সিলেট ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:০৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০১৯
রামিম হাসান,ঝিনাইদহ :: কালের বিবর্তন আর অধুনিকতার ছোয়ায় ঝিনাইদহের গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একসময়ের খাদ্যদ্রবাদি মাড়াইয়ের অন্যতম মাধ্যম ঢেঁকি। বর্তমান মানুষের প্রযুক্তি নির্ভরতা এবং কর্মব্যবস্ততা বেড়ে যাওয়ায় ঢেঁকির ব্যবহার নেই বললেও চলে তবে এখনো দেশের কিছু কিছু গ্রামঞ্চলে ঢেঁকির দেখা মেলে এসব ঢেঁকিগুলোর আবার ব্যবহার কমে এসেছে।আগে বারো মাস ব্যবহার করা হলেও এখন ঢেঁকি শুধু বিশেষ বিশেষ সময়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ কওে শীতের সময় পৌষ পার্বনে ঢেঁকির ব্যবহার অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। এক সময় ভোরে আযানের সাথে সাথে স্তদ্ধতা ভেঙে চারদিকে ছড়িতে পড়তো ঢেঁকির শব্দ।
পরিবারের নারীরা সে সময় দৈনন্দি ধান, গম,ও যব ভাঙার কাজ ঢেঁকিতে করতেন। পাশাপাশি চিড়া তৈরির মত কঠিণ কঠিন কাজও ঢেঁকিতে করা হতো।বিশেষ করে ,শবে বরাত,ঈদ,পূজা,নবান্ন উৎসব,পৌষ পার্বণ সহ বিশেষ বিশেষ দিনে পিঠা পুলি খাওয়ার জন্য অধিকাংশ বাড়িতে ঢেঁকিতে চালের আটা তৈরি করা হতো।সে সময় গ্রামের বধুদের ধান ভাঙার গান আর ঢেঁকির ছন্দময় শব্ধে চারিদিকে হৈচৈ পড়ে যেত। তাছাড়া ওই সময় এলাকার বড় কৃষকেরা আশপাশের দরিদ্র নারীদের টাকা বা ধান দিয়ে ঢেঁকিতে চাল ও আটা ভাঙিয়ে নিতেন। অনেক দরিদ্র পরিবার আবার ঢেঁকিতে চাল ভাঙিয়ে হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। ঢেঁকিতে ভাঙা পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু চালের বেশ কদও ছিল। ধান গম ভাঙা যন্ত্র আবিষ্কারের একসময়ের নিত্যপ্রযোজনীয় ঢেঁকি আজ বিলুপ্ত প্রায়। সভ্যতার প্রয়োজনে ঢেঁকির আবির্ভাব ঘটেছিল।আবার গতিময় সভ্যতার যাত্রাপথে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাতগাছি গ্রামের গৃহবধু সালমা খাতুন বলেন, বিয়ের পর থেকেই ঢেঁকি দিয়ে বিভিন্ন খাদ্যদ্রবাদি মাড়াই করছি। আগে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ঢেঁকিতে চালের আটা তৈরি করতে আসতো। কিন্তু এখন আর তেমন কেও আসেন না। এখন সবাই মেশিনে চাল মাড়াই করে। তিনি আরো বলেন আগে মাত্র ৬-৭ টাকা কেজি চাল থেকে আটা তৈরি করেছি। তাতে আমাদেও সংসার চালানোর জন্য বেশ ভালো উপার্জন হতো। এখন ১০ টাকা কেজি দরে চাল মাড়াই করি কিন্তু কাজ কম থাকায় আয়ও কমে গেছে। আগে বারো মাস ঢেঁকিতে বিভিন্ন কাজ হতো। এখন শুধু শীতকালে চালের আটা তৈরির কাজ হয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd