ছাতকে হাওরে ইঁদুর বাহিনীর তাণ্ডব

প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০

ছাতকে হাওরে ইঁদুর বাহিনীর তাণ্ডব

Manual7 Ad Code

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের ছাতকে হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মানে ১১টি প্রকল্প প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭৮ হাজার ১ শত ৭৯ টাকা বরাদ্দে বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় ৭ টি প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল প্রায় ১ কোটি ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা।

Manual5 Ad Code

চলতি বছর আরো ৪টি প্রকল্প বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দও বেড়েছে। বিগত বছরের নির্মিত বাঁধের কাজে পূর্নরায় প্রকল্প গ্রহন ও একাধিক স্থানে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহন করার অভিযোগও রয়েছে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধ করণসহ মেরামত কাজের প্রকল্প গ্রহন না করায় সংশ্লিষ্ট হাওরের বোরো ফসল অরক্ষিত থাকবে এ আশষ্কা কৃষকদের। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার জাউয়া বাজার ইউনিয়নের ডেকার হাওরের তারাপুর খালের দক্ষিন দিকে প্রায় ২৩০ মিটার ও উত্তর দিকে প্রায় দেড় কিলো মিটার সুরিগাঁও-মগলগাঁও পর্যন্ত চলতি বছর কোন প্রকল্প গ্রহন করা হয়নি। গত বছর তারাপুর খালের দক্ষিনে প্রকল্প গ্রহন করা হলেও চলতি বছর কোন প্রকল্প না থাকায় ফসলহানির শষ্কায় আতষ্কে রয়েছেন কৃষকরা।

Manual7 Ad Code

গত বছর ডেকার হাওরের তারাপুর খাল, কুড়ি বিলের খাড়া, কামার খালী খাল, পণিরডালা ও হুগলির ছড়ায় মোট ৫০৩ মিটার মুখ বন্ধকরণসহ ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধরণ ও মেরামত কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১৭.১২ লক্ষ টাকা। চলতি বছর শুধু তারাপুর খালে ৬২৬ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরণ ও মেরামত কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৪ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫শত ৯২ টাকা। কিন্ত খালের উত্তর ও দক্ষিন দিকের ভাঙ্গাগুলো অরক্ষিত থাকায় চলতি প্রকল্পটিও হাওর রক্ষায় কোন কাজে আসবেনা অভিযোগ কৃষকদের।

Manual5 Ad Code

এদিকে চলতি বছর একই ইউনিয়নের ডেকার হাওর মাছুখাল ৫৩০ মিটার মুখ বন্ধকরণসহ ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধরণ ও মেরামত কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়ছে প্রায় ২৪ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬শত ৩৩ টাকা। গত বছর একই বাঁধে ৪৩০ মিটার কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল প্রায় ২৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। এ ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) সভাপতি আল মামুন শাহীন ও সদস্য সচিব মো. আলী মংলা। গত বছরও কমিটিতে তারা দুজই ছিলেন। বাঁধের কাজে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা, মানা হচ্ছেনা নীতিমালা। ভাল অংশের পুরাতন ঘাস ও মাটি কুড়া হচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ ৪৩০ মিটারের স্থলে ৫৩০ মিটারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ অপ্রয়োজনীয় বরাদ্দের টাকা হজম করার জন্য কৌশল মাত্র। তবে এ পিআইসি কমিটির প্রভাবশালী সভাপতি ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ কৃষকরা।

এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (তারাপুর খাল) সভাপতি রেজাউল করিম ও সদস্য সচিব মো. রানা মিয়া ভূইয়া বলেন, চলিত সপ্তাহে মাটি বরাট বাঁধ ভাঙ্গা বন্ধকরণ কাজ শেষ হবে। নিদ্রিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘাস লাগানোসহ অন্যন্য কাজ আমারা শেষ করা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (মাছুখাল) সভাপতি আল-আমিন শাহীনের মোঠোফোনে যোগাযোগ করে বন্ধ পাওয়া যায়। সদস্য সচিব মো. আলী মংগলার সাথে মোঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ্য জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। বাপাউবো ছাতক পওর শাখার সদস্য সচিব ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভানু জয় দাস বলেন, তারাপুর খালের দক্ষিনে প্রায় ২৩০ মিটার বাঁধে গত বছর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবার ভাল রয়েছে মেরামতের প্রয়োজন নেই। উত্তর দিকে প্রায় সুরিগাঁও-মগলগাঁও পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলো মিটার বাঁধ ভাঙ্গা বন্ধ করা না হলেও হাওরে পানি ডুকার শষ্কা নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাছুখালে এ বছর কাজ কম আছে তাই ১শত মিটার বাড়লেও বরাদ্দ প্রায় সমপরিমান রয়েছে। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইঁদুরের গর্ত বন্ধ করার জন্য পুরাতন অংশের ঘাস ও মাটি কুড়া হচ্ছে।

সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার মাছুখাল ঘুরে দেখা যায়, বাঁধের তিনটি ছোট ভাঙ্গা রয়েছে যা আনুমানিক দেড়শত মিটার হতে পারে। এই ভাঙ্গাগুলোতে মাটি ভরাট প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ঘাস লাগানোসহ স্লোপ ও মাটি কমপেকশন এখনো করা হয়নি। কিন্ত ভাল অংশে ঘাস ও মাটি কুড়ছেন শ্রমিকরা। কেন ভাল অংশের ঘাস ও মাটি কুড়া হচ্ছে কর্মরত শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, অফিসার এমনটা করতে বলেছেন। কিন্ত তারা তাদের নাম পরিচয় বলেননি। তবে এসময় কোথাও ইঁদুরের গর্ত খোঁজে পাওয়া যায়নি।

Manual4 Ad Code

বাপাউবো সুনামগঞ্জ বিভাগ-২ নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2020
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
29  

সর্বশেষ খবর

………………………..