সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বাইরে, পরীক্ষা দিচ্ছেন অভিভাবকরা!

প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৭

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট পরই কেন্দ্রের আশেপাশে দলে দলে ভাগ হয়ে কিছু একটা করার ঝটলা চোখে পড়ে। কৌতুহল বশত একটু এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখে সাদা কাগজে উত্তর লিখছেন অভিভাবকরা।
এ যেন ছোট ছোট শিশুদের নয় অভিভাবকদের পরীক্ষা চলছে। অবাক করা বিষয় হলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের নারুচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।

সরেজমিনে রবিবার প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) গণিত পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ওই কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। আর এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

এসময় প্রশ্নপত্র কিভাবে বাইরে আসলো জানতে চাইলে অভিভাবকরা বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতর থেকে প্রশ্নটি মোবাইলের মাধ্যমে ছবি তুলে স্থানীয় কোচিং সেন্টারের পরিচালকরা সরবরাহ করছে। আর সেই প্রশ্ন দেখে সাদা কাগজে উত্তর লেখার পর দায়িত্বরত শিক্ষকদের ম্যানেজ করে শিক্ষার্থীদের কাছ পৌছে দেয়া হচ্ছে। অভিভাবকদের দেওয়া নকল দেখেই পরীক্ষার মূল উত্তরপত্রে লিখছে শিক্ষার্থীরা।

ওই কেন্দ্রে চারটি কোচিং সেন্টার এর ৪৮জন শিক্ষার্থীরা ছাড়াও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৩৯৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

শুধু ওই কেন্দ্রই নয় উপজেলার অনেক কেন্দ্রে পরীক্ষার নামে চলছে নকলের মহোৎসব।
আর প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ঘটনা ঘটলেও যেন দেখার কেউ নেই। এ নিয়ে চরম শঙ্কা তৈরি হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে।

উত্তরপত্র লেখার সময় ব্রাইটার কোচিং সেন্টারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক জানান, ব্রাইটারের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। সুতরাং দায়িত্বের মধ্যেই এই কাজগুলো করতে হচ্ছে। সবাই করছে তাই আমাদের ছেলে-মেয়ের জন্য একটু সহযোগিতা করছি।

তিনি আরো জানান, দায়িত্বরতদের ম্যানেজ করেই মোবাইলে প্রশ্নপত্র তুলে বাহিরে আনতে হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে নারুচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব সাইদুজ্জামান জানান, কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা হচ্ছে।

কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় এই কেন্দ্রে দায়িত্বপালন করা কষ্টের। তবে নকলের কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নপত্র বাহিরে যাওয়ার কোন খবর জানা নেই।

প্রশ্নপত্র বাহিরে ও নকলের মহোৎসবের বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা শারমীন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্টো সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এছাড়া সাংবাদিকরা কিভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছে তাও জানতে চান।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2017
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..