নগরীতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

প্রকাশিত: ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৯

নগরীতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

Manual4 Ad Code

আর মাত্র হাতে গোনা দশ দিন পরই আসছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর। এই ঈদ কে সামনে রেখে এখন সিলেট নগরীর বিপনী বিতানগুলো রয়েছে ক্রেতা দের উপচে পড়া ভিড়। পছন্দের জিনসটি কিনতে দামদর করছেন প্রায় সবাই। সেই সাথে নগরীরর বিপনী বিতানগুলো বর্ণিল সাজে সেজেছে।

নগরীর বিভিন্ন শপিংমল, দেশীয় শোরুম ও দর্জিপাড়া গুলোতে রঙবেরঙের আলোকসজ্জা আর দেশি ও বিদেশি পণ্যের চোখ ধাঁধানো পোশাক ক্রেতাদের নজর কেড়েছে। ভারত, দুবাই, ইতালি, পাকিস্তান, চায়না ও দেশীয় কারুকাজ করা বিভিন্ন পণ্যেও পাওয়া যাচ্ছে অনেক দোকানে। সব মিলিয়ে ভালই জমে উঠেছে সিলেটের ঈদ বাজার। এদিকে, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারা আয়োজন করেছেন র্যা ফেল ড্র এর। এতে লটারীর মাধ্যমে ক্রেতাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় সব পুরষ্কার।

সিলেটের নামী-দামী বিপনী বিতানগুলির পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলিতেও নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। নিম্ন আয়ের মানুষরা ভীড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের এসব দোকানগুলোতে। সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায় সিলেটের সিলেট নগরীর অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র আল-হামরা, শুকরিয়া, সিটি সেন্টার, প্লাজা, মধুবন, মিলিনিয়াম, মানরু, ব্লু ওয়াটার, হাসান মার্কেট, কাজি ম্যানসন, মনিপুরী শোরুম, আড়ং, শী, মাহা, মাম্মী, বুনয়ন, কাশিস, মনোরম, মেগাবাজার, কুশিয়ারা, নাজরানায় ক্রেতাদের ভিড় ল্য করার মত। আর দর্জিপাড়ায় শৈলী টেইলার্স, সানমুন টেইলার্স, জননী টেইলার্স, অপরূপা টেইলার্স, মা টেইলার্স, সৈকত টেইলার্স, রেইনবো টেইলার্স, আহমদ ফেব্রিক্স টেইলার্স ও অঙ্গরাজ টেইলার্স, বিপণন এসব প্রতিষ্টানে গ্রাহকদের ভিড় লেগেই আছে। অনেক সচেতন ক্রেতারা বলেন, সিলেটের ঈদ বাজার ভারতীয় পণ্যে সয়লাভ হয়ে গেছে। এবার তুলনামূলত ভাবে কাপড়ের দাম অনেক বেশি। আনরেডি থ্রিপিছ, রেডিমেড থ্রিপিছ গুলোতে অনেক বেশি দাম হাকানো হচ্ছে। এবারের ঈদ বাজারে বিদেশী পণ্যের মধ্যে ভারতের পরেই রয়েছে চায়না, থাইল্যান্ড, জাপানি ও ইতালির পণ্য। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিনই আসছে হরেক রকমের বাহারি নাম ও ডিজাইনের বিদেশী কাপড়। ভারতীয় কাপড়ের মধ্যে অধিক পরিমাণে রয়েছে রেডিমেড পোশাক, শাড়ি, কাটাকাপড়, মেয়েদের হরেক নাম ও ডিজাইনের বাহারি পোশাক আনা হয়েছে।

Manual3 Ad Code

এছাড়া রয়েছে কসমেটিক এবং ইমিটেশন অলংকারও। এসব ভারতীয় পণ্য চোরাই পথে আসছে বলে আনেকে দাবি করেন। স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে বাজারের এই চিত্র পাওয়া গেছে। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, মাপে সঠিক, মিহিন সেলাই, ভালো ফিনিশিং হওয়ায় ক্রেতারা দেশীয় কাপড়ের চেয়ে ভারতীয় কাপড় কিনতেই বেশি আগ্রহী।

