কমলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

প্রকাশিত: ১:৪১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০১৮

Manual2 Ad Code
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পঞ্চগড় জেলায় চা-চাষের পর এবার কমলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাসাবাড়ি ও স্বল্প পরিসরে ছোট ছোট বাগানে আশানুরুপ কমলার ফলন আসায় কৃষকরাও খুশি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এখানে উৎপাদিত কমলার স্বাদ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের কমলার মতো।

বাজারে চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেকে কমলার বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেছেন। এসব বাগানে উৎপাদিত কমলার আকার, রং ও স্বাদ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার কমলার মতো।

জেলার সদর উপজেলার, সাতমেরা, হাফিজাবাদ, হাড়িভাসা, চাকলাহাট ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কমলার বাগান করে লাভবান হয়েছেন। কৃষকদের বাগানে কমলার ফলন ভাল হওয়ায় এসব এলাকায় অনেকে কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। সদর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার ৭৫ হেক্টর জমিতে ৫০টি প্রদর্শনী প্লট ৪২০টি বসতবাড়িতে কমলা চাষ করা হয়েছে।

Manual3 Ad Code

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদা ইউনিয়নের বামনপাড়া গ্রামের কমলার বাগানের মালিক শেফালি বেগম জানান, ৬ বিঘা জমিতে কমলা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। গত বছর ১ (এক) লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছি। এবার ২ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

একই এলাকার কমলার বাগান মালিক হাবিবুন নবী প্রধান বলেন, ২০০৯ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কমলার চারা নিয়েছি। ৩ বছর পর ফল আসে। পর পর তিনবার কমলা বিক্রি করেছি। এবার চতুর্থ বার কমলা বিক্রি করছি। কমলার চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। কমলার বাজার চাহিদা ভাল থাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ বাড়ছে। কমলা বাড়িতে থেকে পাইকাররা নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি হালি কমলা প্রকার ভেদে ৫০/৬০ টাকা হালি (৪টা) বিক্রি হচ্ছে।

কমলার বাগান মালিক মো. সিদ্দিক বলেন, দুই একর জমিতে কমলার চাষ করেছি। গতবার ১ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছি। এবার এরমধ্যে ৬০/৭০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করা হয়েছে। আরো বিক্রি করা হবে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আমরা কমলার বাগান করে লাভবান হয়েছি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে লোকজন কমলার বাগান দেখতে আসে এবং কমলা কিনে নিয়ে যায়।

Manual1 Ad Code

সম্পতি পঞ্চগড়ের বেলকুপাড়া গ্রামের রাজুর কমলা বাগান পরিদর্শন করেছেন, নাটোর জেলার হরটিকালচারের ডেপুটি ডাইরেক্টর মেফতাহুল বারী। তিনি জানান, পঞ্চগড়ের বাগানের কমলা দার্জিলিংয়ের কমলার মতোই। স্বাদ, রং ও গন্ধে অন্যান্য কমলার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। খেয়ে দেখলাম খুব স্বাদ।

Manual7 Ad Code

পঞ্চগড়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুল হক জানান, জেলার মাটিতে অম্লত্ব (পিএইচ) ও আবহাওয়া কমলা চাষের উপযোগী। তাই কৃষি মন্ত্রণালয় ২০০৭ সালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কমলা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। বর্তমানে এ প্রকল্প সাইট্রিস ডেভেল্পমেন্ট প্রজেক্ট বা লেবু জাতীয় ফসল উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে হাতে নেয়া হয়েছে। কমলা আমদানী হ্রাস,আবাদ বৃদ্ধি, পুষ্টি চাহিদা মেটানো ও কৃষকদের বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সামছুল হক আরও জানান, পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ৫০টি প্রদর্শনী প্লটও ৪৫০টি বসতবাড়িতে কমলা চাষ করা হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বেশি। পঞ্চগড়ে কমলার চাষ করে লাভবান হওয়ায় কৃষকরা কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের কমলার চাষের সকল প্রকার উপকরণসহ সহায়তা প্রদান করে আসছে।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..