সিলেট ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সিলেট বিভাগের মানুষের কাছে অন্যতম একটি চিকিৎসা কেন্দ্র। দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা অভিযোগ দেখা যায়। তবে এবার একজন সিনিয়র স্টাফ নার্সকে নিয়ে খোদ হাসপাতালের ভেতরেই চলছে নানা গুঞ্জন। রেখা বণিক নামক এই নার্সকে নিয়েও অভিযোগের কমতি নেই অন্যান্য নার্স বা স্টাফদের মধ্যে।
নানা অনিয়ম, চাঁদাবাজি, ঘুষবাণিজ্য, নির্যাতন-নিপীড়নে সীমা ছাড়িয়েছেন তিনি। হাসপাতালে যোগদানের পর অদৃশ্য কারণে তিনি সহযোগীদের নিয়ে গড়ে তোলেন একটি শক্তিধর ‘চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট।’
তবে পরবর্তীকালে জানা গেছে রেখা বণিক বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে এ সব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের বদলের সাথে সাথে তার রাজনৈতিক নেতারাও বদলে যান। এছাড়াও ওসমানী হাসপাতালের সাবেক এক উর্ধতন কর্মকর্তার সাথেও তার গভীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল এবং এখনো রয়েছে। রেখা বণিক স্থানীয় নির্দেশে অঘোষিতভাবে বর্তমানে মেডিকেলের স্টাফ কেবিনের অর্থাৎ ১৮ নং ওয়ার্ড ইনচর্জ। একই সাথে ভারপাপ্ত সুপারভাইজার-এর দায়িত্বও পালন করছেন। কিন্তু তিনি এ সকল দায়িত্ব এড়িয়ে সব সময় সেবা তত্বাবধায়কের কক্ষে সময় কাটান। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় স্টাফ নার্সদের রাত্রিকালীন (নাইট ডিউটি) না দেয়ার জন্য হাসপাতালের ঊর্ধবতন চিকিৎসকদের পরামর্শ রয়েছে। তা সত্বেও রেখা বণিক ওই সকল নার্সদের নাইট ডিউটি থেকে ছাড় দিতে তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। না হলে অসহায় অবস্থায় গর্ভকালেও নার্সদের নাইট ডিউটি করতে হয়।
এ সকল তথ্য জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা জানান, স্টাফনার্স হলেও দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে রাত্রিকালীন দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি তাকে। নার্সদের মধ্যে যারা তার অনুগত তাদেরকে ভাল ও পছন্দমতো জায়গায় ডিউটি বন্টণ করে দেন তিনি।
পদবীতে নার্স বা সেবিকা হলেও বাহ্যত তিনি একজন মেডিকেল অফিসার। সাদা ও অলিখিত কাগজে স্বাক্ষর আদায় ধর্তব্য অপরাধ হলেও রেখারানীর কাছে তা’ অধর্তব্য। প্রায়ই তিনি সাদাকাগজে হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের স্বাক্ষর নিয়ে ইচ্ছেমতো ও ব্যক্তিস্বার্থে তা ব্যবহার করে থাকেন। স্বাক্ষর দানে অপরগতা প্রকাশ করলে নেমে আসে শাস্তির খড়গ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নার্স জানান, নতুন পোষাক (ইউনিফর্ম) বানানোর নামে নার্সপ্রতি তাদের কাছ থেকে ১৬শ’ টাকা করে আদায় করেন। কিন্তু নার্সরা শেষ পর্যন্ত পোষাকই পায়নি। এব্যাপারে নার্সরা হয়রানী ও চাকুরী হারানোর ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না বলে সংশি¬ষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সেবিকা রেখা রাণী বণিকের গ্রামের বাড়ি নেয়াখালী জেলায়। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবিকা পদে কর্মরত রয়েছেন। ২০০৫ সালে বিয়ে করেন শেখর বনিক নামের এক ব্যক্তিকে। কিন্তু ৭০লাখ টাকা আত্মসাত মামলায় তার স্বামী পলাতক ও দীর্ঘ আত্মগোপনে থাকায় বিয়ের পর থেকে বাহ্যত তিনি নি:সঙ্গ ও নি:সন্তান দিনযাপন করে আসছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-হোতা ও নামধারী কিছু সাংবাদিকের সাথে তার রনয়েছে গভীর সখ্যত্ াআর এ কারণেই পদে সেবিকা হয়েও রেখা রাণী বনিক কার্যত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রভাবশালী মেডিকের অফিসার।
ওসমানী হাসপাতালের নার্স রেখা বণিকের হাত থেকে রক্ষা পেতে নাম নির্যাতিত ও নিপীড়িত সেবিকারা সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে সেবিকা রেখা রাণী বনিক সাংবাদিকদের কাছে তার বিরুদ্ধে আনীত অন্যায়, অনাচার, আত্মসাত, ঘুষ বানিজ্য ও চাঁদাবাজির সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd