সিলেটে আদালত চত্বরে আইনজীবী ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০১৯

সিলেটে আদালত চত্বরে আইনজীবী ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত

সিলেটে একটি মামলার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বিবাদী পক্ষের দুই আইনজীবীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য আদালতে যাওয়া বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিলেট ব্যুরো চিফ মকসুদ আহমদকেও লাঞ্ছিত করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে।

জানা যায়, গত এপ্রিল মাসের ১ তারিখে সিলেটের মইয়ারচরে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মামাতো ভাইদের দ্বারা নিজের উপর হামলার অভিযোগ আনেন আইনজীবী বুরহান উদ্দিন। তার উপর হামলার অভিযোগে নিজ মামাতো ভাইসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে ঘটনার ৬ দিন পর জালালাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলা দায়েরের পাশপাশি এডভোকেট বুরহান উদ্দিন সিলেট আইনজীবী সমিতিকে বিষয়টি অবগত করেন। এমতাবস্থায় আসামিগণ উচ্চ আদালত থেকে জামিন গ্রহণ করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধি কয়েকজন আইনজীবীর মধ্যস্থতায় ঘটনাটির মীমাংসা ও সমঝোতার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা করলেও বাদী বুরহান উদ্দিন এ ব্যাপারে কোনো সাড়া দেননি।

এমতাবস্থায়, গত সোমবার সিলেট মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। এ সময় বিবাদী পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হন এডভোকেট রেজাউল করিম। তার সহযোগিতায় ছিলেন এডভোকেট মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী ও এডভোকেট একরামুল হাসান শিরু। বাদী পক্ষের আইনজীবীদের হট্টগোলের মধ্যে শুরু হওয়া শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

শুনানি শেষে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা এজলাস কক্ষ ত্যাগ করার সময় বাদী পক্ষের আইনজীবীরা বিবাদী পক্ষে দাঁড়ানোর অভিযোগে এডভোকেট মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী ও এডভোকেট একরামুল হাসান শিরুর উপর চড়াও হন। এ সময় আদালত চত্বরে হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়। এতে বাদী পক্ষের আইনজীবীদের হামলায় এডভোকেট মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী ও এডভোকেট একরামুল হাসান শিরু আহত হন।

এ ব্যাপারে এডভোকেট মাছুম বিল্লাহ জানান, ঘটনার দিন সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট রেজাউল করিম বিবাদীপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। তাঁর সহযোগিতায় আদালতে শুনানিতে আমিও অংশ নিই। শুনানি শেষে আমরা যখন এজলাস ত্যাগ করছিলাম, তখন বাদীপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী অতর্কিতে আমার উপর হামলা চালায়। এ সময় আমাকে রক্ষা করতে গেলে আমার সহকর্মী এডভোকেট একরামুল হাসান শিরুকেও লাঞ্ছিত করেন তারা।

তিনি আরো বলেন, আইনগত সহায়তা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এ থেকে বিরত রাখার নির্দেশ কেউ দিতে পারে না। কিন্তু বিবাদীদের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় আমাদের উপর হামলা চালানো হয়, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়। আমরা এ ব্যাপারে আইনজীবী সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি সমিতি এ ব্যাপারে সঠিক বিচার করবে।

এ ব্যাপারে সিলেট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হোসেন আহমদ জানান, হামলার মতো কিছু ঘটেনি। একটি জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের সাথে বাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে আমরা উভয়পক্ষকে নিবৃত করি। পরবর্তীতে কার্যকরী কমিটির সভায় দুই আইনজীবীর সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।

তিনি আরো জানান, মামলাটির বাদী একজন আইনজীবী। তার উপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মবিরতিসহ কর্মসূচি পালন করা হয় আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে। তবে কাউকে বিবাদী পক্ষে নিযুক্ত হতে নিষেধ করা হয়নি।

ঘটনার সময় উপস্থিত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সিলেট ব্যুরো চীফ মকসুদ আহমদ জানান, আমি আদালত চত্বরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত ছিলাম। আইনজীবীদের হট্টগোল শুনে এগিয়ে গেলে কয়েকজন আইনজীবী আমার উপর চড়াও হন। এ সময় সিনিয়র আইনজীবীরা তাদের নিবৃত করেন।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..