এছাড়া ক্রেতাদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে তারা দোকানে সালোয়ার-কামিজ, লেহেঙ্গা, থ্রি-পিসেরেে ত্রও ক্রেতারা ভারতীয় কাপড়কেই বরাবরই সবাই প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এদিকে নগরীর বিপণী বিতান ও দেশি শোরুম গুলোতে দেশীয় পোশাক ছাড়াও বিদেশি পোশাক নজর কেড়েছে ক্রেতাদের। এদের মধ্যে ইন্ডিয়ান, পাকিস্তান, দুবাই ও দেশীয় আমদানি করা বাহারি কারুকাজের নান্দনিক ডিজাইনের শাড়ি নারীদের বেশ আকৃষ্ট করেছে। আর এই ভিন্ন আঙ্গিকের শাড়িগুলো হলো- মসলিন, জামদানি, টাঙ্গাইল, তশর, কাতান সিল্ক, সিপন কাতান, অপেরা কাতান, জর্জেট কাতান, ব্লক, বেনারশি কাতান, জুট কাতান এবং নেট ছাড়াও বিভিন্ন রকমের শাড়ি । জামদানি ৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা, ব্লক ১২শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা, মসলিন ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা, টাঙ্গাইল ৮শ’ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, সিল্ক ২হাজার থেকে ২০হাজার টাকা, তশর ২হাজার থেকে ১৫হাজার টাকা, জুট কাতান ৫হাজার থেকে ৯হাজার টাকা, অপেরা কাতান ১১হাজার ৫শ’ টাকা, জর্জেট কাতান ৭হাজার থেকে ১৭হাজার টাকা এবং বেনারশি কাতান সাড়ে ৭হাজার থেকে ১৬হাজার টাকা। রুচিশীল পোশাকের মধ্যে বিদেশি ও দেশীয় পোশাকগুলো হলো, লং স্টাইল, ফরপিস, টু পিস, আনার কলি, কাশিশ, মাশাককলি, বুটিকস পোশাক বেশ নজর কেড়েছে সবার। এগুলো মধ্যে বিদেশি পোশাকের দাম হচ্ছে ১৯শ’ থেকে ১৮হাজার টাকা পর্যন্ত। আর দেশি পোশাকগুলোর মূল্য ৫শ’ থেকে ৩২শ’ টাকা পর্যন্ত। ছেলেদের শার্ট নিম্নে সাড়ে ৫শ’ টাকা থেকে ২হাজার টাকা, প্যান্ট ৭২০টাকা থেকে ১৮৫০টাকা, ফতুয়া ৮শ’ থেকে ১৬৫০টাকা, পাঞ্চাবি ১২শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৪হাজার টাকা, সেরোয়ানি ২হাজার থেকে সাড়ে ১৪হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পোশাকের সাথে মানানসই জুয়েলারি সামগ্রীর দিকে ক্রেতাদের কোন কমতি ছিলো না ক্রয় করতে।

Manual7 Ad Code

নগরীর শুকরিয়া মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ফাতেমাতুজ জহুরা বলেন , ‘রোজার শেষ দিকে মার্কেটগুলোতে ভীড় থাকে। শেষ সময়ে কাপড়ের দোকানগুলোতে পছন্দের কাপড় হয়ত নাও থাকতে পারে। তাই আগে ভাগেই পোষাক কিনতে আসা।’ এছাড়া এবার ঈদে অনেক প্রবাসী দেশে ঈদ করতে আসবেন তাই দেশী ক্রেতাদের পাশাপাশি প্রবাসীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ও রেডিমেট পোষাকের দোকানগুলো অন্যরকম ভাবে সেজেছে। অনেক ব্যবসায়িরা বলেন, অন্যান্য ঈদের চেয়ে এবারের ঈদে তাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি বলে জানান। ঈদ উৎসবে পোষাকের সঙ্গে পর নারীদের পছন্দেরও তালিকায় রয়েছে কসমেটিকস ও ইমিটেশন জুয়েলারির গয়নার প্রতি। সেদিকেই ল্য রেখে নগরীর জুয়েলরি দোকানগুলোকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে।

Manual1 Ad Code

পোষাকের দোকানের পাশাপাশি নগরীরর জুয়েলারি দোকানগুলোতেও ভীড় বাড়তে শুরু করেছে। নগরজুড়ে দেখা যায়, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দোকানগুলোতে ব্যস্ত সময় কাটছে বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের । বিপণী বিতান ও দর্জি পাড়ার ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এই বছর ক্রেতারা বেশ কেনাকাটায় নিশ্বাস নিতে পারছে। রাজনৈতিক সহিংসতায় গত বছর বাজার তেমন একটা ধরেনি। কিন্তু এবছর রোজার শুরুর আগ থেকেই ক্রেতারা রুচিশীল পোশাক যাচাই বাছাই করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি কিনে নিচ্ছে পছন্দের পোশাকটি।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..