তাহিরপুর হাসপাতালে নষ্ট হচ্ছে এক্সরে মেশিন,নৌ এম্বোল্যান্স দেখার কেই নেই

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৯

তাহিরপুর হাসপাতালে নষ্ট হচ্ছে এক্সরে মেশিন,নৌ এম্বোল্যান্স দেখার কেই নেই

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা আসহায় জনসাধারন। আর হাসপাতালে আবাসিক ভবন গুলোতে বসবাসকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভবনের নানান সমস্যায় থাকায় মেরামতের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নেওয়ার কারনে চরম দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন। ফলে তাদের মাঝে ক্ষোব বিরাজ করছে। শুধু আবাসিক ভবন গুলোতেই সমস্যা নয় হাসপাতালের মূল ভবনেও রয়েছে নানান সমস্যা। সম্প্রতি হাসপাতালের কিছু অংশে মেরামত হলেও গুরুত্বপূর্ন অংশ গুলোতে কোন মেরামত হয় নি। ফলে ভবন গুলো এক একটা মরন ফাঁদে পরিনত হচ্ছে।

জানাযায়,উপজেলা ৪লক্ষাধিক জনসাধারন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম অসহায় হয়ে পরেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্দীঘ দিন ধরেই বিশেষ রোগের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা,কর্মচারীর পদ শূন্যতা বিরাজ করছে। আর জনবল সংকটের কারনে হাসপাতালটি যেন নিজেই রোগী হয়ে লাইফ সার্পোটে আছে। ফলে প্রাপ্য চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাওর বেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২৫২টি গ্রামের ৪লক্ষাধিক গরীব অসহায় জনগন। র্কমকর্তা,ডাক্তারগন যোগদানের পর থেকেই অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার জন্য তদবির শুরু করেই বদলী হয়ে যায়। যার জন্য শূন্যতা পিছু ছাড়ে না হাসপাতালটির। হাসপাতালের ৩টি জেনারেটার ১০বছর যাবৎ নষ্ট হয়ে পরে আছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীরা গরমে ছটফট করে। ৫বছরের বেশী সময় ধরে ডেন্টাল,ল্যাব টেকনোলজিষ্ট,রেডিওগ্রাফার পদ গুলো শূন্য রয়েছে ফলে কোন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য যেতে হচ্ছে বাহিরে। গত ৩বছরের বেশী সময় ধরে এক্সরে মেশিন ঘরে ভিতরে থেকে ও হাসপাতালের জন্য একটি নৌ এ্যাম্বোল্যান্স থাকলেও চালক না থাকায় কোন কাজে আসছে না। নৌ এম্বোল্যান্স নষ্ট হচ্ছে হাসপাতালের পুকুইে যেন দেখার কেই নেই।

অন্য দিকে ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীর প্রতিটি পদ শূন্য থাকার কারনে পরিস্কার,পরিচ্ছন্ন ও প্রশাসনিক কাজে র্দীঘ দিন ধরেই ব্যাগাত সৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও অফিস কতৃপক্ষ যাকে যে ভাবে কাজে লাগালো যায় সেভাবেই হাসপাতালের কাজের স্বার্থে কাজ লাগাচ্ছেন।

ওয়ার্ডে ও জরুরী বিভাগে নাইট র্গাড রামচরন ও মালি শফর আলী জরুরী বিভাগে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ড মহি উদ্দিন বিপ্লব,বেলায়েত হোসেন রুমি,ফয়েজ আহমেদ নূরীসহ যারা দায়িত্বে থাকেন সার্বক্ষনেই তাদেরকে সহযোগীতা এবং হাপাতালে আসা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে দেখা যায়।

এদিকে ৪র্থশ্রেনী ও নার্স কোয়াটার গুলোর দরজা,জানালা দেয়াল,পানি পাই ও ট্যাকিè নষ্ট হয়ে পরেছে র্দীঘ দিন ধরেই কিন্তু এই দিকে কারো নজর নেই। বসবাসকারীরা বার বার বলার পরও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। ফলে তারা কতৃপক্ষের বাহিরে কিছু বলতেও পারছে না। এছাড়াও হাসপাতালের মূল ভবনের(পিছনের অংশ)কিছু অংশ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে র্দীঘ দিন ধরেই মেরামত হয় নি। ঐসব অফিস কক্ষ গুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে রয়েছে এখন।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শূন্য রয়েছে-আরএমও-১জন পদ এক জনেই শুণ্য,মেডিকেল অফিসার ২জন,নাসিং সুপার ভাইজার ১জন,,ল্যাব টেকনেশিয়ান-১জন,ডেন্টাল-১জন,ডেন্ডাল সার্জন-১জন,রেডিও গ্রাফার-১,ফার্মাসিষ্ট-২জন,প্রধান সহকারী পদ শুন্য,অফিস সহকারী ১জন,ষ্ঠোর কিপার-১জন,নাইট গার্ড ১জন,ওর্য়াড বয় ২জন,আয়া ২জন,ঝাঁড়–দার-৪,এমএলএসএস ৪জন,কুক মসালর্চি-১জন,ইলেকটিশিয়ান ১জন শুন্য রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে শুন্য পদ গুলো পূরন করে চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি করার দাবী জানান হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন জানান,হাসপাতালে ভাল কোন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাই। মহিলাদের জন্য কোন গাইন ডাক্তার হাসপাতার নির্মানের পর থেকে পাই নি। ফলে মহিলরা চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন। এছাড়ার দাঁেতর ডাক্তার,এক্সরেসহ বিভিন্ন পদে শূন্যতার কারনে বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় আমাদের।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আগত রোগীদের আমরা সবোর্চ্ছ সেবা দিয়ে থাকি। শুন্য পদ গুলো পূরনের জন্য কার্যকর প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। জনবল নিয়োগ হলে কোন সমস্যাই থাকবে না। শূন্য পদ গুলোর বিষয়ে উর্ধবতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তিনি আরো জানান,৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োগ সরকারী ভাবে না দিয়ে আউট সোসিং(কন্ট্রাকটারের মাধ্যমে)মাধ্যমে নেওয়া হবে। এছাড়া অন্যান্য পদে নিয়োগে কার্যক্রম প্রক্রিয়াদিন রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে জঠিল কোন রোগী আসলে জরুরী প্রয়োজনে জেলা সদরে পাঠানোর জন্য একটি এম্বোল্যান্সের প্রয়োজন ।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-তাহিরপুর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার উন্নতির জন্য বিভিন্ন রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসকসহ প্রতিটি পদে নিয়োগ দিয়ে জনসাধারনের সুচিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2019
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
232425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..