হরিপুরে সুপারির ভালো ফলন, জমজমাট কেনাবেচা

প্রকাশিত: ৭:০০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০১৮

হরিপুরে সুপারির ভালো ফলন, জমজমাট কেনাবেচা

আমির হোসেন সাগর, জৈন্তাপুর থেকে ফিরে :: সিলেটের জৈন্তাপুর বাজারসহ উপজেলার সবক’টি হাট-বাজারে চলছে সুপারির বেচাকেনা। হরিপুরে এমন কোনো বাড়ি নেই, যেখানে সুপারি গাছ নেই। বাড়ির আঙিনা, ক্ষেতের আইল, রাস্তার পাশ, পুকুর পাড়থ সর্বত্রই সুপারির গাছ। উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নের সুপারি ফলে ভালো। প্রতি ভি (৪৪০টি) সুপারি ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার তাদের সুপারির ফলন হয়েছে খুবই বেশি।

স্থানীয় ভাষায় সুপারিকে গুয়া বলা হয়ে থাকে। এর হিসাব-নিকাশটাও একটু ভিন্ন। ১১টি সুপারি একত্রে এক ঘা এবং ৪০ ঘাতে এক ভি। স্থানভেদে এর ভিন্নতাও আছে। মৌসুমি ফসল হলেও বছরের প্রায় সব সময়ই হরিপুরের সুপারি সরবরাহ করা হয় দেশের সর্বত্র। সিলেটসহ পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ নানা জেলায় হরিপুরের সুপারির চাহিদা রয়েছে। মানের দিক থেকে হরিপুরের সুপারি অন্য যে কোনো জেলার চেয়ে ভালো।

মাঘ মাস পর্যন্ত এ অঞ্চলে চলে সুপারির জমজমাট কেনাবেচা। জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজারে প্রচুর সুপারি বিকিকিনি হয়। সপ্তাহে দুই দিন হরিপুর বাজার, মঙ্গলবার বাজারে সুপারি ক্রয় করে বড় হাটে বিক্রি করে থাকেন। অনেক বেপারী তাদের স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে সুপারি বাগান অগ্রিম কিনে রাখেন।

উৎপাদিত সুপারি রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজিবি কর্তৃক আটক হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হরিপুরের সুপারি চাষী ও ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি রংপুরের কুড়িগ্রামে চালানের সময় প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার সুপারি ভারতীয় সুপারি বলে আটক করে বিজিবি। পর-পর সুপারির চালান আটক হওয়ায় সুপারি ব্যবসায়ীরা চালান বন্ধ করে দেন। এতে লক্ষ-লক্ষ টাকার সুপারি চালানের অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে গুদামে। অপরদিকে সুপারি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করে দেওয়ায় মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন সুপারি চাষিরাও। বাজারে এনে সুপারি বিক্রয় করতে না পেরে আবার বাড়িতে ফেরত নিতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় সুপারি চাষিরা। হরিপুর থেকে ক্রয়কৃত সুপারি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর সময় বিজিবি কর্তৃক ভারতীয় সুপারি বলে অবৈধভাবে আটক করার প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

হরিপুর বাজারের সুপারি ব্যবসায়ীরা জানান সিরাজ উদ্দিন, মজিদ উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, বাবুল আহম,জসিম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবেদককে জানান, বৈধভাবে সুপারি ক্রয় করে দেশের অন্যান্য স্থানে চালান করলে এটা কিভাবে ভারতীয় হয়। বর্তমান মৌসুমে প্রায় সবক’টি বাজারের টোল আদায়ের প্রধান উৎস সুপারি। সুপারি ব্যবসা বন্ধ থাকলে ব্যবসায়ী, ইজারাদারসহ হাজার-হাজার শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তারা সুপারি ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সংশ্লিষ্ট সকলের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বাজারে সুপারি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকলে আমাদের ইজারা মূল্য পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।

সুপারি চাষিরা বলেন উৎপাদিত সুপারি হরিপুর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে না পাঠালে এলাকার সুপারি চাষীরা পথে বসতে হবে। তারা আরো বলেন- সুপারি চালানের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2018
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..