কুলাউড়ায় আটক জঙ্গিদের মধ্যে আছেন চিকিৎসক ও প্রকৌশলী

প্রকাশিত: ৫:০৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০২৩

কুলাউড়ায় আটক জঙ্গিদের মধ্যে আছেন চিকিৎসক ও প্রকৌশলী

Manual4 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কুলাউড়ার কর্মধায় স্থানীয় জনতার হাতে সোমবার আটক হওয়া জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলার’ ১৭ সদস্যের পরিচয় প্রকাশ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

এর মধ্যে রয়েছেন সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক সোহেল তানজিম। গত ২৬ জুলাই থেকে স্ত্রীসহ নিখোঁজ ছিলেন। এ ছাড়া রয়েছেন চীনে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করা দুই শিক্ষার্থী।

নিখোঁজের বিষয়ে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তানজিমের বাবা। এর আগে ১২ আগস্ট কমর্ধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব টাট্রিউলি গ্রামে একটি জঙ্গি আস্তানা থেকে সোহেল তানজিমের স্ত্রী মাইশা ইসলামকে (২০) আটক করা হয়।

সোহেল তানজিম ছাড়াও আটক ১৭ জনের বাকিরা হলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার জুয়েল মাহমুদ (২৮), পাবনার সাঁথিয়ার আবির হোসেন (২০), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আরিফুল ইসলাম (৩৪), যশোর সদরের মোল্লাপাড়ার ফাহিম খান (১৭), জামালপুরের বকশীগঞ্জের সোলাইমান (১৯), পাবনার আতাইকুলার আল মামুন ইসলাম (২০), রফিকুল ইসলাম (৩৮), কক্সবাজারের রামুর সাদমান আরেফিন ওরফে ফাহিম (২১), ইরতেজা হাসনাত ওরফে লাবিব (১৯), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাহাত ম-ল (২৪), মাদারীপুরের পূর্ব চিরাইপাড়ার মেহেদী হাসান (২৩), সাতক্ষীরার তালার জুয়েল শেখ (২৪), বগুড়ার সারিয়াকান্দির আশিদুল ইসলাম (২৯), পাবনার আতাইকুলার মামুন ইসলাম (১৯), ঝিনাইদহ সদরের ছয়াছিলের তানজিল রানা (২৪) ও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর কোয়েল (২৪)।

Manual5 Ad Code

সরকারি এই টিলাভূমির ৫০ শতক জমি কিনে বসতি স্থাপন করেন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’র সদস্যরা। গত রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পূর্ব টাট্রিউলি এলাকায়।

Manual6 Ad Code

সিটিটিসি জানায়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রাহাত ও মেহেদী হাসান চীনের ইয়াংজু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে মেহেদী এক মাস আগে দেশে ফেরেন। আর রাহাত ফেরেন ১০ দিন আগে।

এদিকে মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দুর্গম কালাপাহাড় এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে গুলি ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে। প্রায় ছয় ঘণ্টার অভিযান শেষে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সিটিটিসিপ্রধান মো. আসাদুজ্জামান স্থানীয় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
সকাল নয়টার দিকে সিটিটিসি, সোয়াত, মৌলভীবাজারের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কুলাউড়া থানার পুলিশের ৬০ সদস্যের দল যৌথভাবে কালাপাহাড় এলাকায় একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করে। আস্তানা শনাক্তের জন্য অভিযানে গতকাল আটক হওয়া জামিল ও রাহাত ম-লকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযান সম্পন্ন করে ফেরার সময় কর্মধার দুর্গম ইছলাছড়া পুঞ্জির মাঠে সিটিটিসিপ্রধান আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে চার ঘণ্টা পাহাড়ি পথ হেঁটে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মেলে। ছড়া, খাল পার হতে হয়েছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে তাঁবু টানিয়ে জঙ্গিরা আস্তানা করেছিলেন। জঙ্গি জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই স্থানে মাটিচাপা অবস্থায় পাঁচ-ছয় কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য ও পিস্তলের ১৪টি গুলি পাওয়া গেছে।

Manual5 Ad Code

আসাদুজ্জামান বলেন, আস্তানাটি নতুন ছিল। আগের আস্তানা পূর্ব টাট্রিউলি থেকে দলের কিছু সদস্যকে সেখানে নিয়ে রাখা হয়েছিল। তারা বেশ কিছুদিন সেখানে ছিলেন। এ পর্যন্ত জঙ্গি সংগঠনটির মোট ৪০ সদস্যকে আটক করা সম্ভব হয়েছে বলে সিটিটিসিপ্রধান জানান।

আটক ১৭ জনের মধ্যে সংগঠনের মূল নেতা ইমাম মাহমুদ আছেন কি না, এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান বলেন, এখনো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

Manual3 Ad Code

এর আগে ১২ আগস্ট সিসিটিসি ও সোয়াত কর্মধার পূর্ব টাট্রিউলি এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইমাম মাহমুদের কাফেলার ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে তিনটি শিশুও ছিল। এর মধ্যে ছিলেন চিকিৎসক সোহেল তানজিমের স্ত্রী মাইশাও।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..