সিলেট ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৭
ক্রাইম ডেস্ক : ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল হতে তার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। তখন হতে সে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মেলামেশা করে আসছে। পাশাপাশি মেসে থাকার সুবাধে বিয়ের প্রভলন দেখিয়ে সে আমাকে নিজ স্ত্রীর মত ব্যবহার করত। এভাবেই অভিযোগ করছিলেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাকে স্বামী দাবি করা এক তরুনী।
তরুনীর নাম সুমি আক্তার। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার উমানন্দপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের মুনসুর আলীর একমাত্র মেয়ে। শনিবার বিকেল হতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন অফিসার মোঃ আতাউর রহমান কে স্বামী দাবি করে সে অনশণ শুরু করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সুমি আক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে পড়া অবস্থায় একই উপজেলার মধুপুর বাকারা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আতাউর রহমানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সম্পর্ক অনেক গভীরে পৌছায়। সে সময়ে বিয়ের কথা বললে আতাউর রহমান কৌশলে এড়িয়ে যেত। আতাউর রহামান একই কলেজের ছাত্র। পাশাপাশি মেসে থাকার সুবাধে আতাউর রহমান বিয়ের প্রভলন দেখিয়ে তাকে নিজ স্ত্রীর মত ব্যবহার করত। সুমি আক্তারের দাবি আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গভীর হওয়ার পরেও অন্য মেয়েকে বিয়ে করে ঠকিয়েছে।
এইসব অভিযোগ নিয়ে গত ২৯ আগষ্ট ২০১৭ ইং তারিখে মিথ্যা প্রভোলন দেখিয়ে জাল নিকাহ নামার মাধ্যমে বিবাহ করে আমাকে ভোগ করেছে মর্মে উপ-পরিচালক রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস এর নিকট ডাকযোগে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়. ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল হতে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। তখন হতে সে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মেলামেশা করে আসছে। আতাউর কে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে বলে বিয়ে করব কিন্তু শর্ত থাকবে যে আমার চাকরি না হওয়া পর্যন্ত প্রকাশ করা যাবে না। চাকুরী হলেই বাড়ীতে নিয়ে আসবো। তার কথা মত আমিও রাজি হই। এই কথা হবার পর সে আবার মেলামেশার প্রস্তাব দেয় তখন বিয়ের কথা তুলে ধরে যে আমাকে বিয়ে করে মেলামেশা করে তখন সে হুমকি প্রদান করে। বিভিন্ন ধরনের বাজে ছেলেদের ভয় দেখায় তাদের হাতে তুলে দিতে চাই। এভাবেই সে মেলামেশা করত।
গত ৫-২-২০১৪ তারিখে ছাত্রী নিবাস হতে বাড়ী আসবো শুনে আতাউর আমাকে বলে আমিও বাড়ী যাব আমার রুমে আসো একসাথে যাব। আমি যেতে না চাইলে একই ভাবে ভয় ভীতি দেখায়। আমি বাধ্য হয়ে কুড়িগ্রাম মুমু ছাত্রাবাসে যাই। আমি রুমে প্রবেশ করা মাত্রই আতাউর রহমান তালাবন্ধ করে বাইরে চলে যাই। সে নিজের মোবাইল ও আমার মোবাইল নিয়ে বন্ধ করে রাখে। সন্ধ্যার পর রুমে আসলে আমি অনেক কান্নাকটি করে পায়ে পরে আকুতি করি ছেড়ে দিতে। কিন্তু সে অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে যদি কথা বলো তাহলে জবাই করে বস্তায় ঢুকিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেব। তখন আমি কোন কথা বলতে পারিনি।
সেদিন রাত আনুমানিক রাত ৮ টার দিকে তিনজন ছেলে ও একজন হুজুর রুমে আসে। আমি ভয়ে কাঁপছিলাম তখন আতাউর বলল ভয় করনা তোমার বিয়ে হবে।আমার সাথে। এই কথা বলে মোটা বইয়ের মধ্যে আমার সই নিল ও আতাউরও সই করলো। ছেলেগুলো বললো কোন চিন্তা কর না আমরা আছি। এই বলে সেদিন বিয়ে রেজিস্ট্রি এবং পড়ান সম্পন্ন করা হয়।
পরের দিন সকাল ১০ টায় উলিপুর গবার মোড়ে রেখে যায়। এরপর আতাউর রহমান আমাকে বিবাহের নকল দিয়ে বলে যে আজ থেকেআর যেন জোর করা না লাগে সব ডকুমেন্টস পেয়ে গেছো। বিবাহের পর সে বলে আমার চাকরি হচ্ছে তুমি আমাকে তোমার জমানো টাকা দাও কারন আমার মানে তোমার। তুমি তোমার মাকে বলো। এই কথা শুনে সরল বিশ্বাসে আমার মাকে হাত পা ধরে রাজি করিয়ে গত ২৫-৯-২০১৪ ইং তারিখে ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছি। কথা চলাকালিন অবস্থায় একদিন হঠাৎ করে ২০১৬ সালের প্রথম দিকে কাথা না বলার ভাব ভঙ্গীমা দেখে আমি কয়েকজন ব্যক্তিকে বিষয়টি জানিয়েও কোন সমাধান করতে পারিনি। এমনকি আতাউর রহমানের ভগ্নিপতি,বাড় ভাই, সহ সকলকে জানিয়েছি কিন্ত কোন সমাধান করতে পারিনি।
এই সব বিষয় নিয়ে আমার এলাকায় ব্যাপক জানাজানি হয়েছে। আমার পিতা মাতা আর বাড়ীতে থাকতে দেয় না। কোন রকম বিড়ালের মত এক চিমটা ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। গ্রামের লোক জনেরও মুখেও কটু কথা শুনতে হয়। মুখ দেখাতে পারিনা। আমাকে গোপন করে সে আরেকটি বিয়ে করে ফেলেছে। আমার আর বিয়ে আসে না যে আমি নষ্ট মেয়ে। আতাউর আমাকে নষ্ট করেছে। সে সহ তার ভায়েরা আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আমি আর কিছু চাই না তাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে ঘর সংসার করতে চাই । তার আরেকটি বৌ আছে বললে জানায় তার ৫ টি বৌ থাক আমি তারই সংসার করব।
সুমি আক্তারের এমন অনষণের খবর শুনে ফায়ার সার্ভিস রাজশাহী উপ পরিচালক নুরুল ইসলাম শনিবার সন্ধ্যায় গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এসে দুই জনের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আতাউর রহমান দাবি করেন। কালেজে পড়া অবস্থায় আমার দুই চার দিনের পরিচয় তার সাথে তেমন সম্পর্ক ছিলো না। বিয়ে করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলে আমি বিয়ে করিনি সে মিথ্যা কাবিন নামা দিয়ে এমন দাবি করছে। এর আগেও এমন দাবি করেছিলো এটি আদালতে মিমাংসা হয়েছে বলে জানান। তবে সুমি আক্তার বলেন কোন মিমাংসা হয়নি।
আতাউর রহমান সুমি আক্তার কে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে নারাজ এবং বিয়েও করব বলে দাবি করেন এদিকে সুমি আক্তার বলেন স্ত্রীর স্বীকৃতি ছাড়া আমি একপাও পিছু হটবা না।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সমঝোতা করার তবে শেষ পর্যন্ত কি হয় তা বলতে পারব না। সুমি আক্তার কে শনিবার রাতে ফায়ার সার্ভিস এর এক সদস্যর বাড়ীতে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কে অবগত করে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd