সিলেট ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৫০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার :: দেশের শীর্ষ পর্যটন কেন্দ্র ও পরিবেশ সংরক্ষিত এলাকা সবুজ-শ্যামল জাফলং। পরিবেশ ও প্রকৃতির ষোড়শী কন্যা বলে খ্যাত জাফলংকে খাবলে খাচ্ছে পাথরখেকো ও ভূমিখাদক নামের একশ্রেণির দস্যুরা। ফলে বাস্তুহারা হয়ে চলেছেন সেই প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ের নয়াবস্তি ও কান্দুবস্তি গ্রামের অসহায় ও দরিদ্র অনেক পরিবার। বৃহৎ বৃহৎ ও গভীরতর গর্ত করে পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে এসব অসহায় মানুষদের বসতবাড়ি উচ্ছেদে মেতে ওঠেছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা ও হোতারা। এ উচ্ছেদ কর্মে ক্ষমতাসীন নেতাদের সাথে জড়িত স্থানীয় পুলিশ প্রশান ও জনপ্রশাসন।
এই এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনের উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও পাথর খেকোদের হিংস থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছে কৃষকদের ফসলী জমি ও খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক নির্দশন মন্দিরের জুমটিও। গর্ত করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের প্রতিবাদ করতে কেউই সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলে মামলা, হামলা দিয়ে তাদের নাজেহাল করা হয়। খুম গুমের নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেয়া হয় তাদের। মানুষের বসতভিটে গর্ত করে পাথর উত্তোলন করে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রক্ষক নামের এসব ভক্ষকরা।
এছাড়াও ওই পাথরদস্যু চক্র খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ে’র নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে অবৈধ পন্থায় উত্তোলিত পাথর বোঝাই হাজার-হাজার ট্রাক ও ট্রলি থেকে রসিদ ছাড়াই হাজার টাকা করে রয়েলটি (সরকারী রাজেস্ব) নামে প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে ।
রয়েলটি নামে উত্তোলিত এই টাকার একটি অংশ ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ ও প্রভাবশালী নেতা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড, ওসির পকেটে যায় বলেও অভিযোগে প্রকাশ।
স্থানীয় জনতার আহাজারিতে বৃহস্পতিবার গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল’র নেতৃত্বে জাফলংয়ের মন্দিরের জুম এলাকায় নামমাত্র টাস্কফোর্সের এক আইওয়াশ অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে মন্দিরের জুম এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি গর্ত থেকে পাথর উত্তোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং মন্দিরের জুম এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি পাথর উত্তোলনের গর্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গর্তগুলো থেকে পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু অভিযান শেষ হলেই আবারো শুরু হয়ে যায় গর্ত খোদাই ও পাথর উত্তোলন।
এলাকার অসহায় মানুষজন তাদের পৈত্রিক ভিটে-বাড়ি রক্ষাসহ প্রকৃতিকন্যা জাফলং রক্ষায় পরিবেশবান্ধব বর্তমান সরকারের উর্ধিতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ ও দ্রুততর পদক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশপাশি তারা স্থানীয় প্রশাসনে থাকা পরিবেশ শত্রæ কর্তা-ব্যক্তিদের দ্রুত অপসারন-সহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd