সিলেট ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:১৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনের দিনক্ষণ। আর মাত্র কয়েক দিন পরই হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠান। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেটে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। জনসভা, মিছিল, মিটিং ও গণসংযোগের মাধ্যমে প্রার্থীরা ভোটারদের ধারে ধারে ঘুরছেন। নগরীসহ বিভিন্ন পাড়া গায়ের ছোট্ট গ্রামের মেটো পথ আর পাড়া-মহল্লায় ছেয়ে গেছে নির্বাচনি পোস্টার, ব্যানারে। রিকশা, অটোরিকশায় করে নানান ধরনের ¯েøাগানে মুখর প্রার্থীদের প্রচারণা।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে মোট ১১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ›দ্বীতা করছেন। এসকল আসনের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন সরকার দলীয় প্রার্থীরা।
সিলেট-১ আসনে রয়েছেন ১০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ড. একে আব্দুল মোমেনের (নৌকা প্রতীক)-এর প্রচারণা রয়েছে এগিয়ে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে বিএনপির খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের (ধানের শিষ প্রতীক)-এর প্রচারণা। এছাড়া মাহবুবুর রহমান চৌধুরী (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রেদওয়ানুল হক চৌধুরী (হাতপাখা), ইসলামী ঐক্যজোটের (আইওজে) মুহম্মদ ফয়জুল হক (মিনার), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইউসুফ আহমদ (আম), বাংলাদেশের বিপ¬বী ওয়ার্কার্স পার্টির উজ্জল রায় (কোদাল), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের প্রণব জ্যোতি পাল (মই), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মো. আনোয়ার উদ্দিন বুরহানাবাদী (হারিকেন), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মাওলানা নাসির উদ্দিন (বটগাছ) প্রতীক নিয়ে প্রচারণা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।
সিলেট-২ আসনে মোট দশজন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপির তাহসীনা রুশদীর লুনা (ধানের শিষ), মহাজোটের ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া (লাঙল), খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাছির আলী (দেয়ালঘড়ি), গণফোরামের মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আমির উদ্দিন (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মনোয়ার হোসাইন (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মো. মোশাহিদ খান (টেলিভিশন)। এছাড়া স্বতন্ত্র পার্থী হিসেবে আইনজীবী আব্দুর রব মল্লিক (কার) অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদার (সিংহ) ও মুহিবুর রহমান (ডাব) প্রতীকে নির্বাচন করবেন। এ আসনে কম বেশ সকলেইকাজ করছেন বিজয়ের লক্ষে।
সিলেট-৩ আসনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী (ধানের শিষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এমএ মতিন বাদশা (হাতপাখা), জাতীয় পার্টির মো. উছমান আলী (লাঙল), খেলাফত মজলিসের মো. দিলওয়ার হোসাইন (দেয়ালঘড়ি) ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের হাফিজ মাওলানা আতিকুর রহমান (রিকশা)। এ আসনটিতে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দেয়ালঘড়ি প্রতীকে খেলাফত মজলিসের মো. দিলওয়ার হোসাইন। অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে এখনো জোরালো প্রচারণা শুরু হয়নি।
সিলেট-৪ আসনে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। এ আসনের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তা উপজেলার সর্বত্র ধানের শিষ প্রতীকে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির দিলদার হোসেন সেলিম। প্রতিদিনই করছে জনসভা ও গনসংযোগ। তার সাথে প্রচারণায় পিছিয়ে নেই নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদও। এ আসনে আরো রয়েছেন জাতীয় পার্টির আহমেদ তাজ উদ্দিন তাহ রহমান (লাঙল), বাংলাদেশ বিপ¬বী ওয়ার্কার্স পার্টির মনোজ কুমার সেন (কোদাল) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জিল্লুর রহমান (হাতপাখা)।
সিলেট-৫ আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট আটজন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। সকল প্রার্থীরাই চালাচ্ছেন তাদের নির্বাচনি কার্যক্রম। তবে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন-আওয়ামী লীগের হাফিজ আহমদ মজুমদার (নৌকা) ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উবায়দুল্লাহ ফারুক (ধানের শিষ)। জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিনও (লাঙল) প্রতীক নিয়ে জনসমর্থন আদায়ে মরিয়া। এছাড়া রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নুরুল আমিন (হাতপাখা), গণফোরামের বাহার উদ্দিন আল রাজী (উদীয়মান সূর্য), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মো. শহিদ আহমদ চৌধুরী (হারিকেন), ইসলামী ঐক্যজোটের এমএ মতিন চৌধুরী (মিনার) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল মুনীর চৌধুরী (সিংহ)।
সিলেট-৬ আসনে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা), বিএনপির ফয়সল আহমদ চৌধুরী (ধানের শিষ), এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আজমল হোসেন (হাতপাখা)। এ আসন থেকে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের শমসের মবিন চৌধুরী। তার প্রতীক ছিল কুলা। শমসের মবিন নির্বাচনে থাকায় অনেকটাই বেকায়দায় ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু মবিনের প্রার্থীতা প্রত্যাহারে ভোটের পাল্লা ভারি হচ্ছে। তবে প্রচারণায় পিছিয়ে নেই কেউই।
সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার মোট ১১৬ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলার ৬টি আসনে রয়েছেন ৪২জন প্রার্থী, সুনামগঞ্জ জেলার ৫টি আসেন ৩২জন প্রার্থী, মৌলভীবাজার জেলার ৪টি আসনে ১৯জন প্রার্থী এবং হবিগঞ্জ জেলার ৪টি আসনে ২৩জন প্রার্থী।
এ বিভাগের চার জেলায় মোট ভোটার রয়েছেন ৬৬ লাখ ২২ হাজার ৬২৯জন। সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৩১৭ জন, মৌলভীবাজারের চারটি আসনে রয়েছেন মোট ভোটার ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭১ জন, সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি আসনে মোট ভোটার ১৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭ জন এবং হবিগঞ্জ জেলার চারটি আসনে ভোটার রয়েছেন ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৪ জন।
এই বিপুল সংখ্যক ভোটারদের মন জয় করে সমর্থন আদায়ে প্রার্থীরা এখন মরিয়া। শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হতে অবলম্বন করছেন নানান কৌশল। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক পেয়েই প্রার্থীরা সিলেট বিভাগের ১৯টি সংসদীয় আসনে ৪০টি উপজেলা, একটি সিটি কর্পোরেশন, ১৯ পৌরসভা ও ৩৩৮টি ইউনিয়নজুড়ে শুরু হয় প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের দৌঁড়ঝাপ। তবে এবার হিসেব নিকেশ করে ভোট করবেন ভোটাররা। তাই শেষ হাসিটা কার, দেখার অপেক্ষায় সবাই।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd