সিলেটে অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে গলাকাটা বাণিজ্য !

প্রকাশিত: ৩:১৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের আনাচে-কানাচে প্রায় সব জায়গায় গড়ে ওঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এক প্রকার প্রায় বলা চলে সিলেটে এখন হাসপাতাল, ক্লিনিকের চেয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যাই বেশী নজরে পড়ে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে সারাদেশে অনুমোদিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ৬ হাজারের মতো হবে। সিলেটে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই বললেই চলে। ফলে অনুমোদনহীন ভাবে প্রতিনিয়তই গড়ে উঠছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর ফলে রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে রোগীদের বাড়তি টাকা-পয়সা খরছের ভোগান্তি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। তবে এ সকল রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের বেশীর ভাগেরই বিরুদ্ধে হর-হামেশা নানান অভিযোগ লক্ষ্য করা যায়।
এদিকে সরকারী বেসরকারী বেশ কিছু হাসপাতাল ঘুরে গত কয়েকদিনে রোগীদের মুখ থেকে জানা গেলো, এই সকল রোগ নিরাময় কেন্দ্র নিয়ে তাদের নানান অভিযোগের কথা। রোগীদের মতে আজ-কাল রোগ সারাতে না যতো টাকা-পয়সা খরছ হয়, তার থেকে বেশী খরছ লেগে যায় সিলেটের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয় করতে। আর ডাক্তারদের কাছে যাওয়া মানেই পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার। মানে বাড়তি কিছু টাকা নিয়ে আসা।
প্যাথলজি পরিক্ষার জন্য সরকারীভাবে কোনো ধরণের নির্ধারিত মূল্য তালিকা না থাকায় রোগীদের কাছ থেকে উচ্চ মূল্য আদায় করছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। এব্যাপারে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী হাসপাতাল সমূহের কথিপয় আইটেমের ওপর ইউজার ফি হার নির্ধারণ সক্রন্ত সরকারী পরিপত্র ও সিলেটের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাথলজি পরিক্ষার মূল্য তালিকা বিশ্লেষন করে এ তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য রোগ নির্ধারিত কোনো মূল্য তালিকা নেই। ‘দ্যা মেডিক্যাল প্র্যাক্টিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’র ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও এ অধ্যাদেশটি বর্তমানে অনেকটাই অকার্যকর রয়েছে। পরবর্তিতে কয়েকবার স্বাস্থ্য সেবার জন্য যুগোপযোগি একটি আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে আইন বা নীতিমালা না থাকায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রোগ নির্ণয়ে ইচ্ছে মতো টাকা-পয়সা নিয়ে থাকে বলে জানান, জনৈক এক কর্মকর্তা।
সিলেট বিভাগের ডায়াগনাস্টিক সেন্টার ঘুরে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, সরকারী হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারী সেন্টারগুলোতে যেকোনো ধরণের পরিক্ষার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বেশী টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। একজন চিকিৎসা প্রযুক্তিবীদ জানান, অনেক ক্ষেত্রে ছোট ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও টেকনোলজিস্ট থাকেনা। ফলে প্রায় সময়ই তারা রোগীদের ভুল রিপোর্ট দিয়ে থাকে। অনেকে আবার নাম করা সেন্টারগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে থাকে, তারা রোগীদের স্যাম্পল (পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা) সংগ্রহ করে অর্ধেক মূল্যে এখান থেকে পরিক্ষা করিয়ে রোগীদের রিপোর্ট দিয়ে থাকে। এর ফলে রোগীদের বেশী মূল্য দিতে হয়। এ ব্যাপারে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর গলাকাটা বাণিজ্য বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসবেন সচেতন মহল তা কামনা করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2017
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..