সিলেট ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট সিটি কর্পোরেশেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আটকসহ নানা অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোদ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এসব অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে সিলেটের ভোটের মাঠ।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে গত ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর প্রচার-প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়েন সাত মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে পুরো নগরজুড়ে পোস্টার টানাচ্ছেন প্রার্থীরা। এর মধ্যেই প্রার্থীরা তুলছেন নানা অভিযোগ।
জানা গেছে, গত বুধবার মধ্যরাতে সিলেট নগরের বন্দরবাজারে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার লাগাতে আসে তিনজন শ্রমিক। এ সময় নৌকা প্রতীকের পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ তুলে লোকমান নামের এক শ্রমিককে মারধর করে পুলিশে দেয় কয়েকজন যুবক।
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ছুটে যান বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক। ওই শ্রমিককে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন তিনি। পুলিশ না ছাড়ায় ফাঁড়ির সামনে নেতাকর্মীদের নিয়ে অনশনে বসেন আরিফ। তিনি বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পরে কামরান পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ওই শ্রমিককে ছাড়িয়ে দেন।
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, আমার পোস্টার ছিঁড়ে বিএনপির প্রার্থী আরিফের পোস্টার লাগানোর সময় জনতা এক শ্রমিককে আটক করে পুলিশে দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিককে ছেড়ে দিতে বলি। এর কিছুক্ষণ পরে আরিফ সাহেব আমাকে ফোন করে বলেন, আমার এক শ্রমিক না বুঝে এ কাজ করে ফেলেছে। আপনি একটু পুলিশকে বলে দেন, যাতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তখন আমি কোতোয়ালী থানার ওসিকে ফোন করে ওই শ্রমিককে ছেড়ে দিতে বলি।
সিলেট নগরের চৌহাট্টা এবং আম্বরখানা এলাকায়ও নৌকা প্রতীকে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ তুলেছেন কামরান।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীও তার ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ তুলেছেন। তবে তিনি সরাসরি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ না তুলে ‘বিচারের ভার আল্লাহর ওপর’ ছেড়ে দিচ্ছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরের বন্দরবাজারে সমস্ত এলাকায় আমার পোস্টার কেটে ফেলা হয়েছে। কারা এ কাজ করেছে, আমি দেখিনি। তাই বিচারের ভার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। আমার ছবি, পোস্টার ছিঁড়ে ক্ষতি করা যাবে না।
কামরানের অভিযোগ অস্বীকার করে আরিফ বলেন, আমার পোস্টার লাগানোর দায়িত্বে থাকা শ্রমিকের তো এতো সাহস নেই যে সে অন্য কারও পোস্টার ছিঁড়বে। যে পোস্টার লাগাচ্ছে সে রাজনৈতিক নেতা বা কর্মী হলে কথা ছিল। তাদের (কামরান) ক্ষমতা আছে, তারা সেই ক্ষমতা কাজে লাগাচ্ছেন।
মহানগর জামায়াতের আমির ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়েরও তার পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, কিছু কিছু জায়গায় আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। কারা ছিঁড়েছে তা জানি না। আমরা আইন মেনে চলছি।
এদিকে সিলেট মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম অভিযোগ তুলেছেন, তার কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।
সেলিম বলেন, ৩৯ বছর যে দল (বিএনপি) করেছি, সেই দল থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই দলের মেয়র প্রার্থী আমার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছেন, যাতে তারা আমার সঙ্গে কাজ না করে।
তবে সেলিমের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আরিফ বলেন, তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সঙ্গে দলের কারও কোনো সম্পর্ক নেই।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd