এবারের ঈদে সিলেটে পর্যটকশূন্য

প্রকাশিত: ৭:০২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২২

এবারের ঈদে সিলেটে পর্যটকশূন্য

Manual4 Ad Code

ওয়েছ খছরু: ভয়াবহ বন্যার ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেটের মানুষ। কুশিয়ারা অববাহিকায় এখনো পানি। আশ্রয়কেন্দ্রেও মানুষের বসবাস রয়েছে। রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে একাকার। পানি নামায় ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠছে। এই অবস্থায় এবারের ঈদে সিলেট ছিল পর্যটকশূন্য কেউ বেড়াতে আসেননি। আবার স্থানীয়ভাবে অনেকেই ঘর থেকে বের হননি। ফলে সিলেটের পর্যটন এলাকাগুলোতে লোকসমাগম ছিল কম। কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর।পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।

ঈদ এলেই সাদাপাথরে ঢল নামে পর্যটকদের। হাজার হাজার পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়িয়ে দেয় ওই এলাকার ব্যস্ততা। সোমবার সাদাপাথরে গিয়ে দেখা গেল ভিন্ন পরিবেশ। পর্যটক নেই। যারা আছেন; তারা সিলেট শহর থেকে বেড়াতে গেছেন।

নিজাম উদ্দিন নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানালেন-এবার ঈদের পর দিন যে পর্যটক এসেছেন তা সাধারণত প্রতিদিনই আসেন। আমাদের প্রস্তুতি ছিল বেশি। সেই অনুপাতে পর্যটক আসেননি। ব্যবসারীরাও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু পর্যটক না আসায় ভেস্তে গেছে সব প্রস্তুতি। কোলাহল কম থাকায় বিকিকিনি কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ভোলাগঞ্জ গ্রামের চুনাপাথর ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান নোমান জানিয়েছেন, গত ঈদে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতি ছিল সাদাপাথরে।এবার কয়েক হাজারও হবে না।

Manual4 Ad Code

তিনি বলেন- এবারের বন্যার শুরুতে সাদাপাথর এলাকা দিয়ে উজানের ঢল নেমেছিল। এতে করে ওই এলাকায় থাকা অনেক ব্যবসায়ীর জিনিসপত্র পানিতে ভেসে গেছে।স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প সহ কয়েকটি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্ধশতাধিক নৌকাও পানিতে ভেসে যায়।ফলে বন্যায় সাদাপাথরের ব্যবসায়ী সহ প্রশাসনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ধারণায় ছিল; এবার পর্যটকরা আসবেন। কিন্তু ঈদে পর্যটক উপস্থিতি কম। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

এদিকে- ঢলের তোড়ে সাদাপাথরে নদী গতিপথের পরিবর্তন এসেছে। পাথরে ঢেকে গেছে গোটা এলাকা। এছাড়া- নদীর পাদদেশেও জমেছে পাথরের স্তূপ। এ কারণে ধলাই নদী দিয়ে হেঁটে হেঁটে পর্যটকরা পাড়ি দিতে পারছেন।

শুষ্ক মৌসুমে সাদাপাথর এলাকা পানিশূন্য হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম।তিনি জানান- ‘এবারের ঢলে উজান থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর এসেছে। এসব পাথর জমে আছে নদীর উৎসমুখে। ফলে পানি যাতায়াতের পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।’

Manual5 Ad Code

তিনি জানান- ‘ব্যাংকারের সাদাপাথর অংশে এখন পাথরের বাঁধের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দ্রুত পানি নামতে পারছে না। এজন্য তিনি প্রশাসনের তরফ থেকে পাথর সরানোর দাবি জানান।’

এদিকে- শুধু সাদাপাথরই নয়, এবার সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, লালাখাল এলাকায়ও পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল কম।স্থানীয় লোকজনও এসব স্থানে বেড়াতে যাননি। জাফলংয়ে গত ঈদে ঘটেছিল অপ্রীতিকর ঘটনা। এতে করে জাফলং এবারের ঈদে বাইরের পর্যটকদের সংখ্যা কম ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

Manual8 Ad Code

তারা জানিয়েছেন, একে তো বন্যার প্রভাব, তার উপর গত বারের ঘটনার কারণে অনেক পর্যটকরাই আসেননি। তবে- এবারের ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তা সহ সার্বিক বিষয় নিশ্চিত করতে প্রশাসন আগে থেকেই সতর্ক ছিল।

Manual6 Ad Code

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন আহমদ জানিয়েছেন- এবার বন্যার কারণে পর্যটকরা সিলেটেই আসেননি। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা মানুষ ঘুরতে সিলেটে আসেননি।এবার তারা না আসায় সিলেট ছিল পর্যটক শূন্য। এছাড়া, প্রচণ্ড গরমের কারণে স্থানীয় লোকজনও ঘর থেকে বের হননি বলে জানান তিনি। রাতারগুল এলাকায় বেড়ানোর সময় এখনই। স্থির হয়ে আছে স্বচ্ছ পানি। নৌকা দিয়ে সোয়াম ফরেস্ট ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় হলেও পর্যটক না আসার কারণে এবার রাতারগুলও ছিল নীরব, নিস্তব্ধ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..