মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না: হাই কোর্ট

প্রকাশিত: ৪:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০১৯

মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না: হাই কোর্ট

Manual8 Ad Code

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাই কোর্ট। সরকারের সংশ্লিষ্টদের সাত দিনের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।

২৮ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবিরকে যাবতীয় নথিপত্রসহ আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মিন্নির রিমান্ড শেষে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার আগের দিনই বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে রিফাতের স্ত্রীর ‘দোষ স্বীকারের’ তথ্য দেন। এ বিষয়ে আদালত লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে পুলিশ সুপারের কাছে। ২৮ আগস্ট তা হাই কোর্টে দাখিল করতে হবে।

মিন্নির পক্ষে এদিন হাই কোর্টে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও এম আমিনউদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী।

এম আমিনউদ্দিন শুনানিতে আদালতকে বলেন, আমরা আর কিছু চাইছি না, মেয়েটার জন্য শুধুমাত্র জামিন চাচ্ছি। সে পালাতে পারবে না। সে তার বাবার হাওলায় থাকবে। তাছাড়া এ মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ জনের মধ্যে চারজন জবানবন্দি দিয়ে দিয়েছে। সুতরাং তদন্ত প্রভাবিত করারও সুযোগ নাই। এ কারণে তার জামিন চাইছি।

এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী শুনানিতে বলেন, গ্রেপ্তার ১৫ জনের মধ্যে চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চারজনের জবানবন্দিতেই এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে। সে এই হত্যাকাণ্ডের মূল নকশাকারী এবং ষড়যন্ত্রকারী। এটা খুবই আলোচিত মামলা। পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে মামলার তদারক করা হচ্ছে। এ মামলায় তাকে জামিন দেওয়া যায় না।

Manual5 Ad Code

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়।

Manual6 Ad Code

পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে।

Manual2 Ad Code

পরে মিন্নির শ্বশুর তার ছেলেকে হত্যায় পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়। ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পরেরদিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়।

তার আগের দিনই পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিন্নি হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

বরগুনা সরকারি কলেজের স্নাতকের এই ছাত্রী পরে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে।

মিন্নির বাবা অভিযোগ করে আসছেন, নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ।

এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত আছে বলেও তার দাবি।

বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত এবং জেলা ও দয়েরা জজ আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

Manual3 Ad Code

৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চে আংশিক শুনানির পর জামিন পাওয়ার আশা না দেখে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না আবেদন ফিরিয়ে নেন এবং রোববার নতুন বেঞ্চে আবেদন করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2019
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code