ছাতকে সার্ভেয়ারের ঘুস নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ৬:৫৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২

ছাতকে সার্ভেয়ারের ঘুস নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক: ঘুস ছাড়া কোনো কাজ হয় না সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে। এ ভূমি অফিসে প্রধান কর্মকর্তা কমচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুস লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। প্রধান কর্তা এসিল্যান্ড, সার্ভেয়ার এডি এম রুহুল আমিন ও অফিস সহকারী সত্য বাবুর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সার্ভেয়ার এ.ডি এম রুহুল আমিনের মাধ্যমে ভূমি অফিসে বসে একজন মহিলার ঘুস লেনদেনের দুদফা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ধামাচাপা দিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। কেউ প্রতিবাদ করলে তারা জাল দলিল, ভুয়া সিল, পর্চা ও কাগজপত্র তৈরি করে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

জানা গেছে, ২৭ জুলাই সুনামগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ৯০৩ স্মারক মূলে প্রাপ্ত পত্রে পৃষ্ঠাদেশে ২৭ আগস্ট আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি সার্ভেয়ার এ.ডি এম রুহুল আমিন উপজেলার ব্রাহ্মণজুলিয়া মৌজায় সরেজমিন ঘটনাস্থল যান। সেখানে গিয়ে দেখেন বাদীর বাড়িঘর, জায়গা জমি দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ ভোগদখলেই রয়েছে। এরপরও টাকা না দিলে প্রতিবেদন তার বিপক্ষে দেবেন বলে ভয় দেখিয়ে তাকে জিম্মি করে টাকা আদায় করেন সার্ভেয়ার। এসি ল্যান্ড অফিসে ১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টা ১৪ মিনিটে সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিনের সঙ্গে ওই মহিলা তার নিজ হাতে ১০ হাজার টাকা লেনদেন করেন। ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে আবারও একই মহিলা ঘুসের ১০ হাজার টাকা লেনদেন করেন। তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর সার্ভেয়ার রুহুল আমিন ওই মহিলাকে স্বাক্ষর সিল ছাড়াই একটি কাগজ তার হাতে তুলে দেয়। বাদী তার পক্ষে রিপোর্টের নমুনার কাগজ নিয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে যান। সুনামগঞ্জ থেকে পরদিন আবারও ভূমি অফিসে একই মহিলা এসে বাকি ৫ হাজার টাকা ঘুস পরিশোধ করার পর তার পক্ষে রিপোর্টের কাগজে স্বাক্ষর সিল মেরে দেন সার্ভেয়ার রুহল আমিন। এ সময় ঘুসের টাকার লেনদেন নিয়ে অফিস কক্ষের ভিডিও তোলা নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাটি কাউকে না জানিয়ে গোপনে ধামাচাপা দেন অফিস সহকারী সত্যবাবু।

Manual8 Ad Code

জানা গেছে, উপজেলা ছৈলাআফজলাবাদ ইউপির ব্রাহ্মণজুলিয়া মৌজার এসএ খতিয়ান ৫৬৬ ও নামজারি খতিয়ান ৮৩০ শ্রেণি আমন ও বাড়ি রকম নালিশা ভূমি ভোগদখল করে আছেন জহুরা বেগম ও তার স্বামী আজিজুর রহমানের প্রায় ৩৬ শতক জায়গা জমি তার দখলে থাকার সত্যতা রিপোর্ট দিতে দুদফা তাকে জিম্মি করে অফিস সহকারী সত্যবাবু, সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন মাধ্যমে তিন দফা অফিস কক্ষে বসে প্রকাশ্যে ঘুস লেনদেনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘুসের ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার এডি এম রুহুল আমিন বলেন, কে বা কারা ঘুস দেওয়ার সময় ভিডিও করেছে তা জানা নেই। ভিডিওটি দেখালে তিনি নিশ্চিত করেন-ভিডিওর ব্যক্তিটি তিনি নিজেই। তিনি ঘুসের টাকা লেনদেনের ভিডিওর বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Manual2 Ad Code

এ অফিসে ঘুসের বিনিময়ে ভুয়া জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি করে একে অপরের জায়গা জমির সঠিক কাগজপত্র ছাড়াই নামজারি হচ্ছে। সেবা নিতে আসা শত শত মানুষের অভিযোগ, দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য ছাতকের প্রতিটি ভূমি অফিস, জাহিদপুর, পীরপুর, জগঝাপ ও ছাতক সদর (ভূমি) তহশিলদারদের বিরুদ্ধে রয়েছে ‘আগে টাকা পরে কাজ’। একটা নামজারিতে এ অফিস ১১৫০ টাকার বিপরীতে ১০-১৫ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন। অনলাইনের আবেদন ফি ৫০০ টাকা আদায় করেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর ঘুসের তথ্য মিলছে। এসব তথ্য প্রতিনিধিরা সংগ্রহ করছেন। ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, তহশিলদার, অফিস সহকারী, পিয়ন সবাই ঘুস বাণিজ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। নামজারি, মিস কেস, মিস আপিল, সার্ভে রিপোর্ট, চান্দিনা ভিটা, এমপি কেস, খাস জমি বন্দবস্তি, ভিপি খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সব কিছুতেই ঘুসের কারবার করেন তারা।

Manual7 Ad Code

অভিযোগ অস্বীকার করে এসি ল্যান্ড ইসলাম উদ্দিন বলেন, তার সার্ভেয়ারের ঘুস লেনদেনের ভিডিও তিনি দেখেছেন, যা তার অফিসের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুত্র- দৈনিক যুগান্তর।

ক্রাইম সিলেট/রায়হান

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2022
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..