এক প্রেমিককে খুন করলো বাকি ৩ প্রেমিক, প্রেমিকাসহ আটক ৪

প্রকাশিত: ৬:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০

এক প্রেমিককে খুন করলো বাকি ৩ প্রেমিক, প্রেমিকাসহ আটক ৪

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ভৈরবের বাউসমারা গ্রামের বাসিন্দা জামাল (৩৫) হত্যার রহস্য তিনমাস পর উদঘাটন হয়েছে। পুলিশ হত্যায় জড়িত ৪ অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতাররা হলেন- ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার মো. বাচ্চু মিয়ার মেয়ে আয়েশা বেগম আশা (২০), একই এলাকার ভাড়াটিয়া লালমোহন বিশ্বাসের ছেলে টিটু চন্দ্র বিশ্বাস ওরফে পবন (২৬), লক্ষ্মীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে মোক্তার হোসেন (২৮) ও একই এলাকার তারা মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩২)।

Manual4 Ad Code

পুলিশ নিহত জামালের মোবাইলের কল চেকিং করে দীর্ঘ ৮৫ দিন পর খুনিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারের পর সোমবার পুলিশ খবরটি গোপন রাখে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তারা খুনের কথা স্বীকার করে। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আয়েশা বেগম আশা ও টিটু চন্দ্র বিশ্বাস কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক আশিকুর রহমানের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে ওই দু’জনসহ চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। অপর গ্রেফতারকৃত মোক্তার হোসেন ও বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আগামী বুধবার আদালতে রিমান্ডের শুনানি হবে বলে জানায় পুলিশ।

আদালতে জবানবন্দিতে আয়েশা বেগম জানান, টিটু চন্দ্রের সঙ্গে তার দুই বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক ছিল। টিটু ছিল মাদকাসক্ত। প্রেমের সম্পর্কের কারণে প্রায়ই তারা শারীরিক মেলামেশা করত। টিটুর মাধ্যমে মোক্তার ও বাবুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে এ দু’জনের সঙ্গেও সে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। কিন্তু টিটু তার উপার্জনের টাকা জোর করে নিয়ে যেত। এরই মধ্যে এক লোকের মাধ্যমে জামালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। জামাল তাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তার সঙ্গেও সে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। কিন্তু জামালের সঙ্গে মেলামেশা করা টিটু পছন্দ করত না। ঘটনার রাতে টিটুর কথায় সে জামালকে শহরের স্টেডিয়ামের কাছে মোবাইলে ডেকে আনে। এসময় মোক্তার ও বাবুল টিটুর সঙ্গে ছিল। জামাল ঘটনাস্থলে আসার পর তাকে বাসায় চলে যেতে বলে। পরদিন তার মৃত্যুর খবর পায় সে। জামালকে ডেকে আনলেও খুন করেনি বলে জানায় আয়েশা।

Manual4 Ad Code

টিটু চন্দ্র বিশ্বাস তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমি আয়েশাকে ভালোবাসতাম। কিন্তু জামাল আয়েশাকে বিয়ে করতে চায়। তার কারণে আমার প্রেম শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই আয়েশাকে দিয়ে তাকে ঘটনার রাতে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে আনি। সে আসার পর আয়েশাকে বিদায় করে তিনজনে মিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করি। মোক্তার জামালের পুরুষাঙ্গ কেটে আলাদা করে। আমি ও বাবুল মিলে তাকে একাধিক ছুরিকাঘাত করলে সে ঘটনাস্থল আলুকান্দা এলাকায় মারা যায়। পরে তার লাশ কলাবাগানে রেখে আমরা পালিয়ে আসি। জামাল আমাদের পথের কাঁটা হয়ে গিয়েছিল, তাই তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছিলাম রাতের আঁধারে। তাকে হত্যার পরে ঘটনাটি আয়েশাকে জানিয়ে জামালের পুরুষাঙ্গটি তাকে দেখিয়েছি।’

Manual6 Ad Code

গত বছরের ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় ভৈরবের বাউসমারা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এদিন তিনি তার স্ত্রীকে গানের আসরে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে সারারাত বাসায় ফেরেননি। পরদিন পরিবারের সদস্যরা তার মৃত্যুর খবর পায়। পুলিশ খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। পরে তার স্ত্রী বিলকিছ বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন। ঘটনার একমাস পর জামালের চাচাত ভাই ফরহাদকে সন্দেহজনকভাবে পুলিশ গ্রেফতার করে। কারণ ঘটনার দিন ফরহাদ তাকে মোটরসাইকেলে শহরে পৌঁছে দিয়েছিল। বর্তমানে ফরহাদ কারাগারে বন্দি আছে।

ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন জানান, তিন মাস পর হলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক বাহালুল খান বাহার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে হত্যার রহস্য উম্মোচন করেছেন। আসামিদের গ্রেফতার করা ও তাদের স্বীকারোক্তি আদায় করতে পুলিশ অনেকটা কৌশল অবলম্বন করেছে। দেরিতে হলেও এই খুনের রহস্যটি উদঘাটন করেছে পুলিশ। এখন আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2020
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
29  

সর্বশেষ খবর

………………………..