মৌলভীবাজারের শীর্ষ ইয়াবা বিক্রেতার মৃত্যুতে মিষ্টি বিতরণ

প্রকাশিত: ১১:৪৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০১৯

মৌলভীবাজারের শীর্ষ ইয়াবা বিক্রেতার মৃত্যুতে মিষ্টি বিতরণ

Manual8 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পুলিশের খাতায় ১২টি মাদক মামলা ছিল, এমনকি মরার পরেও লাশের পকেটে মিলেছে ৩১০ পিস ইয়াবা। মৌলভীবাজারের শীর্ষ ইয়াবা বিক্রেতা মুহিবুর রহমান জিতু (২৬) শনিবার দুপুরে জেলার রায়শ্রী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

জানা গেছে, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে পরে পুলিশ গুলি চালায়। পরে জিতুকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। তার মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে মিষ্টি বিতরণ করে এলাকাবাসী। জনমনে নেমে আসে স্বস্তি। জেলার রায়শ্রী, চাদনীঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।

Manual7 Ad Code

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের প্রশংসার পাশাপাশি তার পেছনে থেকে যারা রাজনৈতিক প্রশ্রয় দিত তাদেরকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন জেলাবাসী।

জানা গেছে, ইয়াবা বিক্রেতা জিতু ছিল খুব হিংস্র প্রকৃতির। জেলায় ইয়াবা বিস্তারে সে ছিল প্রথম সারিতে। জিতু নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা দাবি করে প্রভাব বিস্তার করত এবং ছাত্রলীগের অনেক নেতার সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমিন জানান, সে কখন কি পরিচয় দিত জানি না তবে সে ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে ছিল না। এ ছাড়া আমার জানা মতে কোনোদিন তাকে ছাত্রলীগের কোনো কর্মকাণ্ডে দেখিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইয়াবায় আসক্ত এক ছেলের বাবা জানান, আমার ছেলে মেধাবী ছিল কিন্তু জিতুর পাল্লায় পড়ে সে ইয়াবায় আসক্ত হয়। তার কারণে আমার পরিবার ধ্বংস হয়েছে আল্লাহ তার বিচার করেছেন।

স্থানীয় সমাজকর্মী মাহমুদ এইচ খান জানান, জিতু নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা দাবি করত এবং সে বিভিন্ন সময় সরকার দলীয় বিভিন্ন নেতাদের আশ্রয়ে নিত। সে মূলত যখন যে দিকে গেলে নিজের লাভ বা প্রভাব বাড়বে সেদিকেই যেত। যার কারণে ভয়ে কেউ কিছু বলত না। তার কারণে যুব সমাজ ধ্বংস হয়েছে। প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায় এবং এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ভিপি মিজানুর রহমান জানান, আমার কাছে প্রায়ই উপজেলা পরিষদে তার নামে নালিশ আসত। আমরা বারবার প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলতাম, সে কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছে কিন্তু কিভাবে যেন জামিন পেয়ে যেত! সে খুব খারাপ লোক ছিল সেটা নিশ্চিত, তবে তাকে নিশ্চই কেউ প্রশ্রয় দিত না। যারা তাকে সুযোগ দিত তাদের মুখোশ উন্মোচন করা উচিত।

আদর মাদকাশক্ত চিকিৎসা পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক নিখিল তালুকদার জানান, আজকের মৌলভীবাজারে ইয়াবা বিস্তারের পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল জিতুর। হাজার হাজার যুবকের জীবন ধ্বংস করেছে। মৌলভীবাজার পুলিশকে ধন্যবাদ দেই এবং তার পাশাপাশি এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে আশা করি।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম জানান, নিহত জিতু জেলার সবচেয়ে বড় মাদক বিক্রেতা। তার বিরুদ্ধে ১০/১২টি মাদক মামলা এবং একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। জিতু খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ ছিল। সে হিংস্র ছিল বলেই তাকে ধরতে গেলে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে।

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা জিতু ছিল জেলার ইয়াবার গড ফাদার। ৩ মাস আগেও সে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় কিন্তু প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় বারবার সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যেত।

Manual8 Ad Code

শনিবার রায়শ্রী এলাকায় জিতু এবং শিফন সদর উপজেলার রায়শ্রী এলাকার একটি আস্তানায় অবস্থান করছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল তাদের ঘেরাও করে। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এতে এসআইসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে মাদক বিক্রেতা জিতু গুরুতর আহত হন, অন্যরা পালিয়ে যান।

পরে তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে মাদকসহ অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মুহিবুর রহমান জিতু বিরাইমাবাদ এলাকার ফরকিত উল্লার ছেলে।

Manual8 Ad Code

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই মুবিন উল্লাহ, কনস্টেবল দবির আহমদ ও সোহেল মিয়া।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

April 2019
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..