নগরীর উপশহরে আবারও রাস্তার পাশে মাছ বাজার

প্রকাশিত: ৭:২৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০১৯

নগরীর উপশহরে আবারও রাস্তার পাশে মাছ বাজার

Manual7 Ad Code

সিলেট নগরীর অভিজাত আবাসিক এলাকা হিসেবে খ্যাত শাহজালাল উপশহর। কিন্তু এই এলাকার প্রবেশমুখ থেকে শুরু করে পুরো এলাকায় গড়ে উঠেছে দোকানপাট। প্রধান রাস্তার দু’পাশের ফুটপাত দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে মাছ-সবজি বাজার। আর এ দোকানগুলো এখন স্থায়ীভাবে রূপ নিয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র উচ্ছেদ অভিযান চালালেও ফের দখলে চলে গেছে ফুটপাত। দুপুরে উচ্ছেদ করলে সন্ধ্যায় আবার দখলে চলে যায়। কোন অবস্থায় উপশহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ফুটপাত ও রাস্তা হকারমুক্ত করার দাবি করেছেন ওয়ার্ডবাসী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ক্ষমতাসীন দল, কাউন্সিলর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নেন। এ কারণেই উচ্ছেদের কয়েক ঘণ্টা পর হকাররা আবার ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্থানীয় নেতা ও পুলিশের মদদপুষ্ট চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফুটপাত দখলমুক্ত করা সম্ভব হবে না।

Manual3 Ad Code

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপশহর এলাকায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে বড় বড় দালান কোটা ছাড়াও রাস্তার দুই পাশ দখল করে ভাসমান দোকান। ফুটপাত ছাপিয়ে রাস্তায় চলে আসা এসব অবৈধ ভাসমান দোকানে বিক্রি হচ্ছে সবজি, মাছ ও ফলমূল। রাস্তায় পড়ে আছে মাছের পানি ও সবজির ময়লা স্তুুপ। দেখে মনে হয়, আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা ভাসমান দোকানগুলো যেন কোনো গ্রামীণ হাট। এতে বাতাসে চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

Manual2 Ad Code

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার পাশে মাছের বাজারে এলাকার পরিবেশ দূষিত হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না সিটি করপোরেশ। তারা বলছেন, স্থানীয় কাউন্সিলারের মদদে ফুটপাত দখল হয়েছে। প্রতিদিন ফুটপাত থেকে নিজস্ব লোকের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করা হয়। তবে এ অভিযোগটি উড়িয়ে দিয়ে সিসিকের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এডভোকেট ছালেহ আহমদ সেলিম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, উপশহর হলো অভিজাত আবাসিক এলাকা। এই ওয়ার্ডের সৌন্দর্য্য রক্ষাসহ সমস্যাগুলো আমি মনিটরিং করে পরবর্তীতে অ্যাকশনে যাচ্ছি। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে গড়ে উঠা অবৈধ দোকান ও মাছের বাজার বসানোর সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপশহর পয়েন্ট হোটেল রোজ ভিউ’র সামনে থেকে সোনারপাড়া, শিবগঞ্জ পয়েন্ট পর্যন্ত প্রধান সড়কের দু’পাশে প্রায় দুই শতাধিক বিক্রেতা মাছ, সবজি, ফল বিক্রি করছেন। পাশাপাশি রয়েছে চা স্টল, পান-সিগারেট ও চটপটি ফুচকা’র দোকান। মাছবাজারের ময়লা-আবর্জনায় রাস্তার দুই পাশের অনেক ড্রেন বন্ধ হয়ে আছে। বৃষ্টি হলে মাছের পানি ও ময়লার স্তুুপে রাস্তা সয়লাব হয়ে যায়। উপশহর মেইন রোডের ডি ব্ল­কে অবস্থিত একটি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ। এরই পাশের প্রধান সড়কের কাছে ছোট্ট খালি জায়গায় গড়ে উঠেছে মাছের বাজার। এখানে প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান রয়েছেন। দুপুর হলেই জমজমাট হয়ে উঠে মিনি এ বাজার। মাছের পানি ও রক্তের দুর্গন্ধে এই পথে দিয়ে চলা দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তার পাশে অবৈধ মাছের বাজারের কারণে প্রতিদিন স্কুল ছুটি শেষে বাসায় ফিরতে শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় দুর্ভোগে।

Manual5 Ad Code

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মৎস্য বিক্রেতা ‘ বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় কিংবা সপ্তাহে স্থানীয় কিছু যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাদের চাঁদা দিতে হয়। তাছাড়া প্রতিদিন টাহল পুলিশ, ফাঁড়ি পুলিশকে দোকান প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা দিতে হয়। আর টাকা না দিলে বসতে দেওয়া হয় না বলে ওই ব্যবসায়ী জানান।

Manual4 Ad Code

এ প্রসঙ্গে শাহপরান থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তার পাশে মাছের দোকান বসছে। অনেক সময় পুলিশ দোকানিদের উচ্ছেদ করলেও পুলিশ যাওয়ার পর তারা আবার সেখানে বসে যায়। তবে পুলিশের কোনো সদস্য চাঁদা তোলার সঙ্গে জড়িত নন জানিয়ে ওসি বলেন, এরকম অভিযোগ পেলে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র-দৈনিক জালালাবাদ

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..