সরজমিনে ঘুরে এলাকাবাসী ও নিহত সোনিয়ার ভগ্নিপতি আঃ মান্নান জানায়, বুধবার সকালে প্রশব ব্যাথা নিয়ে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মোঃ উজ্জল মিয়ার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (১৯) রয়েল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে আসে। হসপিটালের কর্তব্যরত ডাক্তার এম শরীফ আহম্মেদ প্রাথমিক ভাবে সোনিয়া আক্তারকে একটি আল্ট্রাসনোগ্রাফী ও একটি রক্ত পরীক্ষা দেয়।
তার পর তিনি রোগির স্বজনদের জানান, মা ও গর্ভের সন্তান উভয়ই ভাল আছে। তবে স্বাভাবিক ভাবে বচ্চার প্রশব হবে না। সিজার এর মাধ্যমে বাচ্চা প্রশব করাতে হবে। এ কথা বলেই কর্তব্যরত ডাক্তার এম শরীফ ও তার সহযোগীরা সোনিয়াকে অপারেশন থিয়োটারে নিয়ে যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক পর অপারেশন থিয়োটার থেকে ডাক্তার এসে সোনিয়ার ভগ্নিপতি আঃ মান্নানকে একটি নবজাতাক দিয়ে বলে বচ্চাটি অসুস্থ্য কান্না করে না। আপনারা জরুরি ভিত্তিতে নবজাতক’কে দেবিদ্বারে একটি শিশু ডাক্তার দেখান।
তখন তারা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নবজাতক’কে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।
পরে প্রায় ২ ঘন্টা পর রয়েল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ডাক্তার শরীফ নিজেই একটি এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে আমাদের ফোনের মাধ্যমে জানান, আমরা সোনিয়াকে নিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপালে যাচ্ছি।
তখন সোনিয়ার ভগ্নিপতি আঃ মান্নান দেবিদ্বার থেকে ঐ এ্যাম্বুলেন্সে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপালে যায়, পরে মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত ডাক্তার সোনিয়াকে মৃত ঘোষনা করে। এ সময় ডাক্তার এম শরীফ আহম্মেদ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাল থেকে পালিয়ে যায়।
সোনিয়া ও তার নবজাতকের মৃত্যুর খবর শুনে এলাকার উৎসুক জনতা রয়েল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ঘেরাও করে এবং হসপিটালের কিছু অংশ ভাংচুর করে। এসময় হসপিটাল এবং ভর্তিকৃত রোগীদের ফেলে ডাক্তার, নার্স ও কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে হসপিটালের কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তার এম শরীফ আহম্মেদ এর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
নিহত সোনিয়ার ভাই রাজন এই প্রতিনিধিকে জানান, রয়েল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ডাক্তার ভুল অপারেশন করে আমার সুস্থ্য বোন ও তার গর্ভের নবজাতক’কে মেরে ফেলেছে। আমরা তার সুষ্ঠ বিচার চাই।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এস আই যুযুৎসু যশ চাকমা সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সোনিয়া ও নবজাতকের লাশের শোরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তিনি নিহত সোনিয়া ও নবজাতকের ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পেরণ করে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আবু মোঃ শাহজাহান কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এই প্রতিনিধিকে জানান, এই ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।