জৈন্তাপুরে সংঘর্ষে আহত ৫০, পুলিশ-বিজিবি’র অপসারণের দাবীতে সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ৬:০২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০১৭

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি : সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর (শ্রীপুর, আসামপাড়া, খড়মপুর) কোয়ারীর দখলকে কেন্দ্র করে সকাল ১১টায় পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই গ্র“পের মোখামুখি অবস্থান নেয়। এসময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে অবস্থান করলেও তাৎক্ষনিক কোনো প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে দু’গ্র“পের সংঘর্ষে প্রায় ৫০জন আহত হয়েছে।

এদিকে, দুপুর দেড়টার দিকে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ ও শ্রীপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবীতে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে কামাল গ্র“পের লোকজন।

জানা যায়, শ্রীপুর পাথর কোয়ারী দখল নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমদ ও সাধারন সম্পাদক লিয়াকত আলীর লোকজন বেশ কয়েকদিন থেকে কোয়ারীর পাথর উত্তোলন করা নিয়ে একে অন্যের প্রতি দোষারুপ করে আসছে। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পতির লক্ষ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে পড়লে সংঘর্ষ এড়াতে রোববার সকাল ১১টায় ১৪৪ ধারা জারি করে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষের লোকজন পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সকাল ১১টায় মধ্যেই কোয়ারীতে নেমে পড়ে। একে অন্যের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় আহত হয় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক ও ব্যবসায়ী।

আহতরা হলেন- উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ফারুক আহমদ, আনোয়ার হোসেন, সারমিন, হোসাইন আহমদ, নজরুল মিয়া, অহিদ মিয়া, আব্বাস মিয়া, আমিন আহমদ, কালা মিয়া, দেলোয়ার, আব্দুর রশিদ, গোপাল, মোস্তাক আহমদ, সালেহ আহমদ, আমিন উদ্দিন, মোহন মিয়া, তাজ উদ্দিন, আব্দুল খালেক, জমশেদ মিয়া, আব্দরি রহিম, আকবর আলী, আব্দুস শুকুর, বাহার, আখলাকুল আম্বিয়া, সাজিদুর রহমান, নুর উদ্দিন, আব্দুন নুর। অন্যদের নাম জানা যায়নি। গুরুত্বর আহদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অন্যদিকে, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শ্রীপুর, আসামপাড়া, খড়মপুর পাথর কোয়ারীর মালিকানা দাবীদার কামাল আহমদ বলেন, আমার মলিকানা ভূমি চিহ্নিত করার জন্য ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত দাবী জানাই, প্রশাসন মাঠ জরিপ করার পরেও অবৈধ ভাবে দখলদার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় টিলিভিশনে প্রকাশিত পাথর খেকো ভুমি দখলকারী লিয়াকত আলী ও ফয়েজ আহমদ বাবরের নেতৃত্বে আমার খরিদা ভুমি হতে পুলিশ ও বিজিবির সহযোগিতায় এস্কেভেটর, পে-লোডার ও শ্রমিক ব্যবহারের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করে আসছে।

রোববার সকালে কোয়ারীতে লামার পর পরই লিয়াকত গ্র“পের অনুসারীদের নেতৃত্বে পুলিশ বিজিবির সম্মুখে লাঠিয়াল বাহিনী আমার সদস্যদের উপর হামলা চালায় এবং পাথর কোয়ারী তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়। এ ঘটনার সুষ্ট বিচারের দাবীতে দুপুর ১টায় হতে জৈন্তাপুর বাজার, দরবস্ত বাজার এবং হরিপুর বাজরে সিলেট তামাবিল মহাসড়কে অবরোধ করে রাখে।

জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইন-চার্জসহ সকল কর্মকর্তাদের এবং শ্রীপুর বিজিবির সকল সদস্যদের অপসারনের দাবী জানিয়ে অবরোধ অব্যাহৃত রাখে।

অপরদিকে, লিয়াকত গ্র“পের একাধিক সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু বলেতে রাজি হননি শুধু জানান, লিডার এবিষয়ে বলবেন আপনারা লিডারের সাথে যোগাযোগ করেন। লিয়াকত আলীর একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি তবে কোয়ারীর লীজ গ্রহীতা বলে দাবী করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরীন করিম জানান, যোগদানের পর থেকে কোয়ারীর বিরুধ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের সাথে উপজেলা পরিষদে কয়েক দফা বৈঠক করেছি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়।

কোয়ারী এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বার্থে এবং সাধারণ শ্রমিকদের জান মালের নিরাপত্তার জন্য শ্রীপুর এলাকায় ১৪৪ধারা জারী করা হয় এবং উভয় পক্ষের লোকজন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়ে। যারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..