নগরীর রাস্তা দখল করে অবৈধ ‘গাড়ি স্ট্যান্ড’: ভোগান্তিতে নগরবাসী

প্রকাশিত: ১০:৪৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯

নগরীর রাস্তা দখল করে অবৈধ ‘গাড়ি স্ট্যান্ড’: ভোগান্তিতে নগরবাসী

মো. আজমল আলী :: সিলেট নগরীর রাস্তা প্রশস্তকরণ করেও যানজট থেকে মুক্তি মিলছে না। বরং রাস্তা প্রশন্তকরণের পরপরই সেটি দখলের মহোৎসব চলছে। আর এই মহোৎসবের কারনে ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন নগরবাসী। সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও তার শাসন ব্যবস্থায় সিলেটের দীর্ঘদিনের লালিত এই সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর আগে একইভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানও। ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে জনপ্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা না রাখায় সিলেট নগর জঞ্জালমুক্ত হচ্ছে না।

এদিকে- সিলেট নগরীতে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের পক্ষ থেকে কোর্ট পয়েন্ট সহ কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে সেটি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন সূত্র।

সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকা। ওই স্থাপিত ওভারব্রিজ এমনিতেই ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষের পথের কাঁটায় পরিণত হয়েছে। তার উপর কোর্ট পয়েন্টের পুরোটাই এখন পরিণত হয়েছে গাড়ি স্ট্যান্ডে। সিএনজি ও লেগুনা স্ট্যান্ডের কারণে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোর্ট পয়েন্টের যানজট কমে না। আর বিকেল হলেই ওই এলাকায় বাড়ে অবৈধ হকারদের উৎপাত। ফলে কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় রাস্তার পরিধি ব্যাপক থাকলেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমছে না। সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে- নগরীর কোর্ট পয়েন্টকে জঞ্জালমুক্ত করতে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে স্থাপিত ওভারব্রিজ নগরীর হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্কয়ার কিংবা কদমতলী এলাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে- এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ কারণে সেটি সরানো সম্ভব হচ্ছে না। আর কোর্ট পয়েন্টের জঞ্জাল দূর করতে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে মেয়র মৌখিক সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন- কোর্ট পয়েন্টে যে অস্থায়ী গাড়ি স্ট্যান্ড রয়েছে সেখানে সব সময় ১০টি লেগুনা ও ২৫ টি সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়াতে পারবে। এর বেশি যানবাহন সেখানে থাকতে পারবে না। এছাড়া তাদের দাঁড়িয়ে থাকার সীমানাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকরা সিটি করপোরেশনের সেই নির্দেশেরও তোয়াক্কা করছেন না। তারা পুরো এলাকা দখলে নিয়ে কোর্ট পয়েন্টকে যানজটের ভাগাড়ে পরিণত করেছেন। এতে করে যানজট লেগেই আছে। রমজান শুরু পর থেকে কোর্ট পয়েন্ট পথচারীদের কাছে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যানজটের অন্যতম কারণ নগরীর ধোপাদিঘীর পাড় এলাকার অবৈধ স্ট্যান্ড। শিশুপার্ক স্থাপনের আগে ধোপাদিঘীর পাড়ে এক সময় তামাবিল-জৈন্তাপুর সড়কের বাসস্ট্যান্ড ছিল। পরবর্তীতে সেটি সরিয়ে শিবগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে- ধোপাদিঘীর পাড় থেকে অনুরাগের গলি মোড় পর্যন্ত রাস্তা গেলো দেড় দশক ধরে মুক্ত করা যাচ্ছে না। এটি ছিল মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড। এখনো সেই স্ট্যান্ড আছে। তার উপর এসে যুক্ত হয়েছে লেগুনা ও সিএনজি। কয়েকশ’ লেগুনা ও সিএনজি দখল করে নিয়ে ধোপাদিঘীর পাড় থেকে জেলরোড গলির মুখ পর্যন্ত এলাকা। রাস্তায় যাত্রী উঠানামা করার কারণে সবসময় ওই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি সময়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে মেয়রের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এরপরও স্বস্তি মিলছে না। নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রতিনিধিরাই এখনই কোনো বিতর্কে জড়াতে চান না। এদিকে- নগরীর আম্বরখানা এলাকায় রাস্তা দখল করে স্ট্যান্ড বসানোর কারণে যানজট কমছে না। সঙ্গে ওই রুটে চলছে ট্রাকও। দিনের বেলা ট্রাক চলাচলের নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে ট্রাফিক ম্যানেজ করেই চলছে ট্রাক। এতে করে যানজট কমছে না।

এব্যাপারে যানজট থেকে মুক্তি পেতে ভোক্তভোগীরা সরকার ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের আশু পদক্ষেপ ও দ্রæততর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2019
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
232425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..