‘ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই’ বুলবুলকে হত্যা‘ : উর্মি এখনও নির্দোষ

প্রকাশিত: ৫:২০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২২

‘ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই’ বুলবুলকে হত্যা‘ : উর্মি এখনও নির্দোষ

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ছিনতাই করতেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, হত্যার ঘটনায় বুলবুলের কথিত প্রেমিকার সম্পৃক্ততা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। খুনের পেছনে আরেক শিক্ষার্থী মার্জিয়া উর্মির কোনো যোগসাজশ নেই। তিনি নির্দোষ। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন।

Manual4 Ad Code

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে জালালাবাদ থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।

সংবাদ সম্মেলনে আজবাহার আলী শেখ বলেন, ঘটনার পররই তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাকশনে নামে পুলিশ। আটক করা হয় তিনজনকে। তাদেরকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে মো. আবুল হোসেন খুনের ঘটনায় জড়িত মর্মে গতকাল রাত ১২টার দিকে স্বীকারোক্তি দেন। ঘটনার সাথে জড়িত আরও দুজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন তিনি। তার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কামরুল আহমদ ও মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তারাও স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পরে কামরুলের বাড়ি থেকে বুলবুলের মোবাইল ফোন ও খুনে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তে আমরা জেনেছি, ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা ঘটেছে। শাবির গাজীকালু টিলা এলাকায় সোমবার অবস্থান করছিলেন আবুল হোসেনসহ চারজন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দুজন চলে যায়। সন্ধ্যার পর বাকি দুজনের সঙ্গে যোগ দেয় কামরুল। গাজীকালু এলাকায় সন্ধ্যার পর ঘুরতে যান শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ ও মার্জিয়া ঊর্মি। ওই এলাকা নির্জন। তাদেরকে সেখানে পেয়ে আবুল হাসান, কামরুল আহমদ ও মো. হাসান মোবাইল ও টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে বুলবুলের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। তখন তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।’

Manual8 Ad Code

ছিনতাইকারীরা বুলবুলের মানিব্যাগ ও ঊর্মির মোবাইল, ব্যাগ কেন নেয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘ঊর্মিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে বলেছে, ঘটনার সময় বুলবুলের কাছ থেকে একটু দূরে সরে গিয়েছিল। বুলবুলের মানিব্যাগও খোয়া যায়নি। গ্রেপ্তারকৃতরা বলেছে, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতের পর রক্ত দেখে তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।’

Manual5 Ad Code

ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে উর্মির চলে যাওয়া এবং কললিস্ট মুছে ফেলার বিষয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্কের কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘উর্মি হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাকে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, সে জানতে পারে নিহত বুলবুলের জানাজা ক্যাম্পাসে হবে। জানাজায় শরিক হতে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসে। তার চলে আসার পেছনে অপরাধমূলক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।’

‘আমরা উর্মির মোবাইল ও কললিস্ট চেক করে দেখেছি। এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কারও সাথে উর্মির মোবাইল যোগাযোগ ছিল না। তার মোবাইলে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়নি।’

Manual5 Ad Code

এদিকে, ঘটনার পর যে তিনজনকে আটক করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আবুল হোসেন স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি দুজনকে এখনও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তাদেরকে অভিভাবকদের জিম্মায় প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে বলেও জানায় তারা।

এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃতরা মাদকাসক্ত কিনা, তা ডোপ টেস্ট করলে জানা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আজবাহার আলী শেখ। তবে তাদের বিরুদ্ধে আগের কোনো মামলা নেই। ফলে তাদেরকে ‘পেশাদার ছিনতাইকারী’ বলতে নারাজ এই পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের গাজীকালুর টিলায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন বুলবুল। তিনি লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন জালালাবাদ থানায় মামলা করেন।

বুলবুল হত্যায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, কামরুল ইসলাম (২২), আবুল হোসেন (১৮) ও মোহাম্মদ হাসান (১৮)। তাদের সবার বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী এলাকা টিলারগাওয়ে। তাদের মধ্যে কামরুল ইসলামের বাড়ি থেকে বুধবার সকালে বুলবুল হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও বুলবুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিহত শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তাকে নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের সামাজিক গোরস্তানে বাবার পাশে তাকে শায়িত করা হয়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..