সিলেট ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:১৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০১৮
মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারো সিলেট-২ আসনে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নেই। এ আসনে মহাজেটের প্রার্থী হয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া।
তাঁর সঙ্গে বর্তমানে ভোটের মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ আরো আটজন। প্রার্থীরা প্রতিদিন ভোটারের দ্বারে দ্বারে ভোট ভিক্ষা চাচ্ছেন।
সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে মহাজোট প্রার্থী এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ৮ ডিসেম্বর রাতে এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরীর দায়েরকৃত অভিযোগের আপিল শুনানি হয়। এতে নির্বাচন কমিশন দীর্ঘক্ষণ আপিল শুনানি শেষে বিএনপির প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন এবং এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরীর দায়েরকৃত অভিযোগ খারিজ করে দেন।
কিন্তু, মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে লুনার প্রার্থিতা স্থগিত করেছেন আদালত। এই আদেশের বিপক্ষে লুনা হাইকোর্টে আপিল করলে সেটিও গত মঙ্গলবার খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। ফলে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না ইলিয়াসপত্নী লুনা। এতে নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েন লুনা। ফলে এ আসনের অন্য প্রার্থীরা এখন ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। তাঁদের মুখে হাসির ঝিলিক। তবে প্রচার মাঠে ধানের শীষ প্রতীক না থাকায় অনেক প্রার্থী মর্মাহত হয়েছেন বলে তারা জানান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে এবার ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এঁরা হলেন মহাজোটের প্রার্থী কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব বর্তমান সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া (লাঙ্গল), গণফোরামের মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), খেলাফত মজলিসের মুনতাছির আলী (দেয়াল ঘড়ি), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মুশাহিদ খান (টেলিভিশন), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মনোয়ার হোসেন (আম), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আমির উদ্দিন (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ডাব), ড. এনামুল হক সরদার (সিংহ) ও আবদুর রব মল্লিক (কার)।
নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন এখন সরব। প্রার্থীরা যেন ভোটের মাঠে কোমর বেঁধে নেমেছেন। তাঁরা এখন প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠকে ব্যস্ত। প্রচারণাকালে অনেকের মুখে এখন হাসির ঝিলিক। প্রার্থীদের সঙ্গে থাকা অনুসারীদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যায়। ধানের শীষ প্রতীক না থাকায় বিএনপির ভোট ব্যাংকে অন্য প্রার্থীদের চোখ পড়েছে। যদি ধানের শীষ প্রতীক শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে না থাকে তাহলে বিএনপি কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেয় সেটা কেবল দেখার বিষয়।
তবে বর্তমানে ভোটের মাঠে থাকা অধিকাংশ প্রার্থীই বিএনপির ভোটের প্রতি নজর রয়েছে। তারা বিএনপির ভোট কৌশলে আদায় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অনেকেই ধারণা করছেন।
এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা আমির উদ্দিন বলেন, একজন বড় প্রার্থী বিএনপির তাহসিনা রুশদীর লুনা হঠাৎ মাঠ থেকে ছিটকে পড়াটা খুবই দুঃখজনক। তাঁর প্রতি সহানুভুতি ছাড়া আর কিছুই করার নেই।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. এনামুল হক সরদার বলেন, মহাজোট প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ ও হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট আমার পক্ষে রায় দিয়েছেন। ফলে এখন আমি নির্বাচনী মাঠে রয়েছি। তিনি বলেন, ধানের শীষ প্রতীক যদি নির্বাচনী মাঠ থাকত, তাহলে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হতো। জনগণ যাকে পছন্দ হতো তাকে তারা বেছে নিত। প্রার্থীরা সবাই যদি মাঠে থাকেন এবং এর মধ্যে কেউ ছিটকে পড়েন স্বাভাবিকভাবে তাঁর প্রতি সহানুভূতি থাকবে।
খেলাফত মজলিস প্রাথী মুনতাছির আলী বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনার প্রার্থিতা স্থগিত হওয়ায় মর্মাহত। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এতে আমি বিস্মিত। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। যারা এসব মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত তাদেরকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তারা ২৩ দলীয় ঐক্যফ্রন্টের বন্ধনকে দুর্বল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মহাজোট প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়াসহ অন্য কয়েকজন প্রার্থী সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd