বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত হওয়া প্রার্থীতা ফেরাতে ঢাকায় ছুটে গেছেন সিলেট-২ আসনে ২০দলীয় জোট মনোনিত ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনা। একই আসনের জাতীয় পার্টি মনোনিত ও মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর করা এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে গত বৃহষ্পতিবার লুনার প্রার্থী স্থগিতের আদেশ দেন আদালত। এর ফলে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে তার নির্বাচনী প্রচারণায়। খবর পেয়েই অই রাতেই গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে ঢাকায় ছুটে যান তিনি। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। সোমবার স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে নিশ্চিত করেছে দলীয় একটি সূত্র। তবে, লুনা ঢাকায় অবস্থান করলেও থেমে নেই বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা। বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর সহোদর আছকির আলীসহ উভয় উপজেলার শীর্ষ নেতারা।
জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে মহাজোট থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ফের প্রার্থী হয়েছেন জাতীয়পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী। একই আসনে ২০দলীয় জোট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি তাহসিনা রুশদীর লুনা। প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই দু’জনই জোর প্রচারণায় নামেন মাঠে। কিন্তু গত ১৩ ডিসেম্বর বৃহষ্পতিবার উচ্চ আদালতের এক আদেশে মধ্যপথে থেমে যেতে হয় লুনাকে। ওইদিন ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর এক রিটের প্রেক্ষিতে তার প্রার্থীতা স্থগিত করেন আদালত।
রিটে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী উল্লেখ করেন, আরপিও অনুযায়ী সরকারি চাকুরী থেকে অবসর নেয়ার তিন বছর পর সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার বিধান থাকলেও তাহসিনা রুশদীর লুনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৬ মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার পদ থেকে অব্যাহতি নেন। তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ লঙ্ঘন করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এর শুনানি শেষে বৃহষ্পতিবার সকালে বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন উচ্চ আদালতের একটি দ্বৈত বেঞ্চ লুনার প্রার্থীতা স্থগিতের আদেশ দেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর নাম উল্লেখ না করেই বলেন, ইতিপূর্বে অভিযোগকারী ঐ প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন তা খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু আজ গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পারলাম, ভোটের মাঠে স্থান করতে না পেরে তিনি ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে সম্পূর্ণ হয়রানির উদ্দেশ্য আদালতে অভিযোগ করেছেন। আমি আদালতে আইনি প্রক্রিয়ায় এই অভিযোগ মোকাবিলা করব এবং ইনশাআল্লাহ আমি ন্যায়বিচার পেয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। এতে ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত ও হতাশ না হওয়ার জন্যেও তিনি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে তাহসিনা রুশদীর লুনা ও তার ব্যক্তিগত সহকারী ময়নুল হকের মুঠোফোনে কল দিলেও তারা দু’জনেই তা রিসিভ করেননি।
তবে, জেলা বিএনপির সদস্য ও খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিন লুনার ঢাকায় অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তিনি।