সিলেট ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ২:১২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটে মাঝরাতে কোদাল আর ইট পাথর নিয়ে ভাঙা রাস্তা মেরামত করলেন ফারমিস আক্তার নামের এক নারী। পথচারীদের ভোগান্তি কমাতে তিনি নিজেই এই রাস্তা মেরামত করার উদ্যোগ নেন।
ওই নারী বলেন, ‘রবিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে আমি বাসা থেকে নগরের বারুতখানা এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি বয়স্ক এক রিকশা চালক ভাঙা রাস্তা দিয়ে কালভার্টের ওপর উঠতে গিয়ে রিকশা উল্টে পড়ে যান। রিকশায় থাকা মা-মেয়েও রাস্তা পড়ে গিয়ে আঘাত পান। ঘটনাটি আমার মনকে নাড়া দেয়। বাসায় গিয়ে ঘটনাটি বলে স্বামীকে জানাই রাস্তাটি মেরামত করতে চাই। উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি নিজেই আমার সঙ্গে যুক্ত হতে চান। পরে মেয়ে দুটিকে ঘুমে রেখে ভ্যানে করে ইট পাথর নিয়ে আমরা রাস্তাটি মেরামত করতে বের হই।’
স্বামীকে নিয়ে কোদাল হাতে নিজেই রাস্তার গর্তগুলো মেরামত করেন তিনি। এ সময় তাকে সহযোগীতা করেন দুজন ভ্যান চালক।
ভাঙা রাস্তাটি মেরামতের পাশাপাশি নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নাইওরপুলে দুটি এবং বারুতখানা এলাকার আরও একটি কালভার্টেরও দুটি পাশ যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলেন ফারমিস আক্তার।
তিনি বলেন, ‘আমি একজন গৃহিনী। পাশাপাশি ব্যবসা করি। আমার পরিবার সব সময় ভালো কাজের জন্য আমাকে সহযোগিতা করে। করোনার দুর্দিনেও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে অবহেলিত মানুষকে খাবার দিয়েছি। আমার দুই মেয়ে ফাবিহা মানহা (৮) এবং রাইসাতুন আক্তারও (৬) আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। মাঝে মধ্যে তাদের নিয়েও বের হই। মেরামত করা গর্তের খোঁজ-খবর পরেও রাখব। প্রয়োজনে আবার মেরামত করবো।’
ফারমিস আক্তার আরও জানান, এসব ভাঙা রাস্তা মেরামতের দায়িত্ব যাদের তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই সঙ্গে নিজেদের কাজের প্রতিও অবহেলা করেছেন। আমি একজন নারী হয়ে যদি কাজটি করতে পারি তাহলে যাদের দায়িত্ব তারা কি করেন?
ফারমিস আক্তারের স্বামী মোহাম্মদ রাশেজ-উল-হক জানান, ভালো কাজের জন্য স্ত্রীকে সব সময় সহযোগীতা দেই। তার এমন সাহস আর চিন্তাভাবনা দেখে আমার গর্ব হয়। আমি চাই সে সারা জীবনই মানুষের সেবা করুক।
সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, একজন নারী হয়ে তিনি নিজ হাতে রাস্তা ও কালভার্টের দুটি পাশ চলাচলের জন্য মেরামত করেছেন। এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd