতে যোগদানের পূর্বে ১৭ পদাতিক ডিভিশন, জালালাবাদ সেনানিবাস সিলেট, অ্যাসিটেন্ট ডাইরেক্টর মিডিকেল সার্ভিসেস (এডিএমএস) হিসেবে এক বৎসর ৬ মাস দায়িত্ব পালন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৩ সন্তানের জনক।
বর্তমানে তিনি ওসমানী হাসপাতালে থাকাকালীন অবস্থায় বিভিন্ন দিক দিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগীদের এবং একই সাথে ডাক্তারদের জন্য একটি চমৎকার স্থান হয়ে উঠেছে। মানুষ হচ্ছে হাসপাতালমুখী, আর ডাক্তাররাও সেবা দিয়ে পাচ্ছেন তৃপ্তি।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যে সকল আমূল পরিবর্তন দেখা যায়, তার মধ্যে রয়েছে- নতুন একটি ওয়ার্ড (২৬ নম্বর পুরুষ মেডিকেল) চালু হয়েছে এবং আরো ২টি ওয়ার্ড (পুরুষ মেডিসিন ও মহিলা সার্জারি) চালু করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় মেরামত কাজ চলছে, কারাবন্দীদের জন্য পৃথক প্রিজন সেল উদ্বোধন করে কার্যক্রম চালু হয়েছে, ২টি পানির পাম্প স্থাপন করে কার্যক্রম চলছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত আইসিইউ ভবনের কার্যক্রম চালু হয়েছে, হাসপাতালের অভ্যন্তরে অবৈধ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড সরানো হয়েছে, স্ক্যানু ইউনিট চালু করার জন্য বিষটি প্রক্রিয়াধীন আছে, হাসপাতালের জন্য কোবাল্ট ৬০, এমআরআই, সিটিস্ক্যান ও লিনিয়র এক্সিলেটর মেশিন প্রাপ্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং মন্ত্রণালয় কর্তৃক ক্রয় কার্যক্রম চলছে, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন রক্ষনাবেক্ষন কাজ বাস্তবায়স সংক্রান্ত কার্যক্রম ই-টেন্ডারিং চলছে। এছাড়াও হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বার্ণ ইউনিট চালু, বহি:বিভাগে টেলিমেডিসিন কার্যক্রম চালু এবং শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশু ওয়ার্ডে (২৩ নম্বর ওয়ার্ড) প্লে কর্ণারের কার্যক্রম চালু ও মোবাইলফোনে সার্বক্ষণিক তথ্য সেবা চালু করা হয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd