সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০১৯
দুলাভাইয়ের দেয়া ২০০ টাকা দিয়ে পুলিশে আবেদন করি। যেদিন পুলিশ লাইন্সে দাঁড়াব সেদিন অন্যের বাড়িতে কাজ করে ২০০ টাকা এনে দেন মা। ওই টাকা নিয়ে নাটোরে গিয়ে পুলিশ লাইন্সে দাঁড়াই আমি।
এরপর শারীরিক, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। এখন চাকরি পাওয়ার পর মনে হচ্ছে মায়ের ২০০ টাকাই আমার জন্য আর্শীবাদ। চোখে আনন্দ অশ্রু আর শত কষ্ট ছাপিয়ে এভাবে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের হতদরিদ্র জবদুল প্রামাণিকের মেয়ে সাদিয়া সুলতানা।
জানা যায়, সিংড়ার প্রত্যন্ত এলাকা পাকুরিয়া গ্রাম। গ্রামের মাটির ঘরে বেড়ে ওঠা সাদিয়া সুলতানার। সাদিয়ার বাবার দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর ঘরে সাদিয়ার মাসহ পাঁচজনের বসবাস। সাদিয়ার বাবা দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। খোঁজ রাখেন না তাদের। মা হাজেরা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার আর সাদিয়ার পড়াশোনার খরচ চলে। সাদিয়া চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। চার বোনের মধ্যে সাদিয়া সবার ছোট।
সাদিয়া সুলতানার মা হাজেরা বেগম বলেন, যখন পুলিশ নিয়োগের সার্কুলার দেয়া হয় তখন আমার বড় মেয়ের জামাই ইসমাইল হোসেন ফোনে সাদিয়াকে আবেদন করতে বলেন। সাদিয়া তখন আবেদন করতে চায় না। তার দুলাভাইকে বলে টাকা ছাড়া চাকরি হবে না, শুধু শুধু আবেদন করে কী লাভ। তারপরও দুলাভাইয়ের কথা অনুযায়ী সাদিয়া ২০০ টাকা নিয়ে আবেদন করে। পরে লাইনে দাঁড়ালে তার চাকরিটা হয়। আমার বিশ্বাস হয়েছে টাকা ছাড়া সরকারি চাকরি হয়।
পুলিশের কনস্টেবল পদে আগে থেকে বিনা টাকায় নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। মাত্র ১০০ টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়া যাবে পুলিশের এমন ঘোষণার পর অনেকে বিষয়টি হাস্যকর বলেছেন। কিন্তু বিনা টাকায় চাকরি দিয়ে সে কথা রেখেছেন পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd