নারী সাংবাদিক শিরিনের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশিত: ১১:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০১৯

নারী সাংবাদিক শিরিনের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়

Manual1 Ad Code

মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে দুইবার ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উৎখাতসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা এবং মৃত্যুর হুমকি দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন নারী সাংবাদিক ও নগরীর নৌবন্দর সংলগ্ন একটি ওষুধের দোকানের মালিক শিরিন খানম (৩০)।

ফেসবুক লাইভের কিছু সময় পরেই ওই নারী সাংবাদিকের মালিকানাধীন শিরিন ফার্মেসীতে তিনি আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পরেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রবিবার দিবাগত রাতে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে আসলে কত্যর্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ওই নারী সাংবাদিকের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকেরা ধারনা করছেন তার শরীরে বিষাক্ত কোন মেডিসিন পুশ করা হয়েছে। তবে শিরিন খানম নিজেই ওই ইনজেকশন পুশ করেছেন না তার শরীরে কৌশলে অন্যকেউ পুশ করেছে তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শিরিনের মৃত্যুর খবর পেয়ে রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল ও মেডিকেল পরিদর্শন করেছেন।

সূত্রমতে, ওই নারী সাংবাদিকের মৃত্যুর পরপরই তার জনপ্রিয় ‘শিরিন খানম’ নামের ফেসবুক আইডিটি ডিঅ্যাক্টিভ হয়ে যায়। এর আগেই সংবাদকর্মীরা তার ফেসবুক লাইভের ভিডিও সংরক্ষণ করেন। ওই ভিডিও চিত্রে শিরিন তার মালিকানাধীন ফার্মেসীটি উৎখাতের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পার্শ্ববর্তী ওষুধ ব্যবসায়ী জনিসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন।

Manual3 Ad Code

ফেসবুক লাইভে তাকে (শিরিন খানম) মেরে ফেলার হুমকি দেয়ার কথাও বলা হয়। এমনকি “শিরিন ফার্মেসী” নামের তার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানটি ছাড়ার জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ বেশ কয়েকজন তাকে চাঁপ প্রয়োগ করেন। আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে তিনি দোকান ছেড়ে না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে। ফেসবুক লাইভে নারী সাংবাদিক শিরিন খানম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জনি ও তার বউ, কয়েস মিয়া, রনি, মারুফ এবং তার এক বন্ধু আলো আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেষ করে দিলো। অনেক অনুরোধ করেও দোকানটি রক্ষা করতে পারলামনা। আমি বিচারের ভার জনগনের উপর দিয়ে গেলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিরিন খানমের ফেসবুক লাইভের কথপোকথনে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ কয়েক ব্যবসায়ী ফেঁসে যেতে পারেন। তাই তার (শিরিন) মৃত্যুর পর ফেসবুক আইডি বন্ধ করে সেই কথপোকথন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকের ধারণা শিরিনের মৃত্যুর সাথে সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেউ নিয়ে ফেসবুক আইডিটি বন্ধ করে দিয়েছে। এনিয়ে পুলিশের তৎপরতা শুরু হলে রাতেই ওই আইডিটি পূর্ণরায় সচল করা হয়। শিরিন আক্তার নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুনের স্ত্রী।

শেবাচিম হাসপাতালের পুলিশের ইনচার্জ এসআই নাজমুল হুদা জানান, শিরিন খানমের মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে তার লাশ নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে লাশের সুরাতাল রিপোর্টের জন্য প্রথমে আটকে রেখে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

Manual7 Ad Code

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে শিরিন খানমের মৃত্যুর কারণ হিসেবে পুলিশ বেশ কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে। বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রির্পোট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। পাশাপাশি শিরিনের মৃত্যুর পর পরই তার ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Manual7 Ad Code

উল্লেখ্য, শিরিন খানম স্থানীয় পত্রিকায় লেখালেখির পাশাপাশি “আজকের ক্রাইম নিউজ” নামের একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। তার ওই নিউজপোর্টালের পাঠক বৃদ্ধির জন্য শিরিনের জনপ্রিয় ফেসবুক আইডি একই নিউজপোর্টালের অংশিদার মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন তালুকদার লিটনও অপারেট করতেন এবং আইডি পাসওয়ার্ড সম্পর্কে তিনিও অবগত ছিলেন।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..