সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:২৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : চিড়িয়াখানার আদলে নির্মিত হয়েছে ‘সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র’। এখানে রয়েছে ৯ প্রজাতির ৫৮টি প্রাণী। আগামী ডিসেম্বরে মধ্যেই আনা হবে আরো বেশ কয়েক প্রজাতির প্রাণী। তন্মধ্যে থাকবে বাঘও।
গত ২৭ অক্টোবর গাজীপুরের সাফারি পার্ক থেকে সিলেট চিড়িয়াখানায় স্থানান্তর করা হয় দুটি জেব্রা, দুটি হরিণ, ১২টি ময়ূর, ১টি গোল্ডেন ফিজেন্ট পাখি, ৩টি সিলভার ফিজেন্ট পাখি, ৩টি ম্যাকাও পাখি, ৪টি আফ্রিকান গ্রে প্যারট, ৪টি সান কানিউর পাখি, ৩০টি লাভ বার্ড ও ১টি অজগর।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে বাঘ, চিত্রল হরিণসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রাণী আনা হবে বলে।
সিলেট বনবিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে নগরীর টিলাগড় এলাকায় শুরু হয় ইকোপার্ক নির্মাণের কাজ। পাহাড় ও টিলাবেষ্টিত প্রায় ১১২ একর জায়গাজুড়ে এই পার্ক নির্মাণে প্রথম ধাপে ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় বনবিভাগের উদ্যোগে সৃজন করা হয় নানাজাতের গাছ। ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় ইকোপার্কটিতে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চিড়িয়াখানায় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
২০১২ সালে টিলাগড় ইকোপার্ক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও চিড়িয়াখানা নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটির কাজ তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তুনির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হন সংশ্লিষ্টরা। ফলে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় চার কোটি টাকা ফেরত যায় অর্থমন্ত্রণালয়ে। ২০১৬ সালের জুনে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটি হস্তান্তর করা হয় সিলেট বিভাগীয় বন অফিসকে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটির কাজ শুরুর দিকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে কেনা হয়েছিল বাঘসহ বেশ কিছু প্রাণী। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে প্রায় ৬ বছর ধরে সেগুলো রাখা হয়েছিল গাজীপুর সাফারি পার্কে। বন্যপ্রাণীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালসহ ও অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর গত ২৭ অক্টোবর এখানে স্থানান্তর করা হয়।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প শুরুর ৬ বছর পর গত শুক্রবার থেকে এটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। এখানে বন্যপ্রানী সংরক্ষণের বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রাণী বিষয়ক সংগঠনের নেতারা।
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘ভূমি সন্তান’র সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর বলেন, ‘টিলাগড় ইকোপার্ক মূলত বন্যপ্রানী সংরক্ষণ কেন্দ্র। তাই বন্যপ্রাণীদের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতিদিন কি পরিমাণ দর্শনার্থী এখানে আসবেন তা বনবিভাগকে নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া বনের ভেতরে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে এটি একটি বিনোদনকেন্দ্রেই পরিণত হবে, প্রাণী সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্যটি ব্যহত হবে।’
এখানে চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়নি। চলতি বছরের মধ্যে সেটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম। হাসপাতালটি চালু হলে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া অসুস্থ প্রাণীদের চিকিৎসা দিয়ে এই সংরক্ষণ কেন্দ্রের বনে অবমুক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